বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
নওগাঁর আত্রাই উপজেলার গৌড় নদী থেকে অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলনের কারণে ভাঙনের মুখে পড়তে যাচ্ছে অর্ধশতাধিক গ্রাম ও শত শত হেক্টর কৃষি জমি। এই বিষয়ে প্রশাসনের কাছে একাধিকবার লিখিত অভিযোগ দিয়েও কোন ফল পাননি ভুক্তভোগী গ্রামবাসী। প্রতিবাদ করতে গেলেই হুমকি আর ধামকির শিকার হতে হচ্ছের তারা ।
নদীর তীরবর্তী পারমোহনঘোষ গ্রামের মৃত-মছির উদ্দিনের ছেলে আব্দুস সোবহান বলেন, উপজেলার বিশা ইউনিয়নের মথুরাবাটি, পারমোহনঘোষ, খালপাড়া, খাসখামার, মোহনঘোষ, ইসলামপুরসহ প্রায় অর্ধশতাধিক গ্রাম রয়েছে গৌড় নদীর তীরে। শুধু গ্রামই নয় জেগে ওঠা তীরে রয়েছে প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষদের লিজ নেওয়া শত শত হেক্টর কৃষি জমিও। গ্রাম আর কৃষি জমি সংলগ্ন নদী থেকে সরকারের নিয়ম না মেনে অপরিকল্পিতভাবে ড্রেজার মেশিন দিয়ে দিন-রাত বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। একই জমি সংলগ্ন নদী থেকে অনেক গভীর করে বালু উত্তোলন করার কারণে ভেঙে যাচ্ছে সেই সব জমি। কোন একসময় জমিগুলো নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার সঙ্গে গ্রামগুলোও বিলীন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। প্রভাবশালীমহলের ইন্ধনে ইজাদারের লোকেরা তাদের ইচ্ছেমাফিক বালু উত্তোলন করছেন। এলাকাবাসী বলেন, এই বিষয়ে কোন কিছু বলতেই গেলেই সেই মহলের পেটোয়া বাহিনী এসে আমাদেরকে নানা রকম হুমকি-ধামকি দিয়ে যায়। যার কারণে আমরা অসহায় হয়ে পড়েছি।
আরেক বাসিন্দা আব্দুল আলিম বলেন, গৌড় নদী থেকে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন বন্ধ করতে গত বছরের মার্চ মাসে আমরা গ্রামবাসী উপজেলা প্রশাসন বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ প্রদান করি কিন্তু আজ পর্যন্ত সেই বালু উত্তোলন কার্যক্রম বন্ধ হয়নি। ইতিমধ্যেই মথুরাবাটি মৌজার অনেক কৃষি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। কৃষি জমিতে বালু পড়ে ফসল চাষের অনুপযোগী হয়ে যাচ্ছে। আবাদি কৃষি জমি নদী গর্ভে হারিয়ে অনেক কৃষক নি:স্ব হয়ে গেছে। এভাবে বালু উত্তোলন অব্যাহত রাখলে বর্ষা মৌসুমে হাজার হাজার মানুষ তাদের বাড়ি-ঘর ও জমিজমা সবকিছু নদী গর্ভে হারিয়ে ফেলবেন। স্থানীয় ইউপি আ’লীগের নেতা ও চেয়ারম্যানের শক্তিতে বালু খেকোরা যা নয় তার চেয়ে অনেক বেশি নদী গর্ত করে একই জায়গা থেকে ইচ্ছে মতো বালু তুলছে। অথচ গত বছরই সরকারিভাবে এই নদী খনন করা হয়েছে। বিশা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান তোফাজ্জল হোসেন তোফা বলেন, যারা বালু উত্তোলনের ইজারা নিয়েছেন তাদেরকে আমি সরকারের নির্ধারিত স্থানে নিয়ম অনুসারে বালু উত্তোলন করার জন্য বলেছি। যদি তারা সেই নিয়ম না মেনে বালু উত্তোলন করেন তাহলে আমার কাছে অভিযোগ দিলে আমি বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানাবো।
বালু মহালের ইজাদার মো. রফিকুল ইসলাম রফিক বলেন, আমি সরকারের নিয়মানুসারে গুড়নই নদীর বালুমহাল ইজারা নিয়েছি। আমার লোকজন নিয়ম মেনেই বালু উত্তোলন করছে। আমি দলীয় কোন ব্যক্তির নাম ভাঙিয়ে কিংবা প্রভাবশালী কোন মহলের ইন্ধনেও বালু উত্তোলন করছি না।
আত্রাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইকতেখারুল ইসলাম বলেন, বালু উত্তোলনের ফলে ক্ষতি হচ্ছে এমন বিষয় ওই এলাকা থেকে জানানোর পর আমি বালু উত্তোলনের স্থানে ভ্রাম্যমাণ আদালতকে পাঠিয়েছিলাম। যারা বালু মহাল ইজারা নিয়েছেন তারা নিয়ম মেনে সঠিক জায়গা থেকে বালু উত্তোলন করছে কিনা সেই বিষয়টি সব সময় মনিটরিং করা হচ্ছে। তবে একই জায়গা থেকে বছরের পর বছর বালু উত্তোলন করার কারণে কৃষি জমি এবং বসতবাড়ির ক্ষতি হতে পারে এমন স্থান থেকে বালু উত্তোলন বন্ধ করতে বিষয়টি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানাবো। নওগাঁ-৬ (আত্রাই-রাণীনগর) আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মো. আনোয়ার হোসেন হেলাল বলেন, দ্রুত এই অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ করতে উপজেলা প্রশাসনকে আমি অনেকবার বলেছি। কিন্তু প্রশাসন দৃশ্যমান কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন না।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।