Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পাহাড়ি ঢলের তোড়ে বসতবাড়ি নদীতে বিলীন

গৃহহীনদের অন্যের বাড়িতে নির্ঘুম রাত কাটে

এস. কে সাত্তার, ঝিনাইগাতী (শেরপুর) থেকে | প্রকাশের সময় : ২৪ আগস্ট, ২০২২, ১২:০০ এএম

শেরপুরের নালিতাবাড়িতে ভোগাই নদীর বাঁধ নির্মাণে ঠিকাদারের গাফিলতিতে ১২ আগস্ট পাহাড়ি ঢলে বসতভিটা বাড়ি ঘর গাছপালা নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। শেরপুরের নালিতাবাড়ি পৌর শহরে বসতভিটা হারানো ক্ষতিগ্রস্ত গৃহপরিচারিকা জোসনা বেগমের (৪৩)। শুধু জোসনার একার নয়, পাশের বাড়ির চাতাল শ্রমিক খোদেজা বেগমেরও (৫৫)। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার ও এলাকাবাসী জানান, উত্তর গড়কান্দায় ভোগাই নদীর পাড়ে ৫ শতক জমিতে ২ পরিবারের বসত বাড়ি ভিটা ছিল। দিনমজুর ফজল স্ত্রী খোদেজাকে এবং দিনমজুর ইউসুফ আলী স্ত্রী জোসনাকে নিয়ে পাশাপাশি ঘরে বসবাস করতেন। সন্তানরা বিয়ে করে অন্যত্র চলে গেছে। তাঁদের ভিটামাটি ছাড়া কোনো জমি জমাও নেই। তাদের অভিযোগ, নদীতে বাঁধ নির্মাণে ঠিকাদারের গাফিলতিতেই ১২ আগস্ট বসতভিটা বাড়িঘর ও গাছপালা নদীতে ভেঙে পড়ে বিলীন হয়ে গেছে। সর্বস্ব হারিয়ে পরিবার ২ টির মাথা গোঁজার ঠায় না থাকায় ৮ দিন যাবত প্রতিবেশী ও স্বজনরা থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করছেন। তারা ভূমিহীন। সরকারের নিকট জমিসহ ঘর নির্মাণ করে দে’য়ার দাবি জানিয়েছেন। পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ও এলাকাবাসী জানান, গত বছর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ভোগাই নদীর উত্তর গড়কান্দায় ১১০ মিটার বাঁধ ভেঙে যায়। পাউবো ৩৮ লাখ টাকা ব্যয়ের বাঁধটি সংস্কারের ঠিকা পায় ‘রিফাত এন্টারপ্রাইজ’ নাম ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। গত ৩০ জুনের মধ্যে কাজ সম্পন্ন করার কথা। কিন্তু দ্রুত বাঁধ সংস্কার না করায় ২ পরিবারের বসতভিটা নদীতে ভেঙে বিলীন হয়ে গেছে। আরও ১০-১২টি পরিবার ভাঙনের কবলে দুশ্চিন্তায় রয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত ইউসুফ আলী বলেন, যদি জিও ব্যাগ ফালানো অইত, তাইলে আমগর বাড়িঘর ভাঙতো না। অহন আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে রাইত কাটাইতে অইতাছে। সরকার যদি সহযোগিতা করত, তাইলে আমগর বিরাট উপকার অইত। খোদেজা বেগম বলেন, চাতালে কাম কইরা দিনে ২০০ টেহা পাই। স্বামী অসুস্থ কামে যাইবার পায় না। কত কষ্ট কইরা দিন চালাই। অহন শেষ সম্বল বাড়ি ভিডাটাও গাঙে ভাইঙা গেছে। আমরা কই যাইমু। আত্মীয়স্বজন ভাত দিলে খাওন চলে। রান্দুনের উপায় নাই। মাইনষের বাড়িতে রাইত কাডাই। চিন্তায় ঘুম ধরে না। রিফাত এন্টারপ্রাইজের ঠিকাদার মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, পাইলিং করা হয়েছে। জিও ব্যাগও প্রস্তুুত হয়েছে। শুধু অনুমোদনের অপেক্ষায় আছি। ইউএনও হেলেনা পারভীন বলেন, ব্যাপরটি কেউ জানায়নি। সরেজমিন দেখে সমস্যা সমাধানে ব্যবস্থা করা হবে। যদি ঘর দেওয়ার মতো জায়গা থাকে, সরকারিভাবে ঘর দে’য়া হবে।’



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ