পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : অতীতচারিতা ভুলে আবারো সরকারকে সংলাপে বসার আহ্বান জানিয়েছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংবাদ সম্মেলনের কয়েক ঘণ্টা আগে দুপুরে এক আলোচনা সভায় সরকারের প্রতি এই আহ্বান জানান বিএনপি মহাসচিব।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমরা আবারো বলছি, অতীতচারিতা ভুলে যান। লেট আচ ফরগেট এবাউট দ্য পাস্ট। আসুন আমরা নতুন করে একটা আলোচনা করি, একটা সংলাপ করি। সেই সংলাপের মধ্য দিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে কীভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করা যায়, সেই পথ বের করি। বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার দেয়া নির্বাচন কমিশন গঠনের প্রস্তাবলীর প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, চেয়ারপার্সন একটা প্রস্তাব দিয়েছেন। যদিও তারা (আওয়ামী লীগ) সাথে সাথে তা রিজেক্ট করেছে। এখনো আমরা আশা করব। আবারো বলছি, এই দাম্ভিকতা, অসহনশীলতা, দেশকে বিভক্ত করার যে চক্রান্ত তার থেকে বেরিয়ে এসে বাংলাদেশের মানুষের স্বার্থে এটা (নির্বাচন কমিশন গঠনের প্রস্তাবাবলী) নিয়ে আলোচনা করুন, পথ বের করুন। নির্বাচনে সকল দলের অংশগ্রহণের একটা সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের ক্ষমতা জনগণের হাতে ফিরিয়ে দেন। নিরপেক্ষ নির্বাচনে দিলে যে ফলাফল হবে, তা মেনে নেবে বলেও জানান বিএনপি মহাসচিব।
তিনি বলেন, ভয় কেন? সাহস যদি থাকে, জনগণের প্রতি আস্থা থাকে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে, নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচন দিন, যা ফলাফল হয়, তা-ই আমরা মেনে নেবো।
রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘ব্যারিস্টারস্ ফর চেইঞ্জ’ নামক আইনজীবী সংগঠনের উদ্যোগে ‘বর্তমান আমলে সাম্প্রদায়িকতা, উগ্রবাদ ও আইনের শাসন’ শীর্ষক এই আলোচনা সভা হয়।
তথ্যমন্ত্রীর বক্তব্য প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, শুক্রবার দেখলাম, সমানে বেগম খালেদা জিয়া ও আমাকে নিয়ে অনেক কথা বলেছেন আমাদের তথ্যমন্ত্রী। তিনি আমার ভালো বন্ধু মানুষ। বন্ধু বলতে সম্ভবত আমার জুনিয়র ফ্রেন্ড হবেন। রাজনীতিতে বাম রাজনীতি করেছেন, বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্র করতে গিয়ে শেখ সাহেবের বিরুদ্ধে গুবাহিনী তৈরি করেছিলেন, যুদ্ধ শুরু করেছিলেন। কাকতালীয়ভাবে এখন তিনি সেই দলেরই সরকারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে তথ্য মন্ত্রণালয়। অর্থাৎ আওয়ামী লীগ কোথায়?
তিনি (ইনু) গতকাল বলেছেন, আইনের শাসনের কথা আসলে নাকি আমি এবং আমার নেত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া আমরা কথা বলতে শুরু করি এবং সেটার প্রতিবাদ করতে শুরু করি। আমি বলতে চাই, আইন তৈরি করেছে কারা? আইন তো তৈরি করছেন আপনারা, আইনকে ব্যবহার করছেন আপনারা। আইনকে পুরোপুরি ব্যক্তিগতভাবে দলীয় স্বার্থে আপনারা ব্যবহার করছেন।
তিনি বলেন, যাকে ইচ্ছা তাকে বাড়িতে ঢুকাচ্ছে, যাকে ইচ্ছা তাকে বাড়ি থেকে বের করে দিচ্ছেন। মাঠ দখল করছেন, অন্যের বাড়ি-জমি-সম্পত্তি দখল করছেন। এমনকি যে হিন্দু সম্প্রদায় যাদেরকে আপনারা এতটা বন্ধু বলে দাবি করেন, তাদের বাড়ি-ঘর জ্বালিয়ে দিচ্ছেন, পুড়িয়ে দিচ্ছেন তাদের জমি দখল করার জন্য।
সাঁওতালদের জমি থেকে উচ্ছেদ করছেন, গুলি করে তাদের ৪/৫ জনকে মেরে ফেলছেন। রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে ১/২টা অসংখ্য মানুষকে হত্যা করছেন। আপনারা বলেছেন, যেহেতু আমাদের বিরুদ্ধে মামলা আছে, সেজন্য আমরা এর বিরুদ্ধে কথা বলছি।
খালেদা জিয়াকে কারাগারে পাঠানো হবে, রাজনৈতিক অঙ্গনে নয়Ñ হাসানুল হক ইনুর এরকম বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, আপনাদের উদ্দেশ্য একটাই, আমরা যারা বিরোধী দলের রাজনীতি করি, আমরা যারা নির্বাচন করি, তাদেরকে রাজনীতি থেকে, নির্বাচন থেকে দূরে সরিয়ে রাখা। অতীতেও বহু চেষ্টা হয়েছে, কোনোভাবে টেকানো যায়নি, টেকানো যায় না। আপনার (শেখ হাসিনা) পিতার ক্ষেত্রেও হয়েছে। জনগণের পক্ষের রাজনীতি করে, তাদের পক্ষে আত্মত্যাগ করে রাস্তায় নামে, সংগ্রাম করে, হাজারো মিথ্যা মামলা দিয়ে আটকানো যায় না।
জিয়ার মাজার প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমাদের দলের শুধু প্রতিষ্ঠাতা নয়Ñ একজন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বীরোত্তম, যিনি স্বাধীনতা যুদ্ধের ঘোষণা দিয়ে মানুষকে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার জন্য অনুপ্রাণিত করেছেন। তার মাজারকে সরিয়ে ফেলার জন্য আপনারা আজকে ষড়যন্ত্র করছেন। অনেককিছু করতে পারেন। কারণ আপনাদের হাতে অনেক ক্ষমতা আছে, বন্দুক-পিস্তল-সব লোকজন আছে। কিন্তু টিকিয়ে রাখা যাবে না।
তিনি বলেন, কিউবা’র ফিদেল ক্যাস্ত্রোর মতোই বাংলাদেশেও জিয়াউর রহমানের নাম লক্ষ কোটি মানুষের হৃদয়ে রয়েছে। তার (জিয়াউর রহমান) পদক কেড়ে নিয়ে, তার সম্পর্কে অশ্লীল-অশ্রাব্য কথা বলে, তার চরিত্রকে হরণ করে কোনো লাভ হবে না। আমরা বলতে চাই, দিস ইজ জিয়াউর রহমান। যদি তার বিরুদ্ধে কিছু করার চেষ্টা করেন জনগণ তার বিরুদ্ধে দাঁড়াবে, জনগণ তাকে হৃদয় ধারণ করে নিয়েছে, জনগণ তাকে মাথার ওপরে রাখবে।
জঙ্গিবাদ সরকারের সৃষ্টি অভিযোগ করে তাদেরকে বিচারবহির্ভূতভাবে হত্যার সমালোচনা করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম।
তিনি বলেন, জঙ্গিবাদ আপনারা তৈরি করছেন। কোনো তদন্ত ছাড়া, বিচার ছাড়া বিচার হয়ে যাচ্ছে। কী নাশকতার চেষ্টা করছিল, সেই খবর পেয়ে নির্মূল করে দিল। ওইদিন ওয়ান মানথ একমাসের মধ্যে সব জঙ্গিবাদ শেষ, খতম হয়ে গেছে। কার স্বার্থে তৈরি হয়, কারা তৈরি করে, কীভাবে তৈরি করে, তারাই বলতে পারবেন। আসামি করেন আমাদের দলের নেতাদের।
সংগঠনের প্রধান সমন্বয়ক ব্যারিস্টার আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে ব্যারিস্টার শেখ মোহাম্মদ জাকির হোসেনের পরিচালনায় আলোচনা সভায় সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এডভোকেট জয়নাল আবেদীন, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরী, সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুবউদ্দিন খোকন, সাবেক সম্পাদক ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল, বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক এডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া, প্রশিক্ষণবিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
এছাড়া নবীন আইনজীবীদের মধ্যে মির্জা আল মাহমুদ, জিয়াউর রহমান, রাশেদ হোসেন মামুন, রফিকুল ইসলাম রাজা, নাসিরউদ্দিন অপু, আব্দুুল হালিম, সেভ দ্য সুন্দরবন ফাউন্ডেশনের শেখ ফরিদুল ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।