Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ছেলেকে খুন করলেন মা

শাসন করতে গিয়ে

চট্টগ্রাম ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ১১ আগস্ট, ২০২২, ১২:০০ এএম

শাসন করতে গিয়ে ছেলেকে পিটিয়েই মারলেন মা। সে খুনের দায় আড়াল করতে ছেলের লাশ ঝুলিয়ে আত্মহত্যা বলে প্রচারও করেন তিনি। তবে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে কিশোর পুত্র মো. হাসানকে (১৪) হত্যার দায় স্বীকার করেন মা কুলসুম বেগম। আলোচিত এ খুনের ঘটনায় মা কুলসুম ও মামা ফারুক ইসলামকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সন্তানকে খুনের দায়ে মামলা করেছেন পিতা মো. বেলাল হোসেন। গত সোমবার রাতে নগরীর আকবরশাহ থানার বিশ্বকলোনীর একটি বাসায় নিমর্ম এ খুনের ঘটনা ঘটে। সন্তান হত্যার দায় স্বীকার করে কুলসুম বেগমের আদালতে দেয়া জবানবন্দির বরাত দিয়ে থানার ওসি মো. ওয়ালী উদ্দিন আকবর ইনকিলাবকে বলেন, চুরির অভিযোগ পেয়ে প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ হন মা কুলসুম বেগম। শাসন করতে গিয়ে বেদম প্রহার করেন ছেলে হাসানকে। একপর্যায়ে ধাক্কা দিয়ে খাটের উপর ফেলে দেন। এ সময় খাটের লোহার স্ট্যান্ডের সাথে মাথার পেছনে প্রচণ্ড আঘাত পায় হাসান। এতে রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়। ছেলের এমন মৃত্যুতে হতবিহ্বল মা তার ভাই ফারুক ইসলামকে ডেকে আনেন। খুনের ঘটনা ধামাচাপা দিতে দুজনে মিলে মৃত হাসানের গলায় ওড়না বেঁধে ঘরের ভেন্টিলেটরের রডের সাথে লাশ ঝুলিয়ে দেন।

এরপর সোমবার রাত ২টায় হঠাৎ তারা দুজন ঘরের বাইরে এসে হাসান আত্মহত্যা করেছে বলে চিৎকার, চেঁচামেচি ও কান্নাকাটি শুরু করেন। প্রতিবেশীরা ছুটে এসে পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে। সুরতহাল প্রতিবেদন ও ঘটনার পারিপার্শ্বিকতায় পুলিশের সন্দেহ হয় এটি আত্মহত্যা নয় খুন। এরপর বিষয়টি নিশ্চিত হতে কুলসুম ও ফারুককে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে পুলিশ। একপর্যায়ে তারা পুরো ঘটনার দায় স্বীকার করেন। গত সোমবার রাতে দুজনকে গ্রেফতারের পর গত মঙ্গলবার কুলসুম মহানগর হাকিম আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দ দেন।

বেলাল উদ্দিনের দ্বিতীয় স্ত্রী কুলসুম বেগম। বিশ্বকলোনীর আল হেরা মসজিদ গলির জে ব্লকের লিটন আকনের বাড়িতে ছেলে হাসানকে নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকতেন কুলসুম বেগম। প্রথম স্ত্রীর সাথে নগরীর পাহাড়তলী ওয়্যারলেস কলোনীতে থাকেন হাসানের পিতা বেলাল হোসেন। কুলসুমকে নিয়মিত ভরণপোষণের ব্যয় বহন করছিলেন বেলাল। আরো বাড়তি আয়ের আশায় কিশোর হাসানকে সিটি সার্ভিসের বাসের সহকারী হিসেবে কাজে পাঠান কুলসুম। সেখানে কয়েক বছর কাজ করার পর চুরির দায়ে তাকে বের করে দেয়া হয়।

সম্প্রতি তাকে হাটহাজারীতে বেলালের শ্বশুরের কুলিং কর্ণারে দৈনিক ১৫০ টাকা বেতনের ভিত্তিতে চাকরি দেয়া হয়। গত সোমবার দোকান মালিকের ছেলে হৃদয়ের মানিব্যাগসহ এক হাজার টাকা চুরি করে হাসান। এ অভিযোগ পেয়ে হাসানকে মারধর শুরু করে কুলসুম বেগম। ছেলের মৃত্যুর পর ভাইকে ডেকে এনে আত্মহত্যার নাটক সাজান তিনি। তবে পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, এটি কোন পূর্বপরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড নয়। রাগের বশে অতিরিক্ত মারধর ও ধাক্কা দেয়ায় পড়ে গিয়ে মাথায় আঘাতে তার মৃত্যু হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ