পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানে আন্তর্জাতিক স¤প্রদায়ের সমর্থন আদায়ে সরকার সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, রোহিঙ্গা সঙ্কট বাংলাদেশের একার নয়, এটি একটি বৈশ্বিক সঙ্কট। দুঃখের বিষয় হচ্ছে, এটি যে বৈশ্বিক সঙ্কট সেটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে যথাযথভাবে বোঝাতে পারেনি বাংলাদেশ সরকার। বিশ্বের অন্যান্য মানবিক সঙ্কটে আন্তর্জাতিক স¤প্রদায় যেভাবে সাড়া দেয় বা তৎপর হয়, রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে তারা সেভাবে এগিয়ে আসেনি। এটা নিঃসন্দেহে সরকারের চরম কূটনৈতিক ব্যর্থতা ছাড়া আর কিছুই না। গতকাল বৃহস্পতিবার রোহিঙ্গা সঙ্কটের পাঁচ বছরপূর্তি উপলক্ষে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যার মূল চ্যালেঞ্জ তথা নিরাপদ রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তন প্রক্রিয়াটি একেবারেই স্থবির হয়ে পড়েছে। সরকার তাদের প্রত্যাবর্তন প্রক্রিয়া তরান্বিত করতে কার্যকরী কোনো পদক্ষেপ গ্রহন করতে ব্যর্থ হয়েছে। এই সঙ্কটকে এখন আর গুরুত্বের সঙ্গে নিচ্ছে না বিশ্ব। ২০২১ সালে মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের পর প্রত্যাবর্তন ইস্যুটি আরো জটিল আকার ধারণ করেছে। ভারত, চীন, জাপান, যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপের দেশগুলোসহ আন্তর্জাতিক মহল আরো কার্যকরী ও ফলোপ্রসূ চাপ না দিলে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে পাঠানো সম্ভব নয়। এজন্য বাংলাদেশ সরকারকে আরো জোরালো রাজনৈতিক তৎপরতা চালাতে হবে। মিয়ারমারের সামরিক জান্তার ওপর প্রচÐ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক চাপ সৃষ্টি করতে হবে।
রোহিঙ্গা ইস্যুতে সরকারে ব্যর্থতার সমালোচনা করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই সঙ্কটের শুরু থেকেই জনবিচ্ছিন্ন অনির্বাচিত সরকার চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়ে আসছে। ১২ লক্ষাধিক রোহিঙ্গাদের তাদের মাতৃভূমি রাখাইনে প্রত্যাবাসনে মিয়ানমারের ওপর কোনো কার্যকর চাপ সৃষ্টি করতে পারেনি সরকার। একজন রোহিঙ্গা শরনার্থীকেও তারা (সরকার) রাখাইনে পাঠাতে পারেনি। শুধু তাই নয়, দীর্ঘদিনের এই সমস্যাকে কার্যকরভাবে আন্তর্জাতিকীকরণ করতে না পারা নিসন্দেহে সরকারের চরম ব্যর্থতা।
তিনি বলেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তনকে শুধুমাত্র কাগুজে চুক্তিতে বন্দি না রেখে দ্বিপক্ষীয় ও বহুপক্ষীয় চুক্তির কার্যকর প্রয়োগের পথে এগুতে হবে। এই সঙ্কট সমাধানে জাতিসংঘ, আঞ্চলিক সংস্থা, বিশ্বপরাশক্তিগুলোর স্ব স্ব ভূমিকা সুনিশ্চিত করতে হবে। কার্যকর কূটনৈতিক তৎপরতার মাধ্যমে জাতিসংঘসহ আঞ্চলিক মহলকে বাংলাদেশের সীমাবদ্ধতার কথা উপলব্ধি করাতে হবে। আশ্রিত রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফিরে যাওয়া হতে হবে স্বেচ্ছায়, মিয়ানমারের নাগরিকত্ব নিয়ে, সম্মানজনক ও টেকসই। কেনো ধরনের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য সাধনের পাতানো খেলার অপকৌশল হিসেবে নয়। রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানের সরকার প্রধান থেকে শুরু করে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রীরা সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে বিদেশ সফরও করেননি বলে অভিযোগ করেন বিএনপি মহাসচিব।
শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার শাসনামলে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধান প্রক্রিয়ার কথা তুলে মির্জা ফখরুল বলেন, কেবলমাত্র একটি জনবান্ধব গণতান্ত্রিক সরকারের দ্বারাই এই সঙ্কট সমাধান করা সম্ভব। যা বাংলাদেশে এই মুহূর্তে অনুপস্থিত। তাই এই মুহূর্তে সর্বাগ্রে একটি গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা করার দিকেই আমাদের মনোযোগ দিতে হবে। জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত সরকারের পক্ষেই সম্ভব হবে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে কার্যকর উদ্যোগ নেয়া।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যা বাংলাদেশ শুধু অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে না, সামাজিকভাবে বড় ধরনের ভয়ের কারণ আছে। এই সরকারের চরম ব্যর্থতা যার মূল হচ্ছে, তাদের নেগোসিয়েটিং ক্যাপাসিটি নেই। ওরা একটি অনির্বাচিত, অবৈধ, দখলদার সরকার হওয়ার কারণে আন্তর্জাতিকভাবে যখন নেগোসিয়েট করবে জাতির সমর্থন যেখানে থাকবে না সেই নেগোসিয়েশন সফল হতে পারে না। তাদের সবচেয়ে বড় দূর্বলতা হচ্ছে একটা অনির্বাচিত সরকার হওয়ার কারণে আন্তর্জাতিক নেগোসিয়েশনে তারা চরমভাবে ব্যর্থ হচ্ছে।
২০১৭ সালের ২৪ আগস্ট মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে প্রায় ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা চট্টগ্রামের কক্সবাজারে প্রবেশ করে। এই সংখ্যা এখন ১২ লাখ ছাড়িয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।