Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

২১ বছর পর মুক্তিযোদ্ধা স্বামীর ভাতায় নুতন ওয়ারিশ ?

দিনাজপুর সদর ইউএনও’র বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করার অভিযোগে সাংবাদিক সম্মেলন

দিনাজপুর থেকে মাহফুজুল হক আনার | প্রকাশের সময় : ২৮ আগস্ট, ২০২২, ৮:০০ পিএম

মুক্তিযোদ্ধার পরিবারকে অফিস থেকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দিয়েছেন দিনাজপুর সদরের ইউএনও মর্তুজা আল মুঈদ। ২১ বছর ধরে পেয়ে আসা স্বামীর মুক্তিযোদ্ধা ভাতায় ভুয়া ওয়ারিশ বানানোর প্রতিকার চাইতে গিয়েছিলেন ইউএনও’র কার্যালয়ে। কিন্তু প্রতিকার দূরের কথা পেয়েছেন সরকারী দপ্তর থেকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করার লাঞ্চনা। চরম অসন্মান এবং লাঞ্চনার প্রতিবাদ জানাতে হাজির হোন দিনাজপুর প্রেস ক্লাবে। ২৮ আগষ্ট রবিবার দুপুরে সন্তানসহ সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে ইউএনও’র লাঞ্ছনার কথা তুলে ধরেন মরহুম মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী মনোয়ারা বেগম। দাবী করেন বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা ও তদন্ত সাপেক্ষে শাস্তিসহ কর্মস্থল থেকে দ্রুত অপসারণ।

সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মরহুম বীর মুক্তিযোদ্ধা মৃত জবেদ আলীর স্ত্রী মোছাঃ মনোয়ারা বেগম বলেন, সোনালী ব্যাংক কর্পোরেট শাখা এ্যাসিসটেন্ট জেনারেল ম্যানেজার এবং সোনালী ব্যাংকের প্রিন্সিপাল অফিসার মোঃ সাখাওয়াত হোসেনের কথামত দিনাজপুর পৌরসভা ওয়ারিশনসহ যাবতীয় তথ্যাদি ও কাগজপত্র সোনালী ব্যাংক এ্যাসিসটেন্ট জেনারেল ম্যানেজার এবং ইউএনও‘র কাছে দেয়া হয়। অথচ ভাতা সংক্রান্ত জটিলতা আজো শেষ হচ্ছে না। স্বামীর মৃত্যুর পর ২০০০ইং থেকে ২০২১ইং সাল পর্যন্ত স্ত্রী মনোয়ারা বেগম এবং সন্তান মোঃ লতিফুর রহমান রুবেল মুক্তিযোদ্ধার পূর্ণ ভাতা পেয়ে আসছি।

তিনি আরো বলেন, আমি গত ২১ বছর ধরে আমি মুক্তিযোদ্ধা স্বামীর ভাতা পেতাম কিন্তু উপজেলা সমাজ সেবা অফিসার মোঃ আসাদুজ্জামান এবং মুক্তিযোদ্ধা সমন্বয়ক এবং সেবা বিভাগের সোনালী ব্যাংক কর্পোরেট শাখার প্রিন্সিপাল অফিসার মোঃ সাখাওয়াত হোসেন মোটা অঙ্কের ঘুষের বিনিময়ে মরহুম মুক্তিযোদ্ধা জবেদ আলীর ভুয়া আরো একজন ওয়ারিশ বানিয়ে দেন। সোনালী ব্যাংক কর্মকর্তা মোঃ সাখাওয়াত হোসেন ৩ লাখ টাকা ঘুষ দাবী করে বলেছিলেন ১ মাসের মধ্যে ওই ভুয়া ওয়ারিশন বাতিল করে দিব। এজন্যে সদর ইউএনওকে ঘুষ দিতে হবে নইলে কাজ হবে না। ঘুষের টাকার ভাগ নাকি বেশির ভাগ পান মুক্তিযোদ্ধা সমন্বয়ক সভাপতি ও সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মর্তুজা আল-মুঈদ। ঘুষের টাকা দিতে না পারায় দীর্ঘ দেড় বছর যাবত মোঃ জয়নুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তিকে ভুয়া ওয়ারিশনের ভিত্তিতে আমার মুক্তিযোদ্ধার ভাতার টাকা অর্থেক ভাগ করে দিচ্ছেন তারা। ওই ভুয়া সন্তান জয়নুলের বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা)এ কোন ওয়ারিশন তথ্য নেই, তবে সেখানে রয়েছে একমাত্র সন্তান লতিফুর রহমান রুবেলের নাম। এই ভুয়া ওয়ারিশ মোঃ জয়নুল ইসলামই টাকার জোরে কিনে নিয়েছে আমার স্বামীর সন্মানীর অর্থের অর্থেক ভাগ।

সংবাদ সম্মেলনে তারা আরো জানান,সদর উপজেলা সমাজ সেবা অফিসার মোঃ আসাদুজ্জামান এবং মুক্তিযোদ্ধা সমন্বয়ক ও সেবা বিভাগের দিনাজপুর সোনালী ব্যাংক কর্পোরেট শাখার প্রিন্সিপাল অফিসার মোঃ সাখাওয়াত হোসেন জনৈক্য মোঃ জয়নুল ইসলামের কাছে প্রায় ৫ লক্ষ টাকা ঘুষের বিনিময়ে মুক্তিযোদ্ধা জবেদ আলীর ভুয়া সন্তান বানিয়ে অর্ধেক ভাতা তাকে প্রদান করছেন। যা সম্পূর্ণ অমানবিক। মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সাথে এমন আচরনকারী ওই দুই ঘুষখোর কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণেরও দাবী জানান তারা।

পৌরসভার ওয়ারিশনের বিধি মোতাবেক স্থানীয় কাউন্সিলরা যাচাই-বাছাই অন্তে সবকিছু ঠিকঠাক হলে পৌর মেয়র স্বাক্ষরিত ওয়ারিশন সনদ প্রদান করেন। কিন্তু মোঃ জয়নুল ইসলাম পৌরবিধি লঙ্ঘন করে টাকার বিনিময়ে প্যানেল মেয়র আবু তৈয়ব দুলালকে দিয়ে ভুয়া চিঠি ইস্যু করে সোনালী ব্যাংকে একটি দরখাস্ত জমা দিয়েই অর্ধেক ভাতা গ্রহণ করছে। পৌরসভার মেয়র থাকা সত্তে¡ও ওয়ারিশ সনদ না নিয়ে সামান্য চিঠি দিয়েই কিভাবে মুক্তিযোদ্ধার অর্ধেক ভাতা পাচ্ছে ওই ব্যক্তিটি তা আমাদের বোধগম্য নয়। এব্যাপারে মোঃ জয়নুল ইসলাম নামের ভুয়া ওয়রিশন বাতিল করে পূর্বের মত যেন মুক্তিযোদ্ধার সম্পূর্ণ ভাতা তিনিই পান সেই ব্যবস্থা গ্রহনে জামুকা এবং জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপ কামনা করেন মরহুম মুক্তিযোদ্ধার বিধবা স্ত্রী মনোয়ারা বেগম। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মো: লতিফুর রহমান রুবেল। এসময় উপস্থিত ছিলেন বীরমুক্তিযোদ্ধা শামসুদ্দোহা দিনু, মো: হান্নান আলী,মোছা: মাহমুদা খাতুন,মো: আবু হানিফ প্রমুখ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ