Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ভবানীপুরে ভূমিহীনদের উচ্ছেদ ও সরকারি সম্পত্তি হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ

মন্দির পরিচালনা কমিটির বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন

বগুড়া ব্যুরো : | প্রকাশের সময় : ১৫ আগস্ট, ২০২২, ১২:০০ এএম

মিথ্যা মামলায় পুলিশ দিয়ে হয়রানীর অভিযোগে বগুড়ার শেরপুর উপজেলার ভবানীপুর মন্দির পরিচালনা কমিটির বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছেন বগুড়ার শেরপুরের ভবানীপুর কৃষক, শ্রমিক ও ভূমিহীন বসতবাড়ি রক্ষা ঐক্য পরিষদ।

গতকাল রোববার দুপুরে বগুড়া প্রেসক্লাবে এ সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেন, ধর্মকে হাতিয়ার করে বগুড়ার কতিপয় মামলাবাজ ব্যক্তি বগুড়ার শেরপুর উপজেলার ভবানীপুর গ্রামের প্রায় ৩শ’ হিন্দু-মুসলিম দরিদ্র ভূমিহীন পরিবারের বসতবাড়ি দখলের পাঁয়তারা করছে।
১নং খাস খতিয়ানের এসব সম্পত্তি ব্রিটিশ আমল থেকেই সম্পূর্ণরূপে সরকারি খাস সম্পত্তি। সিএস ও এসএ খতিয়ানেও সরকারি ১নং খাস খতিয়ান হিসাবে রেকর্ডভুক্ত আছে। মন্দির পরিচালনা কমিটি এসব সম্পত্তি কিভাবে দেবোত্তর সম্পত্তি হিসাবে দাবি করেন তা মোটেও বোধগম্য নয়।
সংবাদ সম্মেলনে বসতবাড়ি রক্ষা ঐক্য পরিষদের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের আহ্বায়ক কেএমএ হান্নান। তিনি বলেন, আমাদের গ্রামের প্রায় অর্ধেক হিন্দু ধর্মাবলম্বী। আমাদের ভেতরে ভাতৃত্বের যে বন্ধন আছে তাতে ধর্ম কখনোই দেয়াল হয়ে দাঁড়ায় নি। বরং পরস্পরের সকল উৎসব আমরা মিলেমিশে উদযাপন করে থাকি। তিনি বলেন, মন্দিরের সম্পত্তি বেদখল করার অভিযোগে অভিযুক্ত করে মন্দির কমিটি বিভিন্ন সময়ে আমাদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দিয়েছে। যেসব মামলায় আমাদের অনেক নীরিহ মানুষ জেল খেটেছেন। অনেকের বাড়িঘর মেরামত করতে কিংবা গাছের ডালপালা পর্যন্ত কাটতে দেয়া হচ্ছে না। কোন কিছু হতে না হতেই পুলিশ পাঠিয়ে নানাভাবে হয়রানী করা হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ১৯৫০ সালের প্রজাস্বত্ব আইনে জমিদারী অধিগ্রহণের মাধ্যমে ভবানীপুর মৌজার ১নং খাস খতিয়ানের সম্পত্তির এসএ রেকর্ড প্রস্তুত হয়েছে। যার গেজেট নোটিফিকেশন নং ৪৮২৪ এলআর ও ৪৮৩৯ এলআর, তারিখ ০২ এপ্রিল ১৯৫৬ইং।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, তৎকালীন রাজশাহী জেলার রেভিনিউ অফিসার বরাবর ৬০/১৯৫৪ নম্বর একটি মিস কেস এর মাধ্যমে ভবানীপুর মৌজার প্রায় ৪৬ একর সম্পত্তি দেবোত্তর সম্পত্তি বলে দাবি করা হলেও এসব খাস সম্পত্তি দেবোত্তর সম্পত্তি নয় মর্মে রাজস্ব অফিসার ঘোষণা করেন। তবে কিছু দাগে মন্দির আছে এই বিবেচনায় প্রায় ১৭ একর সম্পত্তি ‘সেবায়েত-এর নামে বরাদ্দ দেয়ার জন্য মতামত প্রকাশ করলেও রেভিনিউ অফিসারের সেই মতামতও ছিল অস্পষ্ট। উক্ত খাস সম্পত্তিটি কত বছর মেয়াদে বরাদ্দ দেয়া হবে তার কোন উল্লেখ ছিল না। অথচ, সরকারি খাস সম্পত্তি বরাদ্দের ক্ষেত্রে একটি নির্দ্দিষ্ট সময়সীমার উল্লেখ থাকে।
সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়, মহামান্য রাষ্ট্রপতির ১৯৭২ সালের ৯০ নম্বর আদেশের ২ ধারার আদেশে স্পষ্ট বলা হয়েছে, প্রজাস্বত্ব আইনের অধীনে অধিগ্রহণকে চ্যালেঞ্জ করা যাবে না।
সংবাদ সম্মেলনে, সরেজমিন তদন্ত করে প্রকৃত সত্য তুলে ধরার জোর দাবি করে বলা হয়, জমিদারী অধিগ্রহণেরও বহুবছর পূর্ব থেকে এসব সম্পত্তির উপর স্থানীয় হিন্দু-মুসলিম ভুমিহীন ও দরিদ্র জনগোষ্ঠী কোনরকমে মাথা গোঁজার ঠাঁই হিসাবে এসব জায়গায় বসবাস করে আসছে। ১৯৮৪ সালের ভূমি সংস্কার অধ্যাদেশ এর বিধান অনুসারে কোনো বাস্তুকে তার বসতবাড়ি থেকে উচ্ছেদ করা যাবেনা মর্মে উল্লেখ আছে। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মো. নুরুজ্জামান, শ্রী অবিনাশ চন্দ্র রায়, আমজাদ হোসেন, অনিল কুমার মোহন্ত, দুলাল চন্দ্র সাহা, মজিবুর বিশ্বাস, মাসুদ রানা রিপন প্রমুখ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ