Inqilab Logo

শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

রাশিয়া থেকে তেল কিনলে যেভাবে মূল্য দিতে হবে বাংলাদেশকে

অনলাইন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২২ আগস্ট, ২০২২, ১২:৫৮ পিএম

রাশিয়ার কাছ থেকে সরাসরি জ্বালানী তেল কেনার কী কী পথ রয়েছে সেটা এখন খতিয়ে দেখছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা এ তথ্য জানিয়েছেন।

সম্প্রতি পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান জানিয়েছিলেন, জ্বালানি সঙ্কটজনিত দুর্ভোগ এড়াতে রাশিয়া থেকে কম দামে তেল কেনার সম্ভাব্যতা যাচাই করার পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর এ নিয়ে কিছু তোড়জোড় চলছে, তবে তা এখনো আলোচনা এবং যাচাই বাছাই পর্যায়েই রয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।

এখন পর্যন্ত রাশিয়া থেকে তেল কেনা এবং বৈদেশিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে রুবলের ব্যবহার নিয়ে বাংলাদেশ অনাগ্রহী ছিল। কিন্তু জ্বালানির বর্ধিত দামের কারণে দেশের অর্থনীতিতে যে চাপ পড়েছে, তার কারণে এখন কম দামে জ্বালানি কেনার বিকল্প উৎসের সন্ধান করা হচ্ছে। কারণ তাতে আমদানি খরচ কিছুটা কমলে বাড়তি খরচের চাপ সামাল দেয়া যাবে।

তবে বিভিন্ন পক্ষের সাথে কথা বলে জানা যাচ্ছে, রাশিয়া থেকে জ্বালানি কেনার ব্যাপারে সবচেয়ে বড় যে বাধা হবে তা হল কী উপায়ে এর মূল্য পরিশোধ করবে বাংলাদেশ। উল্লেখ্য বাংলাদেশ তার চাহিদার প্রায় পুরো তেলই মূলত আমদানি করে মধ্যপ্রাচ্যের তেলসমৃদ্ধ দেশগুলো থেকে। কিন্তু আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানির দাম অনেক বেড়ে যাওয়ার পর বাংলাদেশকে আমদানি কমাতে হয়েছে এবং এর কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদনে বড় ঘাটতি দেখা দিয়েছে। সে কারণেই এখন বিকল্প খুঁজতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী।

কিন্তু এখন যদি রাশিয়া থেকে জ্বালানি তেল কিনতে হয় এবং রাশিয়ার শর্ত অনুযায়ী রুবলেই লেনদেন করতে হয়, তাহলে ঠিক এই মুহূর্তেই সেটি করতে পারা কঠিন হবে বলে মনে করেন কেন্দ্রীয় ব্যাংক এবং ব্যাংকিং খাত সংশ্লিষ্ট মানুষেরা। বাংলাদেশ এই মুহূর্তে আমদানি পণ্যের মূল্য পরিশোধ এবং রপ্তানি আয় ঘরে তোলা দুই ক্ষেত্রেই লেনদেন হয় প্রধানত মার্কিন ডলারে। এর বাইরে পাউন্ড, ইউরো, চীনা ইউয়ান, এবং জাপানি ইয়েনেও লেনদেন হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বিবিসিকে বলেছেন, বাংলাদেশে রুবলের কোন রিজার্ভ নেই। কারণ বৈদেশিক লেনদেনে এখনো রুবল ব্যবহার করা হয় না। দুই দেশের মধ্যে হওয়া দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যিক লেনদেনের পরিমাণ একদিকে কম, অন্যদিকে সেটা ডলার কিংবা ইউরোতে শোধ করা হয়েছে এতদিন। এর বাইরে রুপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য দুই দেশের মধ্যে আর্থিক লেনদেনও রুবলে হয় না।

এই প্রকল্পের সবচেয়ে বড় এলসি খোলা হয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংকে। ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আতাউর রহমান প্রধান জানিয়েছেন, সেই ঋণপত্রও খোলা হয়েছে মার্কিন ডলার এবং ইউরোতে। এছাড়া রুবল এখনো কনভার্টেবল বা বিনিময়যোগ্য মুদ্রা হিসেবে জনপ্রিয় না হওয়ায় সেটি বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেন করে এমন ব্যাংকগুলো এখনো রাখে না।

এই মুহূর্তে আন্তর্জাতিক বাজারের দর অনুযায়ী প্রতি রুবলে এক টাকা ৫৭ পয়সা পাওয়া যাবে। যদি শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ রাশিয়া থেকে রুবলে জ্বালানি কেনার ব্যবস্থা করতে পারে, তাহলে মূল্য পরিশোধের জন্য তাকে কিছুটা ঝামেলায় পড়তে হবে। অর্থনীতিবিদ আহসান এইচ মনসুর বলছিলেন, "যেমন, রুবল যেহেতু কনভার্টেবল না, সে কারণে তৃতীয় কোন মুদ্রায় কনভার্ট করে তারপর মূল্য পরিশোধ করা যাবে। এক্ষেত্রে চীনের ইউয়ান একটি বিকল্প হতে পারে। আরেকটি বিকল্প হতে পারে, রাশিয়ার সাথে বৈদেশিক বাণিজ্যের একটি অংশ দ্বিপাক্ষিক বিনিময়ের মাধ্যমে পরিশোধ করা।"

তবে, এ সবই সম্ভাব্য ব্যবস্থা। কিন্তু বাস্তবে কার্যকর করতে হলে বাংলাদেশকে আলাদা ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। বিশ্লেষকেরা মনে করেন, তার একটি উপায় হতে পারে মূল্য পরিশোধে কারেন্সি সোয়াপ ব্যবস্থা মানে দ্বিপাক্ষিক মুদ্রা বিনিময় চুক্তি করা। বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক কাজ শুরু করেছে বলে নিশ্চিত করেছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র ইসলাম। তবে তিনি জানিয়েছেন, এ নিয়ে আলোচনা-পর্যালোচনা একেবারেই প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। সূত্র: বিবিসি বাংলা।



 

Show all comments
  • Badrul Alam ২৪ আগস্ট, ২০২২, ৫:৫৮ পিএম says : 0
    Bangla taka te proposal dile kemon hoi
    Total Reply(0) Reply
  • মুহাম্মদ রুমান ২৩ আগস্ট, ২০২২, ৯:০৯ এএম says : 0
    । এর বাইরে পাউন্ড, ইউরো, চীনা ইউয়ান, এবং জাপানি ইয়েনেও লেনদেন হয়। চিনা ইউয়ান দিয়ে রুবল কিনে নিলে হয় না,,,রুবল টা চিনের থেকে কিনে নিলে কেমন হয়
    Total Reply(1) Reply
  • jack ali ২৪ আগস্ট, ২০২২, ১২:০৯ পিএম says : 0
    50 বছর ধরে দেশ স্বাধীন হলো কিন্তু আমরা এখনো পরাধীন আমরা প্রকৃতির থেকে পেট্রোল জ্বালানি ব্যবস্থা করতে পারতাম যেমন বাতাসের মাধ্যমে সূর্যের আলোর মাধ্যমে এখন বাংলাদেশের কিছু ছিলে দেখলাম পলিথিন দিয়ে পেট্রোল ডিজেল অকটেন বানাচ্ছে কিন্তু এগুলো তো বানাবেন এদেশের সরকার যারা এসেছে এরা হচ্ছে হবুচন্দ্র রাজা গবুচন্দ্র মন্ত্রী এদের মাথার মধ্যে কিছু নয় শুধু আছে দেশের মানুষকে কিভাবে লুটেপুটে খাবে ক্ষমতায় থাকার জন্য মানুষকে হত্যা খুন গুম করবে এটাই হচ্ছে এদের আসল শাসন আর বিদেশ থেকে জিনিসপত্র কিনলে তো প্রচুর লাভ করা যায়
    Total Reply(0) Reply
  • Masud ২৩ আগস্ট, ২০২২, ১০:২৭ পিএম says : 0
    বাংলাদেশের রুবেল না থাকলে,আমার মনে হয় বানিজ্যভাবে আলোচনা করা উচিত।
    Total Reply(0) Reply
  • Omar faruk ২৫ আগস্ট, ২০২২, ৬:০৮ পিএম says : 0
    শেষ পর্যন্ত ভারতীয় রূপিই হবে দ্বিপাক্ষিক মূদ্রা। দাদা এটাই চায়।
    Total Reply(0) Reply
  • Md. Nasir ২৪ আগস্ট, ২০২২, ১২:৩১ পিএম says : 0
    ভারত থেকে কিনলে সস্তায় পাওয়া যাবে। আর সেটাই ভালো হবে।
    Total Reply(1) Reply
    • Md. hossain ২৮ আগস্ট, ২০২২, ৯:০৪ এএম says : 0
      হা.. হা... আপনি খুউউউব ভালা বলিয়াছেন........ এমনিতেই বাচিনা আবার দাদাদের টেনে আনেন

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বাংলাদেশ-রাশিয়া
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ