Inqilab Logo

মঙ্গলবার ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ২০ কার্তিক ১৪৩১, ০২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বিপৎসীমার ওপরে তিস্তার পানি, আতঙ্কে কৃষক

অনলাইন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ২:২৩ পিএম

উজানের ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে তিস্তার পানি ওঠানামা করছে। বৃহস্পতিবার (১ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৬টায় ডালিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছিল। শুক্রবার (২ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টায় কমে বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আবারও পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় তিস্তাপাড়ের কৃষকদের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
নীলফামারীর ডিমলা ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি ওঠানামার বিষয়টি নিশ্চিত করে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) গেজ পাঠক নুরুল ইসলাম বলেন, ‘গত বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টার পর থেকে পানি বাড়তে শুরু করে। এরপর সন্ধ্যা ৬টায় তা বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। ওইসব পয়েন্টে বিপৎসীমা ৫২ দশমিক ৬০ সেন্টিমিটার।’
এদিকে তিস্তার পানি বৃদ্ধির ফলে ডিমলা উপজেলার পূর্বছাতনাই, পশ্চিম ছাতনাই, টেপাখড়িবাড়ি, খগাখড়িবাড়ি, খালিশাচাপানী, ঝুনাগাছ চাপানী ও গয়াবাড়ি ইউনিয়নের ১৫টি গ্রামের নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করেছে। এতে তিস্তা তীরবর্তী এলাকার কৃষকদের আমন ধানের ক্ষেত তলিয়ে গেছে। আতঙ্ক বিরাজ করছে তিস্তাপাড়ের কৃষকদের মাঝে।
খগাখড়িবাড়ী ইউনিয়নের বন্দর খড়িবাড়ী গ্রামের কৃষক মাজেদুল ইসলাম (৫৫) বলেন, ‘উজানের পানি বাড়লে সেতুর ভাটিতে বন্যা হয়। আর সেই বন্যায় নাকাল হতে হয় গবিব কৃষকদের। ঘর, গরু, ছাগল ও ছেলে মেয়েসহ বৃদ্ধ বাবা-মাকে নিয়ে আতঙ্কে থাকতে হয়। মুহূর্তে ফকির হতে হয় এই অঞ্চলের মানুষকে।’
উপজেলার টেপাখড়িবাড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ময়নুল হক বলেন, ‘বন্যার পানি ওঠানামা করেছে। এতে ইউনিয়নের প্রায় ৭০০ পরিবার বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে। অনেকে গরু, ছাগল ও হাঁস-মুরগি নিয়ে বাঁধে আশ্রয় নিয়েছেন।’
পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ খাঁন বলেন, ‘তিস্তার পানি বাড়া-কমায় ইউনিয়নের পূর্বছাতনাই ও ঝাড়সিংহেরশ্বর গ্রামে প্রবেশ করেছে। ইতোমধ্যে ওই দুই গ্রামের প্রায় ৫৫০টি পরিবার বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে। প্রত্যেক বাড়িতে প্রায় হাঁটু সমান পানি। এই পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে আমন ক্ষেতসহ পুকুরের মাছ ভেসে যাবে।’
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানায়, বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে নদীর পানি বিপৎসীমার ৩৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়। এরপর বিকাল ৩টায় পানি বেড়ে ১০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। আবার সন্ধ্যা ৬টায় পানি বেড়ে বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।’
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আসফাউদদৌলা বলেন, ‘ভারী বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের কারনে তিস্তা নদীর ভাটি অঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি জলকপাট (স্লুইস গেট) খুলে রেখেছে পাউবো।’

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ