বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈলে আর এইচ মেমোরিয়াল স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষকের বিরুদ্ধে একাধিক ছাত্রীকে শ্লীলতাহানি করার অভিযোগ উঠেছে। স্কুল পরিচালনা কমিটি লম্পট শিক্ষকের বিচার না করায় ওই বিদ্যালয়ের দুই শিক্ষক ন্যাক্কারজনক ঘটনার প্রতিবাদ করায় ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তিন শিক্ষককে চাকরী থেকে অপসারণের অভিযোগ উঠেছে বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের বিরুদ্ধে।
এদিকে ছাত্রীর শ্লীলতাহানিকে কেন্দ্র করে অপসারণ হওয়া তিনজন সহকারী শিক্ষক এর প্রতিকার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও)বরাবরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তারা হচ্ছেন সহকারী শিক্ষক কাউসার হাবীব,রাজিউর রহমান ও হারুন অর রশিদ্।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, আর এইচ মেমোরিয়াল স্কুল এন্ড কলেজের সহকারী শিক্ষক পংকজ সিংহ ও ফরিদউজ্জামান বিদ্যালয়ের অনেক ছাত্রীর গায়ে হাত,কুপ্রস্তাব,বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গি এমনকি একজন ছাত্রীর সাথে কৌশলে শারীরিক মেলা মেশা প্রযন্ত করেছেন । এসব বিষয় নিয়ে বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ ও পরিচালনা পরিষদের সদস্যদের অবহিত করলেও কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। এমন ঘটনার প্রেক্ষিতে ওই স্কুলের তিনজন শিক্ষক অভিযুক্ত দুই শিক্ষকের মধ্যে ফরিদ উজ জামানকে ডেকে নিয়ে বিদ্যালয়ের একটি রুমে একান্ত কথা বলছিলেন। এসময় হঠাৎ করেই সেখানে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সদস্যরা উপস্থিত হয়ে পড়েন। এ সময় ফরিউজ্জামান আচমকা সহকারী শিক্ষক কাউসার হাবীবকে একটি লাথি মারেন। এসময় কাউসারও প্রতিবাদ করেন। অভিযোগে উল্লেখ্য করা হয়। ঘটনাগুলোর সুষ্ঠ তদন্ত না করেই হঠাৎ করেই তাদের তিনজন শিক্ষককে নাটকিও ভাবে অব্যাহিত দেওয়া হয়েছে।
গতকাল শনিবার ওই বিদ্যালয়ে সরেজমিনে গিয়ে কথা হয় প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ হামিদুর রহমানের সাথে, এ সময় তিনি বলেন, কোন ছাত্রী শিক্ষক কর্তৃক শ্লীলতাহানি হয়েছে এমন কোন প্রমাণ আমরা পায়নি। তবে শিক্ষকদ্বয় তাদের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণেই সংঘাতে জড়িয়ে ছিলেন। এ জন্য তাদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছিল সন্তোষজনক জবাব না পাওয়ায় বিদ্যালয়টির চেয়ারম্যান তাদের অব্যাহতি দিয়েছেন। পরিচালনা পরিষদের অন্যতম সদস্য খোরশেদ আলম বলেন, কোন ছাত্রীর শ্লীলতাহানি হয়নি। বরং প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি নষ্ট করার চেষ্টা চলছে।
অব্যাহিত পাওয়া তিন শিক্ষক কাউসার হাবীব,রাজিউর রহমান,হারুন অর রশিদ বলেন, আমরা গত রোববারে ইউএনও বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। তারা বলেন, প্রায় ক্লাশের ছাত্রীরা তাদের সাথে ফরিদউজ্জামানের নোংরামির কথা তাদের জানাতো। তারা সেগুলো বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জানাতো। অজ্ঞাত কারণে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিতো না। বাধ্য হয়ে ফরিউদজ্জামানকে একান্ত ডেকে নিয়ে কথা বলা হয়েছে। কোন সংঘাত করা হয়নি। শিক্ষককে একান্তে ডেকে নিয়ে কথা বলাটাই তাদের অপরাধ এ কারণেই তাদের অব্যাহিত দেওয়া হয়েছে বলে তারা মনে করছেন। তবে তারা ওই বিদ্যালয়ে ছাত্রী শ্লীলতাহানি বন্ধে প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেন।
অপর দিকে শ্লীলতাহানির শিকার দুজন ছাত্রীর বক্তব্য রয়েছে,সেখানে তারা বলেছেন, ফরিউদজ্জামান স্যার তাদের ২৬ মার্চে বলেন, তোমরা সাতজন আছো কে আমার রুম পাটনার হবা। আরেক ছাত্রী বলেন, ফরিউজ্জামান স্যার মাঝেই মাঝেই অংক ক্লাশ নেওয়ার সময় বেঞ্চের কাছে এসে তার পা দিয়ে ওই ছাত্রীর পা চেপে ধরতো। যখন তখন সুয়োগ পাইলে অশ্লীল কথা বলতো। বিভিন্ন কুপ্রস্তাব দিতো। এ কারণে ওই ছাত্রী ঠিক মতো বিদ্যালয়ে যেতে চাইতো না। কিন্তু পারিবারিক চাপে যেতে হতো। ওই ছাত্রী বলেন, স্যারের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করলে অনেকে বিশ্বাস নাও করতে পারে। উল্টো সে আরো বিপদে পরতে পারে এ কারণেই সে এতদিন কাউকে জানায়নি।
এ সব অভিযোগ বিষয়ে কথা বলতে বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের চেয়ারম্যান তনুজা আক্তারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোহেল সুলতান জুলকার নাইন কবির গতকাল শনিবার মুঠোফোনে বলেন,একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।