Inqilab Logo

শুক্রবার, ০৫ জুলাই ২০২৪, ২১ আষাঢ় ১৪৩১, ২৮ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

ভারতের আনুকূল্যে সরকার টিকে আছে

মানববন্ধনে মির্জা ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২২ আগস্ট, ২০২২, ১২:০০ এএম

ভারত সরকারের আনুকূল্যে আওয়ামী লীগ সরকার টিকে আছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, যখন বাংলাদেশের মানুষ স্বাধীনতার যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছে এবং নিজেদেরকে স্বাধীন বলে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করে তখন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রী বলেন যে, ভারত সরকার সাহায্য করবেন শেখ হাসিনাকে টিকে রাখার জন্য। অর্থ্যাৎ তারা একথা বলতে চান যে, ভারত সরকারের আনুকূল্যে এই সরকার টিকে আছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রী কিন্তু তার জায়গা থেকে সরে আসেননি। তিনি তার বক্তব্য পুনরায় এনসিউর করেছেন। সুতরাং আমাদেরকে বুঝে নিতে হবে, যারা অন্যের আনুকূল্যে টিকে থাকে তাদের এই দেশ শাসন করবার অধিকার নেই, সরকারে থাকার কোনো অধিকার নেই।

গতকাল শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সংগঠন ‘ইউনির্ভাসিটি টিচার্স এসোসিয়েশনের (ইউট্যাব)’ এর উদ্যোগে দেশে বিদ্যুতের লোডশেডিং, জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি, ভোলায় পুলিশের গুলিতে ছাত্র দলের নুরে আলম ও স্বেচ্ছাসেবক দলের আব্দুর রহিম হত্যার প্রতিবাদ ও বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে আয়োজিত মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ যতবার ক্ষমতায় এসেছে ততবারই তারা বর্গীর ভূমিকা পালন করেছে। তারা আমাদের সম্পদকে লুট করে নিয়েছে। বিরোধী নেতা-কর্মীদের গুম করে নেয়ার ঘটনাসমূহের বিষয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনারের বিবৃতি প্রদানে সরকারের ‘মাথা খারাপ’ হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

গোয়েন্দারা সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করছে অভিযোগ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টে করার মাধ্যমে কারো কোনো লেখার সাহস থাকবে না। সরকারকে সেন্সর করতে হয় না। প্রত্যেকটা মিডিয়া হাউজে একজন করে দায়িত্বপ্রাপ্ত গোয়েন্দা আছে, যে গোয়েন্দা টেলিফোন করে বলে, নিউজটা এরকম গেলো কেনো? টেক শোতে কে আসবে না আসবে সব কিছু তারা নির্ধারণ করে দেয়। এদেশ কি আপনারা বলবেন স্বাধীন দেশ? এখানে সব কিছু নিয়ন্ত্রণ করছে এই অবৈধ সরকারের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। এটা কোনো দিন গণতান্ত্রিক দেশ হতে পারে না। এই আওয়ামী লীগকে এজন্য কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে। তাদেরকে জবাবদিহিত করতে হবে যে বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার জন্য।

এখন আর কোনো নির্বাচন নয়, আন্দোলনই একমাত্র পথ বলে মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল বলেন, সবকিছুর সংকটের মূলে আওয়ামী লীগ। তারা জোর করে বিনা ভোটে নির্বাচিত না হয়ে রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে ক্ষমতা দখল করে বসে আছে। এখন আমাদের পবিত্র দায়িত্ব আন্দোলন, আন্দোলন, আন্দোলন। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে রাজপথে নেমে ফ্যাসিস্ট সরকারকে সরিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এখন আর কোনো নির্বাচনের কথা নয়, এখন আর কোনো ঘুম পাড়ানির কথা নয়। এখন একটা মাত্র দাবি যে, এই সরকার কবে যাবে, এই সরকার কবে যাবে?।

সরকারের উদ্দেশ্যে মির্জা ফখরুল বলেন, সবার আগে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ আমাদের ৩৫ লাখ নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে যে মিথ্যা মামলা আছে সেই মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। সরকারকে অবিলম্বে পদত্যাগ করে তাদেরকে নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে, সংসদ বিলুপ্ত করতে হবে এবং নতুন নির্বাচন কমিশনের মধ্য দিয়ে একটি জনগণের প্রতিনিধিত্বশীল পার্লামেন্ট ও জনগণের সরকার গঠন করতে হবে।

সরকার পরিবর্তনের আন্দোলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সংগঠিত হওয়ার আহবান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, সমস্ত বুদ্ধিজীবী, সচেতন মানুষকে আপনারা জাগ্রত করবেন এবং তরুন যুবক শ্রেনীকে জাগ্রত করবেন যারা এই লড়াইয়ে অংশ নেবে এবং জয়ী হবে।

ইউট্যাবের সভাপতি প্রফেসর ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও মহাসচিব প্রফেসর ড. মোর্শেদ হাসান খানের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. লুৎফর রহমান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর কামরুল আহসান, প্রফেসর নুরুল ইসলাম, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর গোলাম হাফিজ কেনেডী, প্রফেসর আবুল হাশেম, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মাসুদুল হাসান মুক্তা, প্রফেসর মামুনুর রশীদ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শের মাহমুদ, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক সৈকত, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর মোহাম্মদ শামীম, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জাহাঙ্গীর সরকার, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর মামুন উর রশীদ, ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের রিয়াজুল ইসলাম রিজু, ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের পারভেজ রেজা কাকন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের কাদের গনি চৌধুরী, জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের মাহবুব আলম প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।###



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মির্জা ফখরুল


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ