বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
আবু হেনা মুক্তি, খুলনা থেকে : বৃহত্তর খুলনার ৩ জেলা পরিষদ প্রশাসক পদের বিপরীতে ৬ জন প্রার্থীই হচ্ছে ক্ষমতাসীন দলের। ৩ জনকে আওয়ামী লীগকে মনোনয়ন দিয়েছে বাকিরা বিদ্রোহী প্রার্থী। এদিকে খুলনা, বাগেরহাট ও সাতক্ষীরা জেলার বিএনপি ও জামায়াত সমর্থিত প্রায় ৬ শতাধিক ভোটার ভোট প্রদান নিয়ে সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছেন। এর মধ্যে বাগেরহাট জেলা পরিষদ প্রশাসক কামরুজ্জামান টুকু একমাত্র মনোনয়নপত্র জমাদানকারী হওয়ায় তিনি বিনা প্রতিদ্ব›িদ্বতায় নির্বাচিত হতে যাচ্ছে। আর অন্য দু’টি জেলায় ক্ষমতাসীন দলের একাধিক প্রার্থীর কারণে স্বস্তিতে নেই আওয়ামী লীগের ভোটাররা। জেলা পরিষদ সদস্য নির্বাচনে ৩ জেলায় ১টি পদের বিপরীতে আওয়ামী লীগের একাধিক প্রার্থী থাকায় দলীয় ভোটাররা রয়েছেন তাই চরম বিপাকে।
সূত্র মতে, খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক এমপি এবং সদ্য পদত্যাগকারী জেলা পরিষদ প্রশাসক শেখ হারুনুর রশীদ দলীয় মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এছাড়া আওয়ামী লীগ নেতা অজয় সরকার এবং রূপসা উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা আলী আকবর শেখ মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ নজরে থাকা সিনিয়র আওয়ামী লীগ নেতা শেখ হারুনুর রশীদ তার নির্বাচনের জন্য দীর্ঘদিন কাজ করে আসছেন। তিনি খুলনা-১ আসন থেকে দুইবার জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। দলীয় টিকিটের বাইরে ডুমুরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা অজয় সরকার স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জোরালো কাজ করছে। এছাড়া দলীয় গ্রæপিং এ থাকা আলী আকবর শেখ নির্বাচনী যুদ্ধে নেমেছেন। সাতক্ষীরা জেলায় দলীয় মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সদ্য বিদায়ী জেলা পরিষদ প্রশাসক মুনসুর আহমেদ। বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো: নজরুল ইসলাম। স্থানীয় আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা অভিযোগ করে বলেছেন, নজরুল ইসলাম বিএনপি ও জামায়াত ইসলামের ভোট ব্যাংক থেকে ভোট সংগ্রহ করে নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়ার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। তবে কেন্দ্রের হস্তক্ষেপে অবশেষে নজরুল ইসলাম প্রত্যাহার করলে মুনসুর আহমেদ হয়তো বিনা প্রতিদ্ব›িদ্বতায় নির্বাচিত হতে পারে। তা না হলে জামায়াতের ঘাঁটি বলে খ্যাত সাতক্ষীরায় নির্বাচনী ভোটযুদ্ধে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এদিকে, বাগেরহাট জেলা পরিষদ প্রশাসক নির্বাচনে আওয়ীমী লীগের টিকিটে এককভাবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন শেখ কামরুজ্জামান টুকু। বাগেরহাট জেলায় কেউ বা কোনো দলের প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা না দেয়ায় বলা যায় তিনি বিন প্রতিদ্ব›িদ্বতায় নির্বাচিত হবেন।
বিএনপি জামায়াতের ভোটাররা সিদ্ধান্তহীনতায়
ভোটযুদ্ধে নামেনি বিএনপি জামায়াত। কেন্দ্রের নির্দেশনা মেনে চলছেন তারা। কিন্তু ভোটের উত্তাপ ছড়িয়ে পড়েছে গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে। খুলনা, বাগেরহাট ও সাতক্ষীরা জেলার ৫-৬ শত বিএনপি জামায়াতের চেয়ারম্যান মেম্বার রয়েছেন। এছাড়া গ্রæপিং-এর কারণে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থীকে পছন্দ করেন না এমন ভোটারের সংখ্যাও কম না। সব মিলিয়ে এই ৫-৬শ’ ভোটার এখন সিদ্ধান্তহীনতায়। এ ভোট কার প্রাপ্য, এই তাদের মনোজিজ্ঞাসা। জেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক অ্যাড: শফিকুল আলম মনা ইনকিলাবকে বলেন, জেলা পরিষদ নির্বাচনে বিএনপি’র ভোটের সংখ্যা ৩ শতাধিক হবে। কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এবং নির্বাচন সংবিধানবহির্ভূত হওয়ায় বিএনপি এ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না।
খুলনায় সদস্য পদে ৭১ জনের মনোনয়নপত্র জমা
সংরক্ষিত ওয়ার্ড নং-১ জমা পড়েছে ২টি, ওয়ার্ড নং-২ জমা পড়েছে ৩টি, ওয়ার্ড নং-৩ জমা পড়েছে ৬টি, ওয়ার্ড নং-৪ জমা পড়েছে ৪টি, ওয়ার্ড নং-৫ জমা পড়েছে ৪টিসহ মোট ১৯ জন মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন। অপরদিকে সাধারণ সদস্য পদে মনোনয়ন পত্র জমা পড়েছে ৫২টি। এরমধ্যে ওয়ার্ড নং- ১ জমা পড়েছে ৪টি, ওয়ার্ড নং- ২ তে ২টি, ওয়ার্ড নং- ৩ এ ৪টি, ওয়ার্ড নং- ৪ জমা পড়েছে ৫টি, ওয়ার্ড নং- ৫ হয়েছে ৭টি, ওয়ার্ড নং- ৬ হয়েছে ৮টি, ওয়ার্ড নং- ৭ হয়েছে ৫টি, ওয়ার্ড নং- ৮ হয়েছে ৪টি, ওয়ার্ড নং- ৯ হয়েছে ৫টি, ওয়ার্ড নং- ১০ হয়েছে ৩টি, ওয়ার্ড নং- ১১ পড়েছে ৩টি, ওয়ার্ড নং- ১২ পড়েছে ৫টি, ওয়ার্ড নং- ১৩ পড়েছে ৩টি, ওয়ার্ড নং- ১৪এ জমা পড়েছে ৬টি এবং ওয়ার্ড নং- ১৫ তে জমা পড়েছে ৭টি। গতকাল ও আজ রবিবার মনোনয়নপত্র বাছাই হচ্ছে। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন ১১ ডিসেম্বর। প্রতীক বরাদ্দ ১২ ডিসেম্বর। নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২৮ ডিসেম্বর।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।