বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
বরিশাল সেক্টরে জাতীয় পতাকাবাহী বিমান ফ্লাইট বন্ধে কর্তৃপক্ষ আরো একটি পদক্ষেপ হিসেবে ১ সেপ্টেম্বর থেকে যাত্রীদের বিমান বন্দরে যাতায়াতে গাড়ীটিও বন্ধ করে দিচ্ছে। গত বছর ১ নভেম্বর থেকে যাত্রীদের মহানগরী থেকে বিমান বন্দরের যাতায়াতে মিনিবাস চালু করে বিমান। ফলে রাষ্ট্রীয় এয়ারলাইন্সে যাত্রীদের ভ্রমনে আগ্রহ আরো হ্রাস পাবে। পদ্মা সেতু চালুর অজুহাতে গত ৫ আগষ্ট থেকে এ সেক্টরে নিয়মিত ফ্লাইট সপ্তাহে ৩ দিনে হ্রাস করেছে বিমান। এসব কারণে বরিশাল সেক্টরে সরকারী বিমান-এ ভ্রমনে আগ্রহ হারাচ্ছে। বিমান-এর একটি মহল এসময়ের জন্য অপেক্ষা করছে বলেও অভিযোগ সাধারন যাত্রীগনের। অথচ বেসরকারী একটি এয়ারলাইন্স প্রতিদিন বরিশালÑঢাকা আকাশ পথে যাত্রী পরিবহন করলেও বিমান-এর ফ্লাইট চলছে শুধুমাত্র বৃহস্পতি, শুক্র ও রবিবার।
দক্ষিণাঞ্চলের যাত্রীদের দাবী, ‘বিমান-এ ভ্রমনের জন্য আমরা ঢাকায় যেতে চাই না, আকাশ পথে ঢাকায় যাবার জন্য বিমান-এ ভ্রমন করতে চাই’। রাষ্ট্রীয় আকাশ পরিবহন সংস্থাটি দক্ষিণাঞ্চলবাসীকে বঞ্চিত করছে বলেও অভিযোগ সাধারন যাত্রী ছাড়াও স্থানীয় চেম্বার নেতৃবৃন্দ সহ বিভিন্ন সংগঠনের দায়িত্বশীলদের।
বরিশাল চেম্বার সভাপতি সাঈদুর রহমান রিন্টু জানিয়েছেন, বিমান কোন দিনই বরিশাল সেক্টরে ফ্লাইট পরিচালনায় আগ্রহী ছিলনা। তার অভিযোগ, ‘ করোনা সংকট কাটিয়ে গত বছরও বিমান কতৃপক্ষ বরিশাল সেক্টরকে বাদ দিয়ে সারা দেশে ফ্লাইট চালু করার উদ্যোগ গ্রহন করে। এসময় মন্ত্রী আবুল হাসনাত আবদুল্লাহর অনুরোধে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের নির্দেশনায় গত বছর ২৬ মার্চ থেকে বরিশাল সেক্টরে নিয়মিত ফ্লাইট চালু করা হয়। তার মতে, এরপর থেকেই বরিশাল সেক্টরে ফ্লাইট বন্ধের নানা তৎপড়তা ছিল। তার অভিযোগ, অতি সম্প্রতি বিমান-এর এমডি বদলী হবার সাথেই বরিশাল সেক্টরে ফ্লাইট বন্ধের তৎপড়তা শুরু করে অতি দ্রæততার সাথে তা কার্যকর করে। অথচ প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের নির্দেশে বরিশাল সেক্টরে ফ্লাইট চালু করা হয়েছিল। ফ্লাইট হ্রাসের আগে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরকে অবহিত করা উচিত ছিল বলেও মনে করেন তিনি। আর পদ্মা সেতু চালুর অজুহাত দেখিয়ে দৈনিক ফ্লাইট গত ৫ আগষ্ট থেকে সপ্তাহে তিন দিনে হ্রাস করা হয়েছে। এখন যাত্রীদের বিমান বন্দরে যাতায়াতের মিনিবাস সার্ভিসটিও বন্ধ করে দেয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।
বরিশাল আইনজীবী সমিতি ও বরিশাল প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি ইসমাইল হোসেন নেগাবানও বরিশাল সেক্টরে বিমান ফ্লাইট হ্রাস ও শহর থেকে ১৫ কিলোমিটার দুরে পরিবহন ব্যবস্থা বন্ধের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে অবিলম্বে তা পূণর্বহালেও দাবী জানান।
উল্লেখ্য, ২০০৭ সালে বন্ধ করে দেয়ার পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে ২০১৫ সালে প্রথমে সপ্তাহে দুদিন বরিশাল সেক্টরে ফ্লাইট চালু করা হয়। তৎকালীন বিমান মন্ত্রী রাশেদ খান মেননের চেষ্টায় পরবর্তিতে তা সপ্তাহে ৫ দিনে উন্নীত করার পরে করোনা সংকটে সারা দেশের মত বরিশালেও ফ্লাইট বন্ধ হয়ে যায়। প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের নির্দেশে গত বছর ২৬ মার্চ থেকে বরিশাল সেক্টরে নিয়মিত ফ্লাইট পরিচালন শুরুর পরে যাত্রী ভ্রমনের হার দেশের অন্য সব সেক্টরের তুলনায় সন্তোষজনক ছিল। এমনকি গত ৫ আগষ্ট থেকে সপ্তাহে যে মাত্র ৩ দিন বরিশাল সেক্টরে বিমান ফ্লাইট পরিচালন করছে তাতেও যাত্রী ভ্রমনের হার প্রায় ৮০% বলে জানা গেছে।
এদিকে বিমান-এর ওয়েব সাইটের সমস্যার কারণে বরিশাল সেক্টরের যাত্রীরা কোন ট্রাভেল এজেন্ট থেকে টিকেট সংগ্রহ করতে পারছেন না। সরকারী এয়ারলাইন্সে ভ্রমন করতে হলে যাত্রীকে স্বÑশরীরে শুধুমাত্র অফিস চলাকালীন সময়ে বিমান অফিস থেকে টিকেট সংগ্রহের বিকল্প নেই। অথচ বেসরকারী এয়রলাইন্সে এধরনের কোন বিড়ম্বনা নেই।
এসব বিষয়ে বিমান-এর বরিশাল সেলস অফিসের ব্যবস্থাপকের সাথে আলাপ করা হলে তিনি কোন মন্তব্য করেন নি। তবে বিমান-এর ব্যাবস্থাপনা পরিচালক-এর সাথে সেল ফোনে কথা বলা হলে তিনি জানান, যাত্রী হ্রাস পাবার কারণেই বরিশাল সেক্টরে ফ্লাইট হ্রাস করা হয়েছে। বরিশাল সেক্টরে বিদ্যমান ফ্লাইটগুলোতে যাত্রী সন্তোষজনক হলে পুনরায় ফ্লাইট সংখ্যা বৃদ্ধির বিষয়টি বিবেচনার কথাও বলেন তিনি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।