Inqilab Logo

বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

প্রধানমন্ত্রী ‘বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুনন্নেছা ৮ম চীন-বাংলাদেশ মৈত্রী সেতু’ উদ্বোধন করছেন ৪ সেপ্টেম্বর

দেশের ৩টি উপকূলীয় বিভাগ ও সমুদ্র বন্দরের সড়ক যোগাযোগ সহজতর হচ্ছে

নাছিম উল আলম | প্রকাশের সময় : ২৬ আগস্ট, ২০২২, ১২:৫১ পিএম

দক্ষিণাঞ্চলের সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থায় সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতা দুর করতে প্রধামন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ৪ সেপ্টেম্বর বরিশালÑখুলনা/মোংলা মহাসড়কের বেকুঠিয়াতে ‘৮ম চীনÑবাংলাদেশ মৈত্রী সেতু’ উদ্বোধন করতে যাচ্ছেন। সেতুটির নতুন নামকরন করা হয়েছে ‘বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুনন্নেছা ৮ম চীনÑবাংলাদেশ মৈত্রী সেতু’। ৪ সেপ্টেম্বর প্রধামন্ত্রী ঢকায় গনভবন থেকে ভার্চুয়ালী যুক্ত হয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে সেতুটির উদ্বোধন করবেন বলে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের প্রকল্প সংশ্লিষ্টগন জানিয়েছেন। ঐদিন সেতুটির বেকুঠিয়া পয়েন্টে এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানে বরিশাল, ঝালকাঠী ও পিরোজপুর এলাকার জন প্রতিনিধিগন ছাড়াও প্রশাসনের উর্ধতন কর্মকর্তাবৃন্দ সহ গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিতি থাবেন। ইতোমধ্যে পিরোজপুর সদর আসনের এমপি এবং মৎস্য প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম সেতু এলাকা পরিদর্শন করে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের বিষয়ে জেলা ও পুলিশ প্রশাসন সহ সড়ক অধিদপ্তরের প্রকল্প সংশ্লিষ্টগনকে দিক নির্দেশনা প্রদান করেছেন। গত ৭ আগষ্ট চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রী ওয়াং ই’র উপস্থিতিতে ৮ম চীনÑবাংলাদেশ মৈত্রী সেতুটি আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশ সরকারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

৮ম চীনÑবাংলাদেশ মৈত্রী সেতুটি নির্মানের ফলে দেশের ৩টি উপক’লীয় বিভাগের সড়ক যোগাযাগ আরো সহজতর হচ্ছে। বরিশাল সহ দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলোর সাথে খুলনা ও মোংলার প্রায় ৪০ কিলোমিটার এবং চট্টগ্রাম অঞ্চলের সাথে বরিশাল ও খুলনা বিভাগের দুরত্ব প্রায় দেড়শ কিলোমিটার হ্রাস পাবে। চট্টগ্রাম থেকে লক্ষ্ণীপুর-ভোলাÑবরিশাল হয়ে এ সেতুর মাধ্যমে খুলনার সাথে সড়ক যোগাযোগ প্রতিষ্ঠার ফলে ঢাকাÑচট্টগ্রাম ও ঢাকাÑমাওয়াÑখুলনা মহাসড়কের ওপর যানবাহনের চাপও অনেকটাই হ্রাস পাবে। এমনকি দেশের প্রধান স্থল বন্দর বেনাপোল ও ভোমড়া’র সাথে বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের দুরত্ব হ্রাস ছাড়াও সড়ক যোগাযোগ আরো নির্বিঘœ হবে। পাশাপাশি দেশের ৩টি সমুদ্র বন্দরের সাথেও সড়ক পথে একটি সেতু বন্ধন রচিত হতে যাচ্ছে। একই সাথে নদ-নদী বহুল দক্ষিণাঞ্চলের আরো একটি মহাসড়ক সম্পূর্ণ ফেরিমূক্ত হচ্ছে।

প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মিত দেড় কিলোমিটার দীর্ঘ এ সেতুটি নির্মানে চীন সরকার সম্পূর্ণ অনুদান প্রদান করেছে ৬৫৫ কোটি টাকা। চীনা প্রেসিডেন্ট-এর বাংলাদেশ সফরকালে ২০১৬ সালের ১ নভেম্বর ৮ম চীনÑবাংলাদেশ মৈত্রী সেতু নির্মানে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। এর দু বছর পরে ২০১৮ সালের ১ অক্টোবর ‘প্রী-স্ট্রেসড কংক্রীট বক্স গার্ডার’ ধরনের এ সেতুটির ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেতুটি নির্মানে প্রায় ২শ কোটি টাকা বাংলাদেশ সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ব্যায় করা হয়েছে। বাংলাদেশের নিজস্ব অর্থে সেতুটির উভয়প্রান্তে প্রায় দেড় কিলোমিটার সংযোগ সড়কের জন্য ভ’মি অধিগ্রহন সহ প্রশাসনিক ব্যায় এবং সিডি-ভ্যাট পরিশোধ ছাড়াও টোল প্লাজা নির্মিত হয়েছে। এটি হচ্ছে দক্ষিণাঞ্চলের দ্বিতীয় কম্পিউটিরাইজড টোল প্লাজা।

বরিশাল-খুলনা/মোংলা মহাসড়কের বেকুঠিয়াতে কঁচা নদীর ওপর ৬০ ফুট উচু এবং প্রায় এক কিলোমিটার দীর্ঘ মূল সেতুটির উভয় প্রান্তে ৪৯৫ মিটার ভায়াডাক্ট নির্মান করতে হয়েছে। সেতুটির তলদেশ দিয়ে চট্টগ্রাম, বরিশাল এবং মোংলা বন্দর সহ খুলনা নদী বন্দরের মধ্যে পণ্য ও জ¦ালানিবাহী বড় ধরনের নৌযান ছাড়াও নৌ বাহিনীর ফ্রিগেটের পাশাপাশি যেকোন ধরনের যুদ্ধ জাহাজ চলাচলে কোন প্রতিবন্ধকতা থাকছে না। এমনকি কঁচা নদীর মধ্যভাগে সেতুটির তলদেশে সবচেয়ে প্রসস্থ স্প্যানটিতে ১২২ মিটার নৌযান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়েছে। ১৩.৪০ মিটার প্রস্থ সেতুটির পিরোজপুর ও বরিশাল প্রান্তে সংযোগ সড়কে পয়ঃনিস্কাশন ব্যবস্থা নির্বিঘœ রাখতে আরো ২টি ছোট সেতু ও বক্স কালভার্ট নির্মিত হয়েছে।
‘চায়না রেলওয়ে ১৭তম ব্যুরো গ্রæপ কোম্পানী লিমিটেড’ ৯টি স্প্যান ও ৮টি পিয়ার বিশিষ্ট এ সেতুটির নির্মান কাজ গত ৩০ জুনের মধ্যে সম্পন্ন করে সড়ক অধিপ্তরকে অবহিত করার পরে ৭ আগষ্ট আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করা হয়। এরই প্রেক্ষিতে আগামী ৪ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিকভাবে সেতুটি উদ্বোধনের পরে তা যান চলালের জন্য খুলে দেয়া হচ্ছে। সেতুটি উদ্বোধনের সব প্রস্তুতি শুরু হয়েছে ইতোমধ্যে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ