বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
পদ্মা সেতু পর আগামী রোববার বরিশাল-খুলনা/মোংলা মহাসড়কের ‘৮ম চীনÑবাংলাদেশ মৈত্রী সেতু’ চালু হতে চললেও দ্রত এবং নিরাপদ ও যাত্রীবান্ধব সেবা সম্প্রসারনে রাষ্ট্রীয় সড়ক পরিবহন সংস্থা-বিআরটিসির কোন ইতিবাচক পদক্ষেপ নেই। অথচ সংস্থাটির বরিশাল বাস ডিপোই পরিচালন মুনফায় দেশের প্রায় শীর্ষে রয়েছে। গত ২৬ জুন পদ্মা সেতু চালুর ফলে বরিশাল সহ দক্ষিনাঞ্চল থেকে রাজধানী ঢাকার দুরত্ব ১শ থেকে দেড়শ কিলোমিটার পর্যন্ত হ্রাস পেলেও বিআরটিসি যাত্রী সেবার কাঙ্খিত সম্প্রসারন করতে পারেনি। ফলে রাজধানীর সাথে দক্ষিণাঞ্চলের পরিবহন ব্যাবসা এবং যাত্রীসেবায় কোন প্রতিযোগীতা ও জবারবদিহিতা না থাকায় বেসরকারী পরিবহন ব্যবসায়ীরা যাত্রীদের গলা কাটলেও তা থেকে পরিত্রান নেই। শুধুমাত্র বরিশাল থেকে ঢাকার ১৬৫ কিলোমিটার সড়ক পথে বেসরকারী পরিবহন ব্যাবসায়ীরা বাতানুকল বাসে জনপ্রতি সাড়ে ১২শ টাকা পর্যন্ত আদায় করছে। অথচ বিআরটিসি’র বাতানুকুল বাসে ভাড়া ৬শ টাকা হলেও প্রয়োজনীয় গাড়ীর অভাবে সেখানে যাত্রীদের ভ্রমনে সুযোগ অতি সিমিত।
এদিকে ৪ সেপ্টেম্বর বরিশালÑখুলনা/মোংলা মহাসড়কের বেকুঠিয়ার কঁচা নদীর ওপর নির্মিত ‘বঙ্গমাতা বেগম ফজিলতুননেসা ৮ম চীনÑবাংলাদেশ মৈত্রী সেতু’ উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফলে বরিশাল ও খুলনা বিভাগের ১১টি জেলার মধ্যে ফেরিবিহীন সরাসরি সড়ক যোগাযোগ চালুর পাশাপাশি চট্টগ্রাম বিভাগের সাথেও খুলনা, যশোর, বেনাপোল ও ভোমড়া বন্দরের সড়ক যোগাযোগ সহজতর হচ্ছে। বরিশাল ও খুলনার মধ্যে মাত্র ১০৫ কিলোমিটার দুরত্বের মহাসড়ক পাড়ি দিতে দু ঘন্টাও লাগার কথা নয়।
কিন্তু বেসরকারী মিনিবাস নামের নিম্নমানের গাড়ীগুলোতে বর্তমানে ১টি ফেরি পার হয়ে সময় লাগছে সাড়ে ৪ ঘন্টা থেকে ৫ ঘন্টা। বিআরটিসি বর্তমানে বরিশাল থেকে সকালÑবিকেল মাত্র ৩টি ও কুয়াকাটা থেকে বরিশাল হয়ে খুলনায় আরো দুটি বাস সার্ভিস পরিচালন করলেও তার ৩টি গাড়ীই দীর্ঘ দিনের পুরনো। এছাড়া একসময়ের বরিশাল-খুলনাÑযশোরÑবেনাপোল রুটেও সংস্থাটির কোন বাস সার্ভিস আর অবশিষ্ট নেই।
অপরদিকে আগামী মাসের মধ্যেই বরিশালÑগোপালগঞ্জ-নড়াইলÑযশোর মহাসড়কের ‘কালনা সেত’ চালু হলে দক্ষিণাঞ্চল থেকে যশোর ও বেনাপোলের ফেরি বিহীন সংক্ষিপ্ত সরাসরি সড়ক যোগাযোগ চালু হচ্ছে। কিন্তু এরুটেও যাত্রী বান্ধব সেবা প্রদানের মত কোন বাস রাষ্ট্রীয় সংস্থাটির বরিশাল ডিপোতে অবশিষ্ট নেই।
দক্ষিণাঞ্চলের সাধারন যাত্রীদের পক্ষ থেকে বরিশাল ছাড়াও কুয়াকাটা সহ এ অঞ্চলের প্রতিটি জেলা সদর থেকে পদ্মা সেতু হয়ে সরাসরি ঢাকার পাশাপাশি খুলনা ও বেনাপোলের সরাসরি বাতানুকুল বাস সার্ভিস চালুর দাবী জানান হয়েছে।
এ ব্যাপারে বিআরটিসি’র বরিশাল বাস ডিপোর ব্যাবস্থাপকের সাথে আলাপ করা হলে তিনি জানান, ঢাকা, খুলনা ও বেনাপোল সহ সব গুরুত্বপূর্ণস্থানের সাথে যাত্রীবান্ধব সেবা প্রদানের লক্ষ্য আমাদের রয়েছে। এজন্য সদর দপ্তরের কাছে এসি বাস চেয়ে আবেদনও রয়েছে। কতৃপক্ষ গাড়ী বরাদ্ব দিলেই যাত্রী সেবা সম্প্রসারন সহ মান উন্নত করার কথাও জানান তিনি। তবে অদুর ভবিষ্যতে তা সম্ভব হবে কিনা সে সম্পর্কে তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজী হননি।
উল্লেখ্য, বরিশালে বিআরটিসি’র বাস ডিপোটিত ৭০টি নতুন ও পুরনো বাসের মধ্যে গড়ে চালু থাকছে ৪০টি। এরমধ্যে এসি ও নন এসি মিলিয়ে নতুন গাড়ীর সংখ্যা মাত্র ২০টির মত। নতুন ও পুরনো এসব বাসের সাহায্যে দক্ষিনে সাগর পাড়ের কুয়াকাটা থেকে উত্তরবঙ্গের রংপুর পর্যন্ত বিআরটিসি’র বরিশাল বাস ডিপো যাত্রী পরিবহন করছে।
কিন্তু প্রতি মাসে প্রায় ২ কোটি টাকা পরিচালন মুনফার এ ডিপোটিতে দীর্ঘদিন ধরেই আরো এসি বাস দেয়ার দাবীর বিষয়টি বিবেচনায় নেয়া হচ্ছেনা বলে অভিযোগ যাত্রীদের। বরিশালে এ ডিপোটির মাত্র ১৪টি এসি বাসের মধ্যে ১১টির সাহায্যে বরিশাল থেকে পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকায় যাত্রী পরিবহন করা হচ্ছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।