Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মাদকের বিরুদ্ধে কথা বলায় অপহৃত কিশোরের এক মাসেও সন্ধান মেলেনি

সাদিক মামুন, কুমিল্লা থেকে | প্রকাশের সময় : ৩১ আগস্ট, ২০২২, ১২:০০ এএম

এক মাসেও সন্ধান মেলেনি কুমিল্লা নগরীর ঠাকুরপাড়া গোবিন্দপুর এলাকা থেকে অপহৃত কিশোর আশিকুর রহমান ওরফে আশিকের। মাদকের বিরুদ্ধে কথা বলায় এবং স্থানীয় মাদক কারবারীদের প্রস্তাবে সাড়া না দেওয়ায় গত ৩১ জুলাই বেলা সাড়ে ১১টার দিকে প্রকাশ্যে তার ঘর থেকে মারধর করে তুলে নিয়ে যায় স্থানীয় কয়েক যুবক। এসব যুবকদের বিরুদ্ধে এলাকায় মাদক বেচাবিক্রির অভিযোগ রয়েছে।
এদিকে একমাসেও আশিকের সন্ধান না পাওয়ায় তার বাবা-মা ও পরিবারের লোকজন চরম উৎকণ্ঠায় রয়েছেন। তাদের ছেলে জীবিত আছে নাকি তাকে মেরে গুম করে ফেলা হয়েছে এমন দুশ্চিন্তায় আইনের দরজায় ঘোরাঘুরি করেই দিন কাটছে হতাশ মা-বাবার।
অপহরণের ঘটনায় আটক প্রধান আসামি মুসিকে গ্রেফতার ও রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর কোতোয়ালি পুলিশ মুসির দেয়া তথ্য যাচাই-বাছাই এবং তদন্ত করে একমাসেও উদ্ধার করতে পারছেনা আশিককে।
গতকাল মঙ্গলবার সকালে কুমিল্লা প্রেসক্লাবে গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে অপহরণের বিষয় ও উদ্ধার না হওয়া প্রসঙ্গে তার বাবা আলমগীর হোসেন জানান, মামলার এজাহারভুক্ত আসামি গোবিন্দপুর এলাকার জাহের মিয়ার ছেলে মুসি মিয়া, পার্শ্ববর্তী ঠাকুরপাড়া এলাকার রায়হান, নয়ন, পলাশ, বাহারাম অভি ও সোহাগ এলাকায় মাদকের ব্যবসা করে। তারা আমার দিনমজুর ছেলেকে তাদের সঙ্গে কাজ করতে বললে আশিক মাদকের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে এবং তাদের প্রস্তাবে সাড়া না দেওয়ায় মুসি ও তার গ্রুপ আমার ছেলের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। একপর্যায়ে তারা গত ৩১ জুলাই সকাল সাড়ে ১১টার দিকে গোবিন্দপুরে আমার ভাড়া বাসায় হামলা চালায়। আমার ছেলেকে এলোপাতাড়ি পেটাতে থাকে তারা। এক পর্যায়ে তারা আমার ছেলেকে টেনে-হিঁচড়ে ঘর থেকে তুলে নিয়ে যায়। এরপর থেকে ছেলের কোনো খবর পাইনি আমরা। এলাকার সিসি ক্যামেরার ফুটেজে আমার ছেলেকে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়ার ভিডিও পুলিশ দেখেছে।
অপহৃত আশিকের বাবা আলমগীর হোসেন আরো জানান, এঘটনায় আমার স্ত্রী আসলিমা বেগম কোতোয়ালী থানায় ওই ৫ জনের বিরুদ্ধে ছেলেকে অপহরণের অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করে। পুলিশ প্রধান আসামিকে গ্রেফতার করে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করলেও আমার ছেলেকে উদ্ধারের কোনো ক্লু উদঘাটন করতে পারছেন না। আজ এক মাস হতে চলেছে আমার ছেলেকে উদ্ধার ও তার কোন সন্ধান দিতে পারছে না পুলিশ। থানা ও আদালতে কেবল ঘুরাঘুরি করছি। ছেলেটা বেঁচে আছে নাকি তাকে মেরে গুম করে ফেলেছে তাও জানিনা।
এ বিষয়ে স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুর রহমান বলেন, ঘটনাটি আমি জানার পর অপহৃত আশিকের মাকে আইনি সহায়তা নেওয়ার পরামর্শ দিই। ছেলেটার সন্ধানের ব্যাপারে আমরাও খোঁজখবর নিচ্ছি।
কুমিল্লা কোতয়ালি মডেল থানার ওসি মুহাম্মদ সহিদুর রহমান বলেন, আমরা ওই কিশোরকে উদ্ধারে কোনো অবহেলা করছি না। এরই মধ্যে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালানো হয়েছে। মামলার প্রধান আসামি মুসিকে গ্রেফতারের পর রিমাণ্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তার দেওয়া তথ্যগুলো যাচাই করে দেখা হচ্ছে। মামলার অন্য আসামিদের গ্রেফতার এবং ওই কিশারকে উদ্ধারে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ