রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) উপজেলা সংবাদদাতা : রূপগঞ্জে ভূমিদস্যু ছায়েদ আলী বাহিনীর বিরুদ্ধে জাল দলিল করে একই জমি একাধিকবার বিক্রি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রতিবাদ করায় ভুক্তভোগীদের মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। অভিযোগ উঠেছে, এ বাহিনীর বিরুদ্ধে কেউ টুঁ শব্দ করার সাহস পাচ্ছে না। মাঝে মাঝে এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করতে দেশীয় অস্ত্রের মহড়া দিচ্ছে এই সন্ত্রাসী বাহিনী। বিভিন্ন জেলা থেকে আসা নিরীহ লোকদের জমি জোরপূর্বক জবরদখলের অভিযোগ রয়েছে এ বাহিনীর বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, ছায়েদ আলী বাহিনীর সদস্যরা জবরদখল ছাড়াও বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকা-ে লিপ্ত রয়েছে। ছায়েদ আলীসহ এ বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে রূপগঞ্জ থানায় একাধিক মামলা থাকলেও তাদের অপকর্ম চলছেই। ছায়েদ আলী উপজেলার ভুলতা ইউনিয়নের মর্তুজাবাদ এলাকার মৃত মোহাম্মদ আলীর ছেলে। ছায়েদ আলীর দম্ভোক্তিÑ ‘সে যতই অন্যায় করুক প্রশাসন তার কিছুই করতে পারবে না। প্রশাসন তার হাতের মুঠোয়।’ অভিযোগ রয়েছে, ভূমিদস্যু ছায়েদ আলী এলাকার সাধারণ মানুষকে ঠকিয়ে ও জাল দলিল করে একই জমি একাধিকবার বিক্রি করে তার বাহিনীর সদস্যদের দিয়ে নিরীহ মানুষের জমি জবরদখল করে নিচ্ছে। ছায়েদ আলীর এসব অপকর্মের সহযোগিতা করছেনÑ জাকির ওরফে টাকলু জাকির, শওকত আলী, ইয়াকুব আলী, মিজান, বিমল বৈরাগী, রেজা মেম্বারসহ একটি বিশাল ভূমিদস্যু চক্র। ছায়েদ আলী তার সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে মর্তুজাবাদ, আমলাবো, সিংলাবো, গোলাকন্দাইল, ভুলতা এলাকার নিরীহ মানুষের জমি ভুয়া দলিল ও জোরপূর্বক জবরদখল করে আসছে। এ বাহিনীর বিরুদ্ধে কেউ ভয়ে প্রতিবাদ করার সাহসটুকুও পায় না। এমনকি থানায় মামলা করে কোনো প্রতিকার পাচ্ছে না হয়রানির শিকার ভুক্তভোগীরা। ভূমিদস্যু ছায়েদ আলীর হয়রানির শিকার তার চাচাতো ভাই হাজী মোসলেম জানান, মর্তুজাবাদ এলাকায় তার বাড়ির ৯ শতাংশ জমি ছায়েদ আলী তার কাছে দুবার বিক্রি করে আবার জাল দলিল করে মামলা করে তাকে হয়রানি করছে। এ ছাড়া ডেমরা এলাকার আব্দুল মান্নান জানান, ওয়ারিশ সূত্রে মালিক হয়ে আমলাবো মৌজায় ৭৪ শতাংশ জমি দীর্ঘদিন ধরে বাড়ি করে ভোগদখল করে আসছেন। ওই জমিটি ভুয়া দলিল করে ভূমিদস্যু ছায়েদ আলী বাহিনীর সদস্যরা জবরদখলের চেষ্টা চালিয়ে আসছে। গত ৩১ অক্টোবর ছায়েদ আলী বাহিনীর সদস্যরা জোরপূর্বক পাকা দেয়াল নির্মাণ করতে যায়। এ সময় বাধা দেয়ায় আব্দুল মান্নানকে লাঠিপেটা করে গুরুতর আহত করা হয়। একপর্যায়ে তাকে শ্বাসরোধে হত্যার চেষ্টা চালায়। এ ঘটনায় ৫ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত ৮/১০ জনকে আসামি করে রূপগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর মামলা তুলে নিতে আবদুল মান্নানকে অপহরণ ও হত্যার হুমকি দেয়া হচ্ছে। শুধু তাই নয়, বিভিন্নভাবে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির চেষ্টা চালানো হয়। অপর ভুক্তভোগী শিংলাবো এলাকার সুজন দেওয়ান জানান, ২৪ শতাংশ জমি দীর্ঘদিন ধরে ভোগদখল করে আসছেন। ছায়েদ আলীসহ তার বাহিনীর সদস্যরা ভুয়া দলিল করে ওই জমিটুকু জবরদখলের চেষ্টা চালায়। এ সময় এলাকাবাসীকে সাথে নিয়ে জবরদখলে বাধা প্রদান করে করলে তাকে গুম করার হুমকি দেয়া হয়েছে। একই অভিযোগ টেলাপাড়া এলাকার আফজাল মিয়ারও। আফজাল মিয়া জানান, তিনি ৩৩ শতাংশ জমি ভোগদখল করে আসছেন দীর্ঘদিন ধরে। তার জমিও ভুয়া দলিল করে জবরদখলের চেষ্টা চালিয়ে আসছে ছায়েদ আলী বাহিনীর সদস্যরা। জমি জবরদখল করতে না পেরে আফজাল মিয়াকে বিভিন্নভাবে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রানি করার চেষ্টা চালাচ্ছেন। একই এলাকার ইমরান হোসেনের জমি ভুয়া আইডি কার্ড, জাল দলিল ব্যবহার করে জোরপূর্বক জবরদখল করে নেয় ছায়েদ আলী বাহিনী। আমলাবো এলাকার আল-আমিন ও লোকমানের জমি জাল দলিল করে অন্যত্র বিক্রি করে প্রায় ৮০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় ছায়েদ আলী। এভাবে সাধারণ মানুষকে ঠকিয়ে ছায়েদ আলীসহ তার বাহিনীর সদস্যরা লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এ বাহিনীর অপরাধমূলক কর্মকা-ের প্রতিবাদ করতে গিয়ে অনেককেই মামলা-হামলাসহ বিভিন্নভাবে হয়রানির শিকার হতে হয়েছে। এ বাহিনীর বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগের শেষ নেই। এ বিষয়ে ছায়েদ আলীসহ অভিযুক্তদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা তাদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করেন। এ বিষয়ে রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইসমাইল হোসেন বলেন, ছায়েদ আলীর বিরুদ্ধে জাল দলিল ও জমি জবরদখলের বেশ কয়েকটি অভিযোগ পেয়েছি। এ বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।