Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ০৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৮ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

সরকারি কর্মচারীদের গ্রেফতারে পূর্বানুমতি লাগবে না

আপিল করবে সরকার

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৬ আগস্ট, ২০২২, ১২:০০ এএম

বেআইনি, সংবিধান পরিপন্থী বিধান বাতিল করলেন হাইকোর্ট
সরকারি কর্মচারীদের গ্রেফতারে সরকারের পূর্বানুমোদন নেয়ার বিধান বাতিল করেছেন হাইকোর্ট। আদালত বলেছেন, সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮ এর ৪১(১) ধারা বেআইনি, সংবিধান ও মৌলিক অধিকার পরিপন্থি। গতকাল বৃহস্পতিবার রুল চ‚ড়ান্ত করে এ রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া এবং বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের ডিভিশন বেঞ্চ এ রায় দেন।

রায়ের বিষয়ে রিটের পক্ষের অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ বলেন, আদালত রায়ে সরকারি চাকরি আইন-২০১৮ এর ৪১(১) ধারা বেআইনি, সংবিধান পরিপন্থী, মৌলিক অধিকার পরিপন্থি বলে ঘোষণা করেছেন। আদালত বলেছেন, সংবিধানের ২৭ অনুচ্ছেদে আছে, আইনের দৃষ্টিতে সবাই সমান। বিষয়টি সুনির্দিষ্টভাবেই উল্লেখ রয়েছে। তারপরও ৪১(১) ধারা করে সেখানে সরকারি কর্মচারীদেরকে আলাদাভাবে একটি সুরক্ষা দেয়া হয়েছে। তা কোনোভাবেই সংবিধানসম্মত নয়। এ আইনি একটি অসৎ উদ্দেশ্যে করা হয়েছে। সরকারি কর্মচারীদের সুরক্ষা দিতে এ আইনের ৪১(১) ধারা সংযোজন করা হয়েছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ রায়ের ফলে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের ফৌজদারি মামলায় গ্রেফতারের ক্ষেত্রে পূর্বানুমোদন নেয়ার প্রয়োজন নেই।

মনজিল মোরসেদ বলেন, আমরা আদালতকে দেখিয়েছি, এ আইন করার পেছনে একটাই উদ্দেশ্য। সেটি হচ্ছে সরকারি কর্মচারীদেরকে সাধারণ নাগরিক থেকে একটু আলাদা করে তাদেরকে একটি বিশেষ শ্রেণী হিসেবে দেখিয়ে, তাদের অনেক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা। অপরাধ করলেও যেন তারা অপরাধী হিসেবে শাস্তি না পায়। বিশেষ করে এ আইনের মাধ্যমে দুদকের যে স্বাধীনতা সেটা খর্ব করা হয়েছিল।

এর আগে একই ধরনের সুযোগ দিয়ে ২০১৩ সালে দুদক আইনের ৩২(ক) ধারা প্রণয়ন করলে জনস্বার্থে রিট করলে আদালত আইনটিকে বৈষম্যমূলক বলে বাতিল ঘোষণা করেন। একই সুযোগ সরকারি কর্মকর্তা/কর্মচারীদের দেয়ার জন্য ২০১৮ সালে প্রণীত উক্ত আইনের ৪১(১) ধারা আদালতের রায়ের পরিপন্থি।

রিটে সরকারপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অরবিন্দ কুমার রায়। তবে হাইকোর্টের এ রায়ের বিরুদ্ধে সরকারপক্ষ আপিল করবে বলে জানিয়েছেন সরকারের প্রধান আইন কর্মকর্তা (অ্যাটর্নি জেনারেল) এ.এম.আমিনউদ্দিন।

প্রসঙ্গতঃ ২০১৯ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর এক গেজেটে বলা হয়-১ অক্টোবর থেকে এ আইন কার্যকর হবে। আইনের ৪১ (১) ধারায় বলা হয়েছে, কোনো সরকারি কর্মচারীর দায়িত্ব পালনের সহিত সম্পর্কিত অভিযোগে দায়েরকৃত ফৌজদারি মামলায় আদালত কর্তৃক অভিযোগপত্র গৃহিত হইবার পূর্বে তাহাকে গ্রেফতার করিতে হইলে, সরকার বা নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমতি গ্রহণ করিতে হইবে। সরকারি চাকরি আইনের৪১(১) ধারায় বর্ণিত বিশেষ সুবিধা প্রদানের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে এ রিট করা হয়।



 

Show all comments
  • Saidul Islam ২৬ আগস্ট, ২০২২, ৮:১৫ এএম says : 0
    সরকারি কর্মচারীদের গ্রেপ্তারে পূর্বানুমতি লাগবে - এই আইন যেদিন হয়েছিল, সেদিনই বলেছিলাম, সময় হোক, এটা একদিন বাতিল হবে৷ সবই রাজনৈতিক হিসাবনিকাশ৷
    Total Reply(0) Reply
  • MD Shohel ২৬ আগস্ট, ২০২২, ৮:১৪ এএম says : 0
    সরকারী চাকুরীজীবীরা কি আরবের খোরমা খাজুর নে,যে তাদের গ্রেপ্তারের জন্য অনুমতি লাগবে। সময়োপযোগী সিদ্ধান্তঃ নেয়ার জন্য হাইকোর্ট কে অসংখ্য ধন্যবাদ
    Total Reply(0) Reply
  • Mesbahul Hoque ২৬ আগস্ট, ২০২২, ৮:১৪ এএম says : 0
    আমার কাছে এই সরকারী সিদ্ধান্ত টা ছিলো একটা হঠকারী সিদ্ধান্ত দেরিতে হলেও হাইকোর্টের সিদ্ধান্ত কে সাধুবাদ জানাই ।।
    Total Reply(0) Reply
  • Shahnaouz Nishan ২৬ আগস্ট, ২০২২, ৮:১৬ এএম says : 0
    উপরমহলে দেখানোর জন্য ভবিষ্যতে সরকার বলবে, বাংলাদেশ আইন সবার জন্য সমান। তাই এই কাপ ঝাপ !!!
    Total Reply(0) Reply
  • Kayesh Nayeem Uddin ২৬ আগস্ট, ২০২২, ৮:১৫ এএম says : 0
    মহামান্য হাইকোর্টকে সম্মান জানাই,,, এই ধরনের সংবিধান বহির্ভূত আইন বাতিল করার জন্য। আইন সবার জন্য সমান এটাই বাস্তবায়ন করতে হবে। অপরাধী যেই হোক না কেন, তাকে শাস্তির আওতায় আনতে হবে।।।
    Total Reply(0) Reply
  • Md Shahadat Hossen ২৬ আগস্ট, ২০২২, ৮:১৬ এএম says : 0
    বর্তমান হাইকোর্টের বিচার ব্যবস্থায় এমন পদক্ষেপ অনেক প্রশংসনীয়
    Total Reply(0) Reply
  • Raju Ahmmed ২৬ আগস্ট, ২০২২, ৮:১৬ এএম says : 0
    সরকারি কর্মকর্তারা কি বাপের দেশ পাইছে তাদের গ্রেফতার করা যাবে না? আইন সবার জন্য সমান অপরাধ করিলে গ্রেফতার হতে বাধ্য থাকবে
    Total Reply(0) Reply
  • Sonya Afrin Shanta ২৬ আগস্ট, ২০২২, ৮:১৭ এএম says : 0
    সুন্দর সিদ্ধান্ত, তবে সঠিক ভাবে কার্যকর হলেই হয়
    Total Reply(0) Reply
  • Mohmmed Dolilur ২৬ আগস্ট, ২০২২, ৩:০৫ এএম says : 0
    এই গুলি একটি পলিসি,এত দিন এই আইন ছিল,এখন সামনে নির্বাচন সরকারি কর্মচারী কর্ম কর্তা অবশ্যই দল করেন,যেহেতু বর্তমানে নির্বাচন সামনে তাই সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীরা যেহেতু সরকারের বিরোধীদের সাপেট না করতে পারেন সেই জন্য,যদি কোন সরকারি কর্মকর্তা কর্ম চারি বিরোধী দল কে সাপেট করেন,তাঁদের গ্রেফতার করতে এই পলিসি,এই গুলি জনগণ এখন বুঝে ঢোল কোন দিকে বাজে,আর কি পলিসি আছে,যে নির্বাচন জোর করে করার জন্য বুদ্ধি করার,কেউ বাতিল করবে কেউ আপিল করবেন,আসলেই এটি একটি নাটক,এই আইন এখন বাতিল না করে গণতন্ত্রের সরকার যখন হবে তখন সিদ্ধান্ত নেওয়া ভালো হবে,সব দল মিলে ভোটা ভোটের মাধ্যমে অস্থায়ী সরকার করে তার হাতে ক্ষমতা রেখে নির্বাচন করা হলে জনগনের সরকার হবে,সেই সরকার এই আইন টি সংশোধন করবেন,কিন্তু এখন করলে অথবা যদিও না করে যারা বর্তমান সরকার কে ভালো জানেন না তাদের গ্রেপ্তার করতেই এই পলিসি যেমন বাতিল ও আপিল,এটি একটি বড় আকারে সড়যনতড়।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: হাইকোর্ট


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ