Inqilab Logo

মঙ্গলবার ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ২০ কার্তিক ১৪৩১, ০২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ক্ষতিপূরণের হাজার হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় হবে

সুপ্রিম কোর্টের রায় প্রকাশ অর্পিত সম্পত্তির ওপর গড়ে ওঠা প্রতিষ্ঠানে যুক্ত করতে হবে মূল মালিকের নাম

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২১ আগস্ট, ২০২২, ১২:০০ এএম

অর্পিত সম্পত্তির ওপর গড়ে ওঠা প্রতিষ্ঠানের নামকরণে মূল মালিককে অন্তর্ভুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট। প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বে আপিল বিভাগের চার বিচারপতির বেঞ্চ এ রায় দেন। চলতি বছর ২ জুন দেয়া এ সংক্রান্ত পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়েছে। প্রকাশিত ৩৪ পৃষ্ঠার এ রায়ের কথা গতকাল শনিবার ইনকিলাবকে জানান, ভূমি মন্ত্রণালয়ের পক্ষের আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। তিনি বলেন, এ রায়ের ফলে অর্পিত সম্পত্তির ক্ষতিপূরণ বাবদ সরকারের হাজার হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় হবে।

তিনি জানান, ২০১৭ সালের ২৩ নভেম্বর অর্পিত সম্পত্তি আইন চালেঞ্জ করে সাবেক সরকারি কর্মমর্তা আবদুল হাই জনস্বার্থে একটি রিট করেন। প্রাথমিক শুনানি শেষে হাইকোর্ট রুল জারি করেন। রুলের শুনানি শেষে হাইকোর্ট এই মর্মে নির্দেশনা দেন যে, ভবিষ্যতে আর কোনো সম্পত্তি অর্পিত সম্পত্তির তালিকাভুক্ত করা যাবে না। প্রত্যেক জেলায় সম্পত্তি অর্পিত বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য ট্রাইব্যুনাল গঠন করা, প্রতি জেলায় আপিল ট্রাইব্যুনাল স্থাপন করা, ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক নির্দিষ্ট সময় মামলা নিষ্পত্তি করা, মামলা ফাইলের ক্ষেত্রে তামাদি আইন প্রয়োগ করা, ট্রাইব্যুনাল বা আপিল ট্রাইব্যুনালের রায় নির্দিষ্ট সময় বাস্তবায়ন করা, সরকারের দখলে থাকা দাবিহীন অর্পিত সম্পত্তি মানুষের উন্নয়নে ব্যবহার করা, প্রয়োজনীয়‘০.৬’ আইন করে যে সম্পত্তিতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে সেগুলোর নামকরণে মূল মালিককে অন্তর্ভুক্ত করা, যেসব অর্পিত সম্পত্তি অপ্রত্যাপনযোগ্য সেইক্ষেত্রে মালিককে আইন করে ক্ষতিপূরণ প্রদান।

হাইকোর্টের এ নির্দেশনার বিরুদ্ধে আপিল করে ভূমি মন্ত্রণালয়। শুনানি শেষে উপরোক্ত রায় দেন সুপ্রিম কোর্ট। সুপ্রিম কোর্টের অন্য বিচারপতিগণ হলেন, বিচারপতি মো. নূরুজ্জামান, বিচারপতি বোরহানউদ্দিন এবং বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম।

সুপ্রিম কোর্ট তার রায়ে বলেন, ২০০১ সালে অর্পিত সম্পত্তি নিযে প্রণীত আইনে ট্রাইব্যুনাল গঠন, নির্দিষ্ট সময় মামলা নিষ্পত্তি, তামাদি আইন প্রয়োগ, ডিক্রি বাস্তবায়ন, আপিল ট্রাইব্যুনাল গঠন, অর্পিত সম্পত্তি উন্নয়নমূলক কাজে ব্যবহার সংক্রান্ত বিধানগুলো রয়েছে। রায়ে বলা হয়, আদালত কোনো আইন করার বিষয় ম্যানডামাস ইস্যু করতে পারে না, সরকারের নিকট ন্যাস্ত সম্পত্তির বিষয় সরকারের ওপর আইন করার কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। আদালত রায়ে আরও বলেন, ভবিষ্যতে আর কোনো সম্পত্তি অর্পিত সম্পত্তির তালিকাভুক্ত না করার বিষয়ে নির্দেশনা নিরর্থক। কারণ আপিল বিভাগ ইতিপূর্বে দেয়া রায়কে ১৯৭৪ সালের ২৩ মার্চের পরে অর্পিত সম্পত্তির তালিকাভুক্তি বেআইনি ঘোষণা করেছেন। আপিল বিভাগ ওই পর্যবেক্ষণ দিয়ে হাইকোর্টের মতামত ও নির্দেশনা বাতিলপূর্বক আপিল নিষ্পত্তি করে রায় দেন।

অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ বলেন, এ রায়ের মাধ্যমে সরকারের হাজার হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় হবে। যদি মূল মালিকদের ক্ষতিপূরণ দিতে হতো তাহলে হাজার হাজার একর অর্পিত সম্পত্তি যা সরকারের দখলে আছে সে সব সম্পত্তির মূল্য বাবদ হাজার হাজার কোটি টাকা অর্থ পরিশোধ করতে হতো।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ