বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
বর্ষার ভরা মৌসুমেও যখন বৃষ্টির অভাবে মাটি ফেঁটে চৌচির, তখন তিস্তা সেচ প্রকল্পনির্ভর কৃষকরা রয়েছেন ফুরফুরে মেজাজে। নামমাত্র খরচে সেচ সুবিধা পাওয়ায় বাম্পার ফলনেরও আশা করছেন কৃষকরা। সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, এবার আমন মৌসুমে ৪০ কোটি টাকার জ্বালানি সাশ্রয় করেছে তিস্তা সেচ প্রকল্প।
সরেজমিনে ঘুরে কৃষকদের সাথে কথা বলে এমন তথ্য মিলেছে। তবে সার ও কিটনাশকের দাম বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে ধানের ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় শঙ্কা রয়েছে তাদের।
জেলা সদরের রামনগর ইউনিয়নের ডাঙ্গাপাড়া এলাকার কৃষক অনিল চন্দ্র রায় বলেন, পাঁচ বিঘা জমিতে আমন করেছি। তিস্তা ক্যানেল না থাকিলে মরণ হইল হায় হামার। আকাশের পানি নাই। ক্যানেলের পানি হামরা জমিত দিবার পারিছি যখন প্রয়োজন তখন। কিন্তু যেইলা কৃষক ক্যানেলের গোড়োত নাই ওমরা তো শ্যাষ। পানি দিবার পায়ছে না জমিত।
মাঝাপাড়া এলাকার মিজানুর রহমান বলেন, তিন বিঘা জমিত আবাদ করিছি তিস্তা সেচ প্রকল্পের পানি দিয়ে। পানির কোন সমস্যা নাই। ৫০ টাকা বিঘা প্রতি পানির জন্য দিবার নাগে।
একই এলাকার বিধু রায় বলেন, ধানের চারা রোপণ থাকি ছয়বার পানি দিলে আর নাগে না। পর্যাপ্ত পানি ক্যানেলোত আছে, পাইছিও হামরা। ধানের চারা সবল আছে, ভালো ফলন হবে আশা করি।
তবে সুবিধা না পাওয়ায় আক্ষেপ রয়েছে অন্য কৃষকের। চাঁদেরহাট এলাকার কৃষক আফতাব উদ্দিন বলেন, আমার বাড়ির পাশ পর্যন্ত তিস্তার ক্যানেল রয়েছে কিন্তু সেখান থেকে আমরা সুবিধা পাচ্ছি না। ক্যানেলটি সম্প্রসারণ করা হলে হামার এলাকার অনেক মানুষের উপকার হয়।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) নীলফামারী ডিভিশন সূত্র জানিয়েছে, খরার কারণে চলতি আমন মৌসুমে ৪০ কোটি টাকার ডিজেল সাশ্রয় করেছে তিস্তা সেচ প্রকল্প। সেচ সুবিধা পাওয়ায় ব্যবহার করতে হয়নি শ্যালো মেশিন বা অন্য কোনো সেচযন্ত্র।
১ লাখ চার হাজার হেক্টর জমিতে সেচ দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও বিভিন্ন স্থানে ক্যানেল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ৭০ হাজার হেক্টরে সেচ দেওয়ার সক্ষমতা রয়েছে দেশের বৃহত্তম তিস্তা সেচ প্রকল্পের।
তবে কৃষকদের চাহিদার ফলে এখন পর্যন্ত ৪৫ হাজার হেক্টর জমিতে সেচের পানি সরবরাহ করতে পেরেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। আর এই সুবিধা পেয়েছেন নীলফামারী, রংপুর ও দিনাজপুর জেলার ১২ উপজেলার প্রায় ১৫ লাখ কৃষক। পানি উন্নয়ন বোর্ড নীলফামারী ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী কৃষ্ণকমল চন্দ্র সরকার বলেন, প্রতি বছর সেচ বাবদ কৃষকদের কাছ থেকে মাত্র ৪৮০ টাকা নেওয়া হয়। এবারে আগস্ট পর্যন্ত ৪৫ হাজার হেক্টরে সেচ দেওয়া হয়েছে। খরা দীর্ঘস্থায়ী হলে কৃষকদের চাহিদা মতো আরও জমিতে সেচ দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে আমাদের।তিনি আরও বলেন, ১৯৮৫ সালের পর আর সংস্কার বা মেরামত করা হয়নি তিস্তা সেচ ক্যানেলগুলো। সরকার উদ্যোগ নিয়েছে সেচ ক্যানেলগুলো সংস্কারের । বাস্তবায়ন হলে ৭০ হাজার হেক্টরে সেচ দেওয়া যাবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।