Inqilab Logo

মঙ্গলবার ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ২০ কার্তিক ১৪৩১, ০২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সৈয়দপুরে ভুয়া কৃত্রিম প্রজনন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের সন্ধান

সৈয়দপুর (নীলফামারী) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৯ আগস্ট, ২০২২, ১০:৪৫ এএম

নীলফামারীর সৈয়দপুরে একটি ভুয়া কৃত্রিম প্রজনন বিষয়ক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের সন্ধান পাওয়া গেছে। উপজেলার বাঙ্গালীপুর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের লক্ষণপুর মাঝাপাড়া এলাকায় এটির সন্ধান মিলেছে।রোববার (৭ আগস্ট) রাতে সৈয়দপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. শ্যামল কুমার রায়ের নেতৃত্বে ওই ভুয়া কৃত্রিম প্রজনন বিষয়ক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটিতে অভিযান চালিয়ে সেটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এসময় প্রশিক্ষণের জন্য নেয়া অর্থ প্রশিক্ষণার্থীদের ফেরত দেয়া হয়েছে। এছাড়াও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটির পরিচালক প্রশিক্ষক উমর ফারুকের কাছ থেকে এ ধরণের ভুয়া প্রতিষ্ঠান না চালানো বিষয়ে একটি লিখিত মুচলেকা নেওয়া হয়।
সৈয়দপুর শহরের পুরাতন বাবুপাড়ার নজরুল ইসলামের ছেলে উমর ফারুক। তিনি উপজেলার বাঙ্গালীপুর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের লক্ষণপুর মাঝাপাড়ার জনৈক মনসুর আলীর পাশাপাশি দুইটি বাড়ি ভাড়ায় নেন। গত ১৫ দিন আগে ভাড়ায় নেয়া ওই দুই বাড়িতে “সৈয়দপুর ডেইরী এন্ড ব্রিডিং লিমিটেড” নামে একটি কৃত্রিম প্রজনন প্রশিক্ষণ বিষয়ক কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়। এর মধ্যে একটি বাড়িতে দূর-দূরান্তের প্রশিক্ষণার্থীদের থাকা-খাওয়া ও প্রশিক্ষণ কক্ষ এবং অপরটিতে অফিস কক্ষ হিসেবে ব্যবহার করা হতো। এরপর কৃত্রিম প্রজনন বিষয়ক প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য নিয়োগকৃত কিছু দালালের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা থেকে বেকার শিক্ষিত যুবককে প্রশিক্ষণার্থী সংগ্রহ করা হয়। ১০ দিনব্যাপী আবাসিক প্রশিক্ষণ দেয়ার নামে প্রশিক্ষণ ফি বাবদ প্রতিজন প্রশিক্ষণার্থীর কাছ থেকে ১৪ হাজার টাকা করে অগ্রিম আদায় করা হয়। আর ওই ভুয়া কৃত্রিম প্রজনন বিষয়ক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে গত রোববার (৭ আগস্ট) দ্বিতীয় ব্যাচের তৃতীয় দিনের প্রশিক্ষণ চলছিল। এর আগে সেখানে প্রথম ব্যাচের প্রশিক্ষণ শেষ করা হয়। আর ওই দ্বিতীয় ব্যাচে প্রশিক্ষার্থী ছিল ১৫ জন।
পঞ্চগড়ের বোদা পৌরসভার তিতোপাড়ার জয়নুল হকের ছেলে প্রশিক্ষণ নিতে আসা শাহিনুল ইসলাম জানান, পঞ্চগড়ের জনৈক আব্দুল গফুরের মাধ্যমে তিনি ওই কৃত্রিম প্রজনন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের খোঁজ পেয়ে সেখানে প্রশিক্ষণ নিতে আসেন। আর তিনি অগ্রিম প্রশিক্ষণ ফি বাবদ ১৩ হাজার টাকা প্রদান করেছিলেন অভিযানকালে সৈয়দপুর উপজেলার বাঙ্গালীপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ডা. মো. শাহাজাদা সরকার ও ওয়ার্ড সদস্য মো. ছাবেদ আলী, উপসহকারী প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা আহসান হাবিবসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
আজ (৯ আগস্ট ) মঙ্গলবার সৈয়দপুর উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. শ্যামল কুমার রায় জানান, ভেটেরিনারী শিক্ষা কার্যক্রম কিংবা প্রশিক্ষণ প্রদানের জন্য বাংলাদেশ ভেটেরিনারী কাউন্সিল থেকে অনুমোদন গ্রহণ করতে হয়। ওই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের পরিচালক উমর ফারুক কোন রকম কাগজপত্র দেখাতে পারেনি। আর কাউন্সিলের স্বীকৃতি ব্যতিরেকে ভেটেরিনারী শিক্ষা কার্যক্রম কিংবা প্রশিক্ষণ প্রদান করা দণ্ডনীয় অপরাধ।
উল্লেখ্য উমর ফারুক এক সময় একটি বেসরকারি সংস্থার কৃত্রিম প্রজনন কর্মী হিসেবে কাজ করেন। পরবর্তীতে তিনি দীর্ঘদিন যাবত ওই ভুয়া কৃত্রিম প্রজনন বিষয়ক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র পরিচালনার মাধ্যমে শিক্ষিত যুবকদের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছেন। তিনি এখন পর্যন্ত ৩১৫ জন প্রশিক্ষণার্থীদের কাছ থেকে প্রশিক্ষণের নামে প্রশিক্ষণ ফ্রি বাবদ মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নেন। তিনি সময়ে সময়ে প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের অবস্থান পরিবর্তন করে থাকে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ