Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৮ জুন ২০২৪, ১৪ আষাঢ় ১৪৩১, ২১ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

জাপোরোজিয়ে প্ল্যান্ট দিয়ে ব্ল্যাকমেইল করছে কিয়েভ

ভারী কামান দিয়ে হামলা ইউক্রেনীয় সেনার

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৯ আগস্ট, ২০২২, ১২:০৫ এএম

নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকের আহবান যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের :; রাশিয়া থেকে তেল আমদানি করবে মিয়ানমার
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের ইউক্রেন সফরের সময় জাপোরোজিয়ে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে গুরুতর উস্কানি দেয়ার জন্য কিয়েভ সরকারের প্রস্তুতি নিচ্ছে। একে পারমাণবিক বø্যাকমেইল বলা যায়। রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা বৃহস্পতিবার একটি লাইভ টিভি সম্প্রচারের সময় বলেছেন। এদিকে, ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনী জাপোরোজিয়ে অঞ্চলের এনারগোদার শহরে ব্যাপক গুলি চালিয়েছে, শহরের সামরিক-বেসামরিক প্রশাসন জানিয়েছে।

জাখারোভা জোর দিয়ে বলেন, ‘এটি কেবল একটি উস্কানি নয়, এটিকে আমরা পারমাণবিক বø্যাকমেইল হিসাবে নিন্দা করেছি। এবং এটি একটি পারমাণবিক স্থাপনাকে ঘিরে দীর্ঘস্থায়ী উস্কানি ছাড়া আর কী, পারমাণবিক শক্তির জন্য সরাসরি হুমকি। এটি অবশ্যই পারমাণবিক বø্যাকমেইলের একটি কাজ।’ তিনি উল্লেখ করেছেন যে, এইভাবে ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষ শুধু একটি দেশ বা একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক সত্তাকে নয়, সমগ্র ইউরোপ মহাদেশকে বø্যাকমেইল করছে। ‘আমরা পারমাণবিক শক্তির কথা বলছি, পুরো ইউরোপ মহাদেশকে জিম্মি করা হচ্ছে কারণ এটি সবই ইউরোপের কেন্দ্রস্থলে,’ তিনি যোগ করেছেন। ‘আজ, বিজ্ঞান ইতিমধ্যে আমাদের দেখিয়েছে যে মানবসৃষ্ট বিপর্যয়ের পরিণতি, এবং পারমাণবিক স্থাপনায় বিভিন্ন ট্র্যাজেডির কোন সীমানা নেই, তাদের শুধুমাত্র সময় সীমা আছে। শুধুমাত্র সময় এই পরিণতির বিস্তারকে সীমিত করতে পারে,’ ক‚টনীতিক উপসংহারে বলেছিলেন।

এদিকে, ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনীর হামলার বিষয়ে জাপোরোজিয়ে প্রশাসনের টেলিগ্রাম চ্যানেলে প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘কিয়েভ সরকারের সশস্ত্র সংগঠনগুলো এনারগোদার শহরে ব্যাপক গুলি চালিয়েছে।’ বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরে যেতে বলা হচ্ছে। হতাহত এবং অবকাঠামোর ক্ষয়ক্ষতির তথ্য নির্দিষ্ট করা হচ্ছে। জাপোরোজিয়ে অঞ্চলের সামরিক-বেসামরিক প্রশাসনের প্রধান কাউন্সিলের সদস্য ভøাদিমির রোগভ জানিয়েছেন যে, বুধবার ভারী কামান ব্যবহার করে ইউক্রেনীয় সেনাদের দ্বারা শহরে এটি দ্বিতীয় আক্রমণ। তার মতে, এর আগে ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনী এনারগোদারের অপর অংশে গোলাবর্ষণ করেছিল যেখানে জাপোরোজিয়ে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র (এনপিপি) অবস্থিত। কর্মকর্তা সংবাদদাতাকে বলেছেন যে, কমপক্ষে ছয়টি শেল এনপিপি প্রাঙ্গণের আশেপাশে বিস্ফোরিত হয়েছে।

গত কয়েকদিন ধরে, ইউক্রেনীয় বাহিনী ড্রোন, ভারী কামান এবং মাল্টিপল-লঞ্চ রকেট সিস্টেম ব্যবহার করে এনারগোদারে জাপোরোজি এনপিপি প্রাঙ্গনে বেশ কয়েকটি হামলা চালিয়েছে। বেশিরভাগ হামলাই বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার দ্বারা প্রতিহত করা হয়েছে, তবে, কিছু গোলা কয়েকটি অবকাঠামো সুবিধা এবং পারমাণবিক বর্জ্য সংরক্ষণের সুবিধার আশেপাশে আঘাত করে।

নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকের আহŸান যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের : মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং কিছু ইউরোপীয় দেশ ২৪ আগস্ট ইউক্রেনের পরিস্থিতি নিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকের জন্য অনুরোধ করেছে, জাতিসংঘের একটি সূত্র বুধবার তাসকে জানিয়েছে। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রেসিডেন্টের কাছে এ সংক্রান্ত একটি অনুরোধ পাঠানো হয়েছে বলে সূত্রটি জানিয়েছে। অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে, বৈঠকে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের ইউক্রেন সফরের ফলাফল নিয়ে আলোচনা হবে বলে আশা করা হচ্ছে। আন্তোনিও গুতেরেস ইউক্রেনের লভোভ পৌঁছেছেন, যেখানে তিনি গতকাল ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এবং তুর্কি নেতা রজব তাইয়্যেপ এরদোগানের সাথে দেখা করেন, মহাসচিবের কার্যালয় তাস কে জানিয়েছে।

রাশিয়া থেকে তেল আমদানি করবে মিয়ানমার : সরবরাহ ঘাটতি ও ক্রমবর্ধমান মূল্যবৃদ্ধি ঠেকাতে রাশিয়া থেকে পেট্রোল এবং জ্বালানি তেল আমদানির পরিকল্পনা করছে মিয়ানমার। বৈশ্বিক তীব্র জ্বালানি সংকটের মাঝে অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের মতো মিয়ানমার এই পরিকল্পনা করছে বলে জান্তা সরকারের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন। বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র জ্য মিন তুন বলেছেন, আমরা রাশিয়ার কাছ থেকে পেট্রোল আমদানির অনুমতি পেয়েছি। রাশিয়ার পেট্রোলের গুণগত মান এবং তুলনামূলক কম দামের কারণে মিয়ানমার আমদানির এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। স্থানীয় গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, আগামী সেপ্টেম্বর থেকে রাশিয়ার জ্বালানি তেলের সরবরাহ মিয়ানমারে পৌঁছাতে শুরু করবে। মিয়ানমার এখন সিঙ্গাপুরের মাধ্যমে জ্বালানি আমদানি করছে।

গত বছরের ফেব্রæয়ারিতে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সামরিক বাহিনীর ক্ষমতা দখলের পর থেকে পশ্চিমা দেশগুলোর বিভিন্ন ধরনের নিষেধাজ্ঞার কবলে রয়েছে মিয়ানমার। অন্যদিকে চলতি বছরের ফেব্রæয়ারিতে ইউক্রেনে বিশেষ সামরিক অভিযান পরিচালনার দায়ে রাশিয়ার বিরুদ্ধেও পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তবে পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞার কবলে থাকা উভয় দেশের মাঝে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। এছাড়াও মিয়ানমার সামরিক বাহিনীর কাছে অস্ত্রের অন্যতম প্রধান সরবরাহকারী হচ্ছে রাশিয়া। সূত্র : তাস, রয়টার্স, বিবিসি নিউজ, এপি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রাশিয়া


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ