Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৮ জুন ২০২৪, ১৪ আষাঢ় ১৪৩১, ২১ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

বাংলাদেশ-রাশিয়া ঋণ চুক্তি কাল

প্রকাশের সময় : ২৫ জুলাই, ২০১৬, ১২:০০ এএম

রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের অর্থ নিশ্চিত
বিশেষ সংবাদদাতা : বহুল প্রত্যাশিত রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের অর্থ নিশ্চিত হচ্ছে চলতি সপ্তাহেই। এই পারমানবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণ বাবদ রাশিয়ার কাছ থেকে পাওয়া যাবে ১২ দশমিক ৬৫ বিলিয়ন ডলার বা এক লাখ এক হাজার ২০০ কোটি টাকা।
আগামীকাল মঙ্গলবার ২৬ জুলাই এই কেন্দ্রর ঋণ চুক্তি সই হবে। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ঋণ। যা এক বছরের বাজেটের তিনভাগের একভাগের সমান। গতকাল (রোববার) বিজ্ঞান মন্ত্রণালয় সূত্র একথা জানায়।
রাশিয়ার কাছ থেকে এই ঋণ নেয়া হচ্ছে। রূপপুরের পারমারবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রর ঋণ চুক্তি করতে গত বৃহষ্পতিবার বিজ্ঞানমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমানসহ বাংলাদেশের প্রতিনিধি দল রাশিয়া গেছেন। রাশিয়াতেই এই চুক্তি হবে।
এদিকে গত সপ্তাহে রাশিয়ান সরকারও এই ঋণ অনুমোদন দিয়েছে বলে সেখানের সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছে। এর আগে গত ২৭ জুন এই ঋণচুক্তির খসড়া অনুমোদন করে বাংলাদেশর মন্ত্রিসভা কমিটি। গত ২১ জুন বাংলাদেশ পারমাণবিক শক্তি নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনকে এ কেন্দ্র স্থাপনের জায়গার লাইসেন্স দেয়। উভয় দেশের অনুমোদন শেষ। এখন শুধু আনুষ্ঠানিক চুক্তির অপেক্ষা।
এক হাজার ২০০ মেগাওয়াটের দুইটি বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করা হবে। অর্থাৎ মোট দুই হাজার ৪০০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতার কেন্দ্র স্থাপন করা হবে। এতে নেয়া হচ্ছে ১২ দশমিক ৬৫ বিলিয়ন ডলার বা এক লাখ এক হাজার ২০০ কোটি টাকা। বিজ্ঞান মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, চুক্তি করতে বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমানের নেতৃত্বে রাশিয়া সফররত পাঁচ সদস্যের অন্য প্রতিনিধিরা হচ্ছেন-অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান, ইআরডি সচিব মেজবাহ উদ্দীন ও অতিরিক্ত সচিব আবুল মনসুর মো. ফায়জুল্লাহ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. আনোয়ার হোসেন।
রাশিয়ার কাছ থেকে ঋণ নেয়ার ১০ বছর পর সুদ শুরু হবে। ৩০ বছরের মধ্যে ঋণের সম্পূর্ণ টাকা পরিশোধ করতে হবে। মূল ঋণের প্রথম কিস্তি ২০২৭ সালের ১৫ মার্চ পাওয়া যাবে। প্রতি বছরের ১৫ মার্চ ও ১৫ সেপ্টেম্বর সমপরিমাণ কিস্তিতে বাংলাদেশ সরকারকে ঋণ শোধ করতে হবে। লাইবরের সাথে ১ দশমিক ৭৫ শতাংশ যোগ করে ঋণের সুদের হার নির্ধারিত হবে। তবে চুক্তির শর্ত মোতাবেক রাশিয়ার কাছ থেকে নেয়া ঋণের সুদের হার কোনভাবেই বছরে চার শতাংশের বেশি হতে পারবে না।
এরআগে এই পারমানবিক বিদ্যুকেন্দ্রর প্রাথমিক বিভিন্ন কাজ করার জন্য ৫০ কোটি ডলার ঋণ নেয়া হয়েছিল রাশিয়ার কাছ থেকে।
এই বিদ্যুকেন্দ্রর মেয়াদ ৫০ বছর। তবে ৯০ বছর একটানা একই হারে চলতে থাকবে। বাংলাদেশে পারমানবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রর প্রথম ইউনিট ২০২১ সালের মধ্যে চালু করা হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। কেন্দ্রটি পরিচালনা করবে ‘নিউক্লিয়ার পাওয়ার কোম্পানি বাংলাদেশ’।
বিদ্যুকেন্দ্রটির প্রথম পর্যায়ের কাজ ডিসেম্বরে শেষ হওয়ার কথা। এরপর পরমানু চুল্লি তৈরির কাজ শুরু হবে। এরইমধ্যে কেন্দ্রটির নকশা তৈরির কাজ শেষ করেছে এটমস্ট্রয় এক্সপার্ট।
নিরাপত্তার বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে এই কেন্দ্র করা হবে। এই পারমানবিক কেন্দ্র থেকে নিঃসরিত বর্জ্য রাশিয়া নিয়ে যাবে। চুক্তি অনুযায়ী বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির প্রথম ইউনিট ২০২৩ সালের অক্টোবরে উৎপাদনে আসার কথা রয়েছে। অন্যদিকে এর এক বছর পর দ্বিতীয় ইউনিট ২০২৪ অক্টোবরে উৎপাদনে আসবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বাংলাদেশ-রাশিয়া ঋণ চুক্তি কাল
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ