পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দেশের বিভিন্ন স্থানে নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪৬তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হয়েছে। তারই ধারাবাহিকতা নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) নজরুলের ৪৬তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হয়েছে। গতকাল শনিবার সকাল ৭টা ১৫মিনিটে এ উপলক্ষে ভিসি প্রফেসর ড. মো. আখতারুজ্জামানের নেতৃত্বে এক শোভাযাত্রা বের হয়। এসময় শোভাযাত্রা সহকারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ মসজিদুল পার্শ্বে অবস্থিত জাতীয় কবির সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও ফাতেহা পাঠ করে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ। পরবর্তীতে কবির সমাধি প্রাঙ্গনে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. সৈয়দ আজিজুল হকের সঞ্চলনায় ও ভিসি প্রফেসর ড. মো. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
আলোচনা সভায় প্রো-ভিসি (শিক্ষা) প্রফেসর ড. এএসএম মাকসুদ কামাল, ট্রেজারার প্রফেসর মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড. মো. নিজামুল হক ভূইয়া এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নজরুল গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালক প্রফেসর ড. সিরাজুল ইসলাম (সিরাজ সালেকীন) বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে স্মারক বক্তব্য প্রদান করেন বাংলা বিভাগের প্রফেসর ড. ভীষ্মদেব চৌধুরী। এছাড়া, বাদ ফজর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদ মসজিদুল জামিয়াতে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪৬তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে কোরানখানি অনুষ্ঠিত হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে কবির সমাধি সৌধে সকাল থেকেই বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, নজরুলচর্চাকেন্দ্রিক বিভিন্ন সংগঠন, দেশের প্রধান রাজনৈতিক সংগঠনগুলোসহ ব্যক্তিপর্যায় থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। শ্রদ্ধা জানাতে আসা ব্যক্তিরা সৌধে ফুল দেওয়ার পাশাপাশি প্রাঙ্গণে আবৃতি, গান, কবির স্মৃতিচারণাসহ বিভিন্ন পরিবেশনা করেন।
সকাল সাতটার দিকে বিএনপির পক্ষে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। সকাল নয়টার দিকে আওয়ামী লীগের পক্ষে সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে কবির সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। ওবায়দুল কাদের প্রধানমন্ত্রীর পক্ষেও শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এ সময় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগসহ আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনও শ্রদ্ধা জানায়।
সমাধিতে শ্রদ্ধা জানায় কবি পরিবার, বাসদ (মার্কসবাদী), বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু গবেষণা পরিষদ, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর, বাংলা একাডেমি, নজরুল ইনস্টিটিউট, বাঁশরী নজরুল চর্চা কেন্দ্রসহ নানা সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠন।
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম ১৩০৬ সালের ১১ জ্যৈষ্ঠ পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বাংলা সাহিত্যে বিদ্রোহী কবি হিসেবে পরিচিত হলেও তিনি ছিলেন একাধারে কবি, সংগীতজ্ঞ, ঔপন্যাসিক, গল্পকার, নাট্যকার, প্রাবন্ধিক, সাংবাদিক, চলচ্চিত্রকার, গায়ক ও অভিনেতা। তিনি বৈচিত্র্যময় অসংখ্য রাগ-রাগিনী সৃষ্টি করে বাংলা সঙ্গীত জগতকে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করেছেন।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর পরই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামকে সপরিবারে সদ্যস্বাধীন বাংলাদেশে নিয়ে আসেন। তিনি রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় বাংলাদেশে তাঁর বসবাসের ব্যবস্থা করেন এবং ধানমণ্ডিতে কবির জন্য একটি বাড়ি প্রদান করেন।
১৯৭৬ সালের ২৭ আগস্ট (১৩৮৩ বঙ্গাব্দের ১২ ভাদ্র) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে (সাবেক পিজি হাসপাতাল) শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। কবিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করা হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।