বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
গুম, খুনসহ মানবাধিকারের লঙ্ঘন করে পুরো রাষ্ট্রকেই যেনো 'আয়না ঘরে' বন্দী রাখা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স। তিনি বলেন, সর্বগ্রাসী সঙ্কটে দেশ বিপর্যস্ত। সরকারের মসনদ কেঁপে উঠছে। জনগণ দেশ পরিচালনায় ব্যর্থ সরকারকে আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না। জোর করে ক্ষমতায় টিকে থাকতে তারা তালগোল পাকিয়ে ক্রমাগত মিত্যাচার করছে,সত্য আড়াল করে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে।
সোমবার (২২ আগস্ট) লোডশেডিং ও জ্বালানী তেল,সার,নিত্য পণ্যের লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে হালুয়াঘাটে বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
নজিরবিহীন লোডশেডিং, জ্বালানী তেল,সার,নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য মূল্যে ও পরিবহন ভাড়া অস্বাভাবিক বৃদ্ধি এবং ভোলায় বিক্ষোভে গুলি করে ছাত্রদল সভাপতি নূরে আলম ও স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা আবদুর রহিমকে হত্যার প্রতিবাদে তৃণমূলে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির প্রথম দিনে হালুয়াঘাট উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গ -সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে বিশাল বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।
হালুয়াঘাট পৌর শহরের কোর্ট বিল্ডিং সংলগ্ন শহীদ স্মৃতিসৌধ থেকে বিকেল ৫ টায় বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স এর নেতৃত্বে হাজার হাজার নেতাকর্মী ও জনসাধারণের অংশগ্রহণে বিক্ষোভ মিছিলটি পৌর শহরের হাসপাতাল মোড়,মহিলা মার্কেট, পুরাতন বাসস্ট্যান্ড, মধ্য বাজার, উত্তর বাজার হয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।
মিছিলে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড থেকে যোগ দেয়া নেতাকর্মীরা 'জ্বালানী তেলের দাম বাড়লো কেনো, ব্যর্থ সরকার জবাব চাই', 'সারের দাম বাড়লো কেন, সরকার জবাব দাও', 'চাল ডাল তেলের দাম কমাতে হবে, কমিয়ে দাও','জনতার দাবী এক, দুর্ভোগ সৃস্টিকারী সরকারের পদত্যাগ ','এই মুহুর্তে দরকার,তত্বাবধায়ক সরকার', 'ভোলায় গুলি কেন,লাশ কেন,জবাব চাই জবাব চাই, ' প্রভৃতি শ্লোগানে শ্লোগানে মুখরিত করে রাখে পুরো মিছিল। মিছিলে তারা উক্ত দাবি সম্বলিত ফেস্টুনও বহন করে।
বিক্ষোভ মিছিল শেষে হালুয়াঘাট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, আওয়ামী সরকারের ব্যার্থতা ও ভুল সিদ্ধান্তে জনজীবনে নাভিশ্বাস উঠেছে। মানুষের আয় সঙ্কুচিত হয়ে গেছে। প্রতিটি পন্যের দাম আকাশচুম্বী। নজিরবিহীন লোডশেডিং এ মানুষ বিপর্যস্ত, কল-কারখানায় উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। ক্ষরায় ও পানি দিতে না পারায় ধান ক্ষেত ফেটে চৌচিড়। বিদ্যুৎ সঙ্কট,সার ও জ্বালানী তেলের মূল্যবৃদ্ধিতে কৃষকের মাথায় হাত । অন্যদিকে গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার সুদুর পরাহত।
তিনি বলেন, এই অবস্থা থেকে নিজেদের রক্ষা ও ক্ষমতায় টিকে থাকতে প্রকাশ্যে প্রতিবেশী রাষ্ট্রকে হস্তক্ষেপের অনুরোধ করে আওয়ামী সরকার রাষ্ট্রদ্রোহী ও রাষ্ট্রঘাতি কাজ করেছে । স¤প্রতি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যে গোমর ফাঁস হয়ে যাওয়ায় এখন তাকে আস্বীকার করছে আওয়ামী মন্ত্রী - নেতারা। অথচ, আওয়ামী লীগ তাকে মনোনয়ন দিয়ে অনুগত প্রশাসনের মাধ্যমে নির্বচনের আগের রাতে ভোট ডাকাতি করিয়ে এমপি ঘোষনা দিয়েছে,মন্ত্রী বানিয়েছে। 'ফ্রুটিকা খেয়ে সত্য কথা বলার' বিজ্ঞাপনের মত শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখতে ভারতের হস্তক্ষেপ চাওয়ার কথা অকপটে স্বীকার করায় তাকে ব্যবহৃত টিস্যু পেপারের মত ছুড়ে ফেলে দিয়ে নিজেদের রাষ্ট্রদ্রোহীতা আড়াল করতে চাইছে ক্ষমতাসীনরা। সত্য কথা বলে বেকায়দায় পড়ে নিজে বাঁচার জন্য পররাষ্ট্রমন্ত্রী এখন নিজের বক্তব্যকেই অস্বীকার করছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রীর জ্বালানো আগুনে ঘি ঢেলে ভূমি মন্ত্রী এবার বললেন তারা পুলিশের ওপর নির্ভরশীল। আসলে আওয়ামী লীগ জনগণ নয়, সব সময় অপরের ওপর নির্ভরশীল এবং তাঁবেদার। তিনি বলেন, জন সমর্থন হারিয়ে ফ্যাসিবাদী কর্তৃত্ববাদী দুঃশাসন কায়েম করে আওয়ামী লীগ যে পচে গলে নষ্ট হয়ে গেছে, তা বার বার প্রমানিত হচ্ছে। তারা পরগাছায় পরিণত হয়েছে। সরকারে এখন চলিতেছে সার্কাস।
প্রিন্স বলেন, জনতার ক্ষোভ-বিক্ষোভ দাবানলের মত গ্রাম-গঞ্জে,পাড়া-মহল্লায় ছড়িয়ে পড়ছে। মানুষের রক্ত চুষে সরকার রক্ত চক্ষু দেখিয়ে আন্দোলন দমন করতে পারবে না। চলমান আন্দোলন অচিরেই জনদূর্ভোগ সৃস্টিকারী সরকার পতনের আন্দোলনে পরিণত হবে বলে তিনি সমাবেশে উল্লেখ করেন।
বিক্ষোভ মিছিলে ময়মনসিংহ উত্তর জেলা বিএনপির আহŸায়ক অধ্যাপক এনায়েত উল্লাহ কালাম, জেলা বিএনপি নেতা বীরমুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক আমজাদ আলী, বীরমুক্তিযোদ্ধা কাজিম উদ্দিন, হালুয়াঘাট উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহŸায়ক হানিফ মোঃ শাকের উল্লাহ, আসলাম মিয়া বাবুল, আবদুল হাই,নাদিম আহম্মদ,আবু হাসনাত বদরুল কবির, জেলা বিএনপি নেতা অধ্যাপক আজহারুল ইসলাম কাজল, আরফান আলী, আবদুল হামিদ,আলী আশরাফ, আলমগীর আলম বিপ্লব, কাজী ফরিদ আহমেদ পলাশ, মীজানুর রহমান, অধ্যাপক মোফাজ্জল হোসেন ,রফিকুল ইসলাম,পরান আলী কাঞ্চু,শহিদুল হক খান সুজন, ক্বারী আবুল কাশেম, আবদুস সাত্তার, মোরশেদ আলম, রমজান আলী, আল আমিন চমক,হোসেন আলী,
ময়মনসিংহ উত্তর জেলা যুব দলের সভাপতি শামসুল হক,সহ সভাপতি আবদুল আজিজ খান, সহ সভাপতি হুমায়ুন কবির, মাসুম বিল্লাহ ,যুগ্ম সম্পাদক আবদুল মালেক, জেলা মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক হোসনে আরা নীলু, সহ সভাপতি মনোয়ারা বেগম ময়না, জেলা ছাত্র দলের সিনিয়র সহ সভাপতি আসাদুজ্জামান আসিফ, যুগ্ম সম্পাদক ফারুক হোসাইন, স্বেচ্ছাসেবক দলের জেলা সহ সভাপতি শামসুল হক, যুগ্ম সম্পাদক ইমরান হোসাইন, উপজেলা আহ্বায়ক রুহুল আমিন খান, পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান দুলাল, সদস্য সচিব আসাদুজ্জামান সুজন বিভাগীয় শ্রমিক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল গণি, উপজেলা কৃষক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন, সাধারণ সম্পাদক আবদুল হান্নান, তাঁতীদলের আহ্বায়ক আকিকুল ইসলাম, মৎস্যজীবী দলের আহŸায়ক মোশাররফ হোসেন, ছাত্রদলের উপজেলা আহ্বায়ক নাইমুর আরেফিন পাপন, পৌর সদস্য সচিব তাজবীর হোসেন অন্তর প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, বিএনপি আজ থেকে দেশব্যাপী তৃণমূলে উপজেলা,পৌর,ইউনিয়ন, ওয়ার্ডে সভা,সমাবেশ, মিছিলের কর্মসূচি পালন করছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।