Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পর্যটকদের জন্য সুন্দরবন খুলছে আগামী ১ সেপ্টেম্বর

তিন মাস পর

ডিএম রেজা সোহাগ, খুলনা থেকে : | প্রকাশের সময় : ২৮ আগস্ট, ২০২২, ১২:০০ এএম

পর্যটকদের জন্য সুন্দরবন খুলছে আগামী ১ সেপ্টেম্বর। গত ১ জুন থেকে তিন মাস সুন্দরবনের সব নদ-নদী ও খালে মাছ ধরা নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিল বন বিভাগ। এই তিন মাস মাছের প্রজনন মৌসুম হওয়ায় সব ধরণের মাছ আহরণ বন্ধের পাশাপশি সুন্দরবনে পর্যটকদের প্রবেশও নিষিদ্ধ করা হয়। এ সময়টা বনের প্রাণীকুলের প্রজনন মৌসুম থাকায় এমন নির্দেশনা জারি করে বন বিভাগ। বন বিভাগ আশা করছে, নিষেধাজ্ঞা থাকায় বন্যপ্রাণীরা তাদের প্রজনন নির্বিঘ্নে করতে পেরেছে। মৎস্যসম্পদ বৃদ্ধিতেও ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে।

সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন পর ভ্রমণ পিপাসু পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করা হচ্ছে সুন্দরবন। তাই পর্যটকদের জন্য সুন্দরবনের লীলাভূমির সৌন্দর্য যেন হাতছানি দিয়ে ডাকছে দর্শনার্থীদের। তিন মাস পর আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে দেশি-বিদেশি পর্যটকরা যেতে পারবেন বিশ্বের বৃহত্তম এই ম্যানগ্রোভ বনে। নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার পর সুন্দরবনের করমজল, হারবাড়িয়া, কটকা, কচিখালী, হিরণ পয়েন্ট, দুবলা ও নীলকমলসহ সমুদ্র তীরবর্তী এবং বনাঞ্চলের বিভিন্নস্থানে লঞ্চ, ট্যুর বোট, ট্রলার ও বিভিন্ন নৌযানে চড়ে যেতে পারবেন দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ঘুরতে আসা দর্শনার্থীরা।
বন বিভাগের তথ্য অনুযায়ী ও খুলনাঞ্চলের বন সংরক্ষক মিহির কুমার দো জানান, ১ সেপ্টেম্বর থেকে সুন্দরবনে প্রবেশ করতে পারবেন দেশি-বিদেশি পর্যটকরা। একই সঙ্গে সুন্দরবনের বনজ সম্পদ আহরণের জন্য পাস পারমিট নিয়ে ওই দিন থেকে বনে প্রবেশ করতে পারবেন বনজীবীরাও। মৎস্য সম্পদ রক্ষায় ইন্টিগ্রেটেড রিসোর্সেস ম্যানেজমেন্ট প্ল্যানিংয়ের (আইআরএমপি) সুপারিশ অনুযায়ী প্রতি বছর এ মৌসুমে ১ জুলাই থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত দুই মাস বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনের সব নদী ও খালে মাছ আহরণ বন্ধ থাকে। ২০১৯ সাল থেকে এই কার্যক্রম চালু হয়েছে। কিন্তু চলতি বছর থেকে মৎস্য বিভাগের সঙ্গে সমন্বয় করে এই প্রথম এক মাস বাড়িয়ে ১ জুন থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত তিন মাস সময় বৃদ্ধি করেছে বন মন্ত্রণালয়। এই তিন মাস সুন্দরবনের সব নদী ও খালে মাছ ধরা বন্ধের পাশাপাশি পর্যটক প্রবেশেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। বন্ধ করা হয়েছে সুন্দরবনে প্রবেশের সব ধরনের পাস-পারমিট ও নৌ-চলাচল। ফলে দীর্ঘ তিন মাস সুন্দরবন ছিল জেলে ও পর্যটক শূন্য।
এদিকে বনের ওপর নির্ভরশীল জেলে, ট্যুর অপারেটর, লঞ্চ ও বোটচালকরা আগেভাগেই প্রস্তুতি নিচ্ছেন দর্শনার্থীদের সুন্দরবনে প্রবেশের জন্য। তাদের বোটগুলোকে রং-তুলি ও মেরামত সেরে নতুনভাবে তৈরি করে সাজিয়ে রেখেছে পর্যটকদের ভ্রমনের জন্য। ট্যুর ব্যবসায়ীরা আশা করছেন, পদ্মা সেতু উন্মোচন হওয়ার পর এতদিন সুন্দরবনে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা ছিল। নিষেধাজ্ঞা উঠে গেলেই সড়ক পথে পদ্মা সেতু পার হয়ে সহজেই অসংখ্য পর্যটক প্রতিদিন ভিড় করবেন পুর্ব বিভাগের সুন্দরবনে।
সুন্দরবন করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাওলাদার আজাদ কবির জানান, গত তিন মাস সুন্দরবনের পর্যটক আসা বন্ধ থাকায় বন্যপ্রাণীগুলো বিকেল হলেই পর্যটন কেন্দ্রের সামনে চলে আসছে। মানুষের আনাগোণা কম হওয়ায় নদীর পাশে বা সামনে আসতে ভয় পাচ্ছে না। তিন মাস পর্যটক আসা বন্ধ থাকায় সরকারের কিছুটা রাজস্ব কম হয়েছে, তবে তার চেয়ে বেশি উপকার হয়েছে বনজ সম্পদ ও বন্যপ্রাণীকুলের।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ