Inqilab Logo

সোমবার, ০১ জুলাই ২০২৪, ১৭ আষাঢ় ১৪৩১, ২৪ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

এক মাসেও উদ্ধার হয়নি গফরগাঁওয়ের স্কুল ছাত্র

গফরগাঁও উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৯ আগস্ট, ২০২২, ৬:২০ পিএম | আপডেট : ৬:৫৫ পিএম, ২৯ আগস্ট, ২০২২

ময়মনসিংহ জেলার গফরগাঁও উপজেলার পাগলা থানায় নিখোঁজের ৩৭ দিন পরেও উদ্ধার হয়নি মেধাবী স্কুল ছাত্র মুহাম্মদ শান্ত মিয়া (১৪)। স্কুল ছাত্রের পরিবারের পক্ষ থেকে অজ্ঞাতনামা ২/৩ জনসহ আরো তিনজনকে আসামী করে আদালতের মাধ্যমে পাগলা থানায় অপহরন মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলা দায়েরে পর থেকেই আসামী পক্ষের হুমকিতে আতংকিত বাদী পরিবার। এদিকে মামলার প্রধান আসামীকে গ্রেফতার করেও ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে পাগলা থানা পুলিশের বিরুদ্ধে।

মামলার বাদী, অপহৃত স্কুল ছাত্র শান্ত’র মা মোছাঃ শিরিনা আক্তার অভিযোগ করে জানায়, গত রবিবার (২৮ আগষ্ট) বিকালে মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা এসআই কামাল মামলার ১ নং আসামী আসামী গ্রাম পুলিশ খোকা মিয়া(৫০) কে গ্রেফতার করে টাংগাব ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে নিয়ে জিঙ্গাসাবাদ করে। খবর পেয়ে অপহৃত স্কুল ছাত্র শান্ত’র মা মোছাঃ শিরিনা আক্তারসহ তার আত্মীয়স্বজন টাংগাব ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ের মাঠে গিয়ে উপস্থিত হয়। এক পর্যায়ে তাদের সামনেই আসামী খোকা মিয়াকে থানা পুলিশ ছেড়ে দেয়। এ সময় মামলার বাদী ও অপহৃত পরিবারের লোকজন এসআই কামালের কাছে আসামীকে থানায় নিয়ে যাওয়ার জন্য দাবী জানালে থানা-পুলিশ ধমক দিয়ে তাদের সরিয়ে দেয়। উৎসুক জনতা মোবাইল দিয়ে ছবি তুলতে ও ভিডিও করতে চাইলে পুলিশ সদস্যরা জোরপূর্বক তাদের মোবাইল কেড়ে নিয়ে ছবি ও ভিডিও ডিলিট করে দেয়।

আদালত ও থানায় দায়ের করা মামলা, অপহৃতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, নিখোঁজ শান্ত মিয়া উপজেলার বাশিয়া গ্রামের সউদী প্রবাসী আতাউর রহমান কাজলের ছেলে। আতাউর রহমান কাজল- মোছাঃ শিরিনা আক্তার দম্পত্তির দুই ছেলের মধ্যে সে বড় । শান্ত দত্তেরবাজর ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেনীর ছাত্র। গত ২২ জুলাই শুক্রবার সকাল ১০ টাংগাব ইউনিয়নের বামনখালি গ্রামের নানার বাড়ি থেকে নিজেদের বাড়িতে আসার সময় সে নিখোঁজ হয়। এ ঘটনায় গত ২৩ জুলাই পাগলা থানায় একটি সাধারন ডায়েরী করে শান্ত’র মা। প্রতিকার না পেয়ে গত ২৮ জুলাই ময়মনসিংহ জেলা আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট নিশাত জাহান চৌধুরীর ৭ নং আমলী আদালতে সে নালিশী দরখাস্ত করে। গত ৪ জুলাই আদালত নালিশী দরখাস্তটি এফাাইআর হিসেবে গণ্য করে মামলা রুজু করার জন্য পাগলা থানার ওসিকে নির্দেশ দেন। গত ৯ জুলাই বাশিয়া গ্রামের খোকা মিয়া, তার মেয়ে শরমিতা (২৮) ও পাশ^বর্তী বিরই গ্রামের হাবিবুর রহমান (৪০) ও অজ্ঞাতনামা আরো ২/৩ জনকে আসামী করে পাগলা থানায় অপহরন মামলা দায়ের করা হয়। দীর্ঘদিনেও স্কুল ছাত্র শান্ত’র সন্ধান না পেয়ে তার পরিবারের লোকজন উদ্বেগ-উৎকন্ঠায় দিনাতিপাত করছে।

শান্ত’র মা মোছাঃ শিরিনা আক্তার বলেন, থানা পুলিশের পরামর্শেই আমরা প্রথম জিডি করি। পরে আদালতের নির্শেশে থানা-পুলিশ অপহরন মামলা নেয়। দীর্ঘদিনেও থানা পুলিশ আমার পুত্রের নিখোঁজের ব্যাপারে কোন তথ্য বের করতে পারেনি। প্রধান আসামীকে গ্রেফতার করেও ছেড়ে দিয়েছে। আমার ছেলেকে খুজেঁ পাচ্ছি না। আসামীপক্ষ মামলা প্রত্যাহারের জন্য প্রতিনিয়ত হুমকি দিচ্ছে।মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই কামাল বলেন, গ্রাম পুলিশ খোকা মিয়াকে জিঙ্গাসাবাদের জন্য ডেকে আনা হয়েছিল। সম্ভবত গ্রাম পুলিশের মেয়ে শরমিতার (২৮) সাথে ওই ছেলের প্রেমের সম্পর্কের জের ধরে এ ঘটনা ঘটেছে।পাগলা থানার ওসি মোঃ রাশেদুজ্জামান বলেন, শান্তকে খুঁেজ বের করতে আমাদের তদন্ত কার্যক্রম অব্যাহত আছে। চেষ্টা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যে তাকে খুঁজে বের করার।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ