রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
মোঃ গোলাম ফারুক, দুপচাঁচিয়া (বগুড়া) থেকে : দুপচাঁচিয়া উপজেলা সদরে বগুড়া-নওগাঁ সড়কের পাশে অবস্থিত দুপচাঁচিয়া সরকারি ৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালটি অন্তহীন সম্যসায় জর্জরিত। হাসপাতালের এক্স-রে মেশিন, পানির পাম্প ও বৈদ্যুতিক জেনারেটর বিকল, ইসিজি মেশিন বরাদ্দ পেলেও টেকশিয়ান না থাকার কারণে এবং প্রয়োজনীয় ডাক্তার নার্সের পদ শূন্য থাকায় রোগীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সরেজমিন হাসপাতালে গিয়ে তথ্য অনুসন্ধানে জানা গেছে, বগুড়া-নওগাঁ মহাসড়ক সংলগ্ন দুপচাঁচিয়া সিও অফিস বাসস্ট্যান্ডের পাশে ৫০ শয্যাবিশিষ্ট সরকারি এই হাসপাতালে বিগত কয়েক বছর অবকাঠামোগত বেশ কিছু উন্নয়ন হয়েছে। ২০০৮ সালে ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় প্রশাসনিক অনুমোদন পেলেও প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ না পাওয়ায় হাসপাতালটির চিকিৎসা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। সেই সাথে প্রয়োজনীয় রক্ষণাবেক্ষণ ও যথাসময়ে যান্ত্রিক ত্রুটি মেরামত না করায় হাসপাতালের এক্স-রে মেশিন, পানির পাম্প ও জেনারেটর বিকল হয়ে পড়ে রয়েছে। মুমূর্ষু রোগীর প্রাণ বাঁচাতে অক্সিজেন সিলিন্ডার থাকলেও তা প্রায় সময় থাকে শূন্য। সম্প্রতি গুরুত্বপূর্ণ ইসিজি মেশিন বরাদ্দ হলেও টেকনিশিয়ানের অভাবে তাও অচল। এসব কারণে চিকিৎসার জন্য আসা রোগীদেরকে পোহাতে হয় চরম ভোগান্তি। তাছাড়া হাসপাতালে মঞ্জুরিপ্রাপ্ত ২২ জন ডাক্তারের পদ থাকলেও কর্মরত রয়েছেন ১২ জন। দীর্ঘদিন যাবৎ ডাক্তারদের ১০টি পদ শূন্য রয়েছে। ডাক্তার কনসালটেন্ট ৯টি পদ থাকলেও কর্মরত রয়েছে ৩ জন। গুরুত্বপূর্ণ ডাক্তার কনসালটেন্টের ৬টি পদই শূন্য। একই ক্ষেত্র চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীর ক্ষেত্রেও। হাসপাতালে চতুর্থ শ্রেণির মঞ্জুরীকৃত ২৩টি পদের স্থলে কর্মরত রয়েছে ১১ জন। ১২টি পদই শূন্য। অন্যান্য পদের পাশাপাশি হাসপাতাল পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নের জন্য ৫ জন সুইপারের স্থলে কর্মরত রয়েছে মাত্র ২ জন। ৫০ শয্যাবিশিষ্ট এ হাসপাতালটি দুজন সুইপারের পক্ষে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা দুঃসাধ্য। ফলে অধিকাংশ সময় হাসপাতালটিতে নোংরা পরিবেশ বিরাজ করে। হাসপাতালের রান্নার কাজে বার্বুচি ও সহকারী বাবুর্চির ২টি পদ থাকলেও তাও শূন্য। এ ক্ষেত্রে মালির সাহায্যে বাবুর্চির কাজ চলছে। সম্প্রতি পানির পাম্পটি নষ্ট হওয়ায় ৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালটি পানিশূন্য অবস্থা বিরাজ করছে। এ ক্ষেত্রে রোগীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এ ছাড়াও হাসপাতালের মাঠ পর্যায়ে স্বাস্থ্য সহকারী মঞ্জুরিকৃত ৩০টি পদের মধ্যে ৭ জন প্রশিক্ষণে রয়েছে, শূন্য রয়েছে ৭ জন। ফলে বর্তমানে কর্মরত রয়েছে ১৬ জন ও সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শকের ৬টি পদের স্থলে কর্মরত রয়েছে ১ জন। ৫টি পদই শূন্য। ফলে মাঠ পর্যায়েও স্বাস্থ্যসেবার মারাত্মক বিঘœ ঘটছে। এ ব্যাপারে গত ২৬ নভেম্বর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার আবদুল ওয়াদুদ-এর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি দৈনিক ইনকিলাব-কে জানান, তিনি অত্র হাসপাতালে উল্লিখিত সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য একাধিকবার বগুড়া জেলা সিভিল সার্জন মহোদয়সহ তার মাধ্যমে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে অবগত করেছেন। কিন্তু তার কোনো সমাধান হয়নি। বিকল এক্স-রে মেশিন, পানির পাম্প ও বৈদ্যুতিক জেনারেটরটি মেরামতের জন্য কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে অবগত করেছেন। হাসপাতালে জনবল সংকটের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, মাঠ পর্যায়ে স্বাস্থ্য সহকারী ও সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শকের পদ শূন্য থাকায় মাঠ পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবার চরম বিঘœ ঘটছে। স্বাস্থ্য সহকারী ও সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হলেও অজ্ঞাত কারণে তা মাঝপথে স্থগিত হওয়ায় এ অবস্থা বিরাজ করছে। এদিকে এলাকার সচেতন মহল মনে করেন হাসপাতালে গুরুত্বপূর্ণ সমস্যাগুলো দ্রুত সমাধান না করলে সরকারের গৃহীত ‘সবার জন্য স্বাস্থ্য’ চিকিৎসা কর্মসূচির মারাত্মক বিঘœ ঘটবে। এ ব্যাপারে তারা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।