Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অভিযোগ দিলেও দস্যুদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে না প্রশাসন

দুইশ’ বছরের খেলার মাঠ জবরদখল

| প্রকাশের সময় : ৩ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) উপজেলা সংবাদদাতা : রূপগঞ্জে দু’শ বছরের পুরানো খেলার মাঠের অর্ধেক অংশ স্থানীয় ভূমিদস্যুরা অবৈধভাবে জবরদখল করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার গোলাকান্দাল দক্ষিণ পাড়া এলাকায় অবস্থিত এ মাঠ জবরদখলের কারণে এখন শিশু, কিশোর ও ছাত্রছাত্রীরা খেলাধুলা করতে পারছে না। স্থানীয় এলাকাবাসী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)সহ বিভিন্ন দপ্তরে ভূমিদস্যুদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিলেও জবরদখলকারী স্থাপনা উচ্ছেদ বা ভূমিদস্যুদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি। স্থানীয় এলাকাবাসী অভিযোগ করে জানান, গোলাকান্দাইল এলাকাটি একটি জনবহুল এলাকা। এখানে স্থানীয়দের পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ কর্মসংস্থানের জন্য বসবাস করে আসছেন। গোলাকান্দাইল মৌজার এসএ ২৮৪, আরএস ৩৪৩, এসএ ৯৬২, আরএস ১৭৬৮ দাগে ষোল আনায় ৯৭ শতাংশ, এসএ ১১৩৯, আরএস ২১১৯ দাগে ষোল আনায় ৯৮ শতাংশ, মোট ১৯৫ শতাংশ পতিত সম্পত্তির উপর একটি খেলার মাঠ রয়েছে। দু’শ বছর ধরে এখানে বসবাসরত ছাত্রছাত্রী, শিশু-কিশোরসহ বড়দের খেলাধুলা, বিয়ের অনুষ্ঠান, বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য গোলাকান্দাইল এলাকার এ মাঠটি ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এ খেলার মাঠ ছাড়া ওই এলাকায় বিকল্প খেলার মাঠও নেই। মাঠটি সরকারিভাবে তদারকি করা হয়ে থাকে বলে ইউনিয়ন ভূমি অফিস সূত্রে জানা গেছে। কাগজ পত্রে এ মাঠটি এককভাবে কোন ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর না। এটি সর্বসাধারণের সম্পত্তি। এ মাঠটি জবরদখলের পর থেকে ছাত্রছাত্রী, কিশোর-কিশোরীরা খেলাধুলা করতে পারছে না। এতে করে তাদের মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। যেখানে বাংলাদেশ সরকার শিশু-কিশোরদের মানসিক বিকাশের জন্য খেলাধুলাসহ বিভিন্ন প্রদক্ষেপ গ্রহণ করছে। এলাকাবাসীর জোড়ালো দাবি এ মাঠটি দখলমুক্ত হউক। অভিযোগ রয়েছে, গোলাকান্দাইল এলাকার ভূমিদস্যু নাসির উদ্দিন মোল্লা, সফিকুল ইসলাম মোল্লা, মোস্তফা খা, আবু সিদ্দিক, বাহারুম, মোবারক, আবু মিয়া, হাসান মিয়া, ইব্রাহিম, আওয়াল, মহি উদ্দিন, আলমগীর, সামসু, বাছেদ, আলী আহম্মেদ, ওমর আলী, মুন্নাফ, জব্বার মেম্বার, সেরাজুল, জাহাঙ্গীর মাঠের প্রায় অর্ধেক অংশ জবরদখল করে পাকা ও আধা পাকা স্থাপনা নির্মাণ করে ফেলেছে। বর্তমানে যেটুকু অংশ জবরদখলের বাকি আছে সেটুকু অংশও জবরদখলের চেষ্টা করছে। স্থানীয় এলাকাবাসী অভিযোগ আরো জানান, গোলাকান্দাইলসহ আশপাশের এলাকায় ছোট-বড় বিভিন্ন ধরনের শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠার সঙ্গে সঙ্গে এ এলাকায় জমির দাম বেড়ে যায়। পাশাপাশি জনসংখ্যাও বেশি। এ জন্য সরকারি জমিও ভূমিদস্যুদের কাছ থেকে রক্ষা পাচ্ছে না। খেলার মাঠটির পাশেই পানি উন্নয়ন বোর্ডের ক্যানেল রয়েছে। স্থানীয় ভূমিদস্যুরা ওই ক্যানেলটি জবরদখল করে ভরাট করে বিভিন্ন লোকজনের কাছে ভূয়া কাগজ বানিয়ে বিক্রি করে দিয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এলাকাবাসী প্রতিবাদ করতে গেলে ভূমিদস্যুরা হুমকি-ধমকি দেয়। এতে করে কেউ প্রতিবাদ করার সাহসটুকুও পায়না। এ বিষয়ে জবরদখলকারী সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুল জাব্বারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, মহিউদ্দিন সামসুল মেম্বার, ইব্রাহিমসহ অনেকেই মাঠের জমি জবরদখল করে পাকা স্থাপনা নির্মাণ করেছেন। তাই তিনিও একটু জমি দখল করে ওয়ার্কশপ দিয়েছেন। তবে জবরদখলের বিষয়টি তিনি স্বীকার করেছেন। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারহানা ইসলাম জানান, মাঠ দখলের বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ