Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পারাপারের ভরসা একটি ‘সাম্পান’

দুই গ্রামবাসীর দাবি একটি বেইলিব্রিজ

এস. কে. এম. নূর হোসেন, পটিয়া (চট্টগ্রাম) থেকে | প্রকাশের সময় : ৯ আগস্ট, ২০২২, ১২:০৬ এএম

দেশের উন্নয়নের রোডম্যাপে চারিদিকে পরিবর্তন ও আধুনিকতার ছোঁয়া লাগলেও পটিয়া উপজেলার বাথুয়া ও ছনহরা এলাকার লোকজন উন্নয়নের ছোঁয়া থেকে বঞ্চিত। ছনহরা ইউনিয়নের বরিয়া মুরালীঘাট বাজার এলাকার লোকজন ও আশিয়া ইউনিয়নের বাথুয়া গ্রামের লোকজন পরস্পরের মধ্যে যোগাযোগের ক্ষেত্রে সেই মান্ধাতা আমলের ‘সাম্পানই’ একমাত্র ভরসা। দুই গ্রামে রয়েছে ৫০ হাজার লোক। একটি মাত্র সাম্পান দিয়ে এই এলাকার লোকজন দুই পারে যাতায়াত করে। চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদী দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে চাঁনখালী সাংগু মাতামুহুরী খাল। চাঁনখালী খালের তীরে অবস্থিত মুরালী ঘাট বাজার। একসময় মুরালী ঘাটে ডিঙ্গি নৌকা দিয়ে লোকজন এপার-ওপার যাতায়াত করত। আ.লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর মুরালী ঘাটের দক্ষিণ পার্শ্বে পটিয়া-আনোয়ারা সংযোগ সেতু স্থাপন হওয়ায় আনোয়ারা মুখী লোকজনের দুর্ভোগ লাঘব হয়। বর্তমানে আশিয়া বাথুয়া গ্রামের লোকজন ছনহরা ইউনিয়নের লোকজনের সাথে যোগাযোগ করতে আধা কিলোমিটার পথ সাম্পান দিয়ে পার হতে হয়। এখানকার ছেলেমেয়েরা বাথুয়া বিদ্যালয়ে যেতে দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এছাড়া বাথুয়া গ্রামের অধিকাংশ লোকের ব্যবসা-বাণিজ্য দোকান-পাট রয়েছে মুরালী ঘাট বাজারে। বাথুয়া গ্রামের মানুষ নিত্য বাজার প্রশাসনিক কাজসহ বিভিন্ন কাজকর্ম করতে পটিয়া সদরে আসতে হয় মুরালী বাজার দিয়ে। মুরালীঘাট থেকে সিএনজি যোগে সহজে পটিয়া সদরে যাওয়া যায়। এরমধ্যে বাথুয়া গ্রামের ডেলিভারি রোগীসহ অসুস্থ রোগি জরুরিভাবে পটিয়া হাসপাতালে যাওয়ার জন্য সাম্পান ছাড়া উপায় থাকে না। এছাড়াও আশিয়া-বাথুয়া জনকল্যাণ সড়কটি দীর্ঘদিন সংস্কার বিহীন। শত বছর বয়সী বৃদ্ধ সেকান্দর জানান সাম্পান কিংবা ডিঙ্গি নৌকা দিয়ে শত বছর ধরে খেয়া ঘাট পারা পার হয়ে আসছি। এখনও একটি ব্রিজ দেখলাম না। ষাটোর্দ্ধ বৃদ্ধা নূর বেগম জানান, আমাদের কষ্ট কেউ দেখে না। চট্টগ্রামের হাজী মহসিন কলেজের ছাত্র আনিস মিয়া জানান, সারাদেশে পরিবর্তন এসেছে, কিন্তু আমাদের গ্রাম এখনও অন্ধকার রয়ে গেছে। মুরালীঘাট বাজারের মমতাজ বেকারির মালিক মোহাম্মদ লোকমান বলেন, যাতায়াত সমস্যায় ব্যবসা-বাণিজ্যে ধস নেমেছে।
বাথুয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ শাহ্্জাহান জানান, পূর্বে তালসরা, চেনামতি, মাহাতা গ্রামের ছেলেমেয়েরা ডিঙ্গি নৌকা দিয়ে বাথুয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে যাতায়াত করত। বর্তমানে খাল বড় হওয়ায় ও একটি মাত্র সাম্পান দিয়ে চলাচল করায় তিন গ্রামের শিক্ষার্থীরা কষ্ট করে মাহাতা ও পরৈকোড়া বিদ্যালয়ে যেতে হয়। বাথুয়া-তালসরার মাঝামাঝি স্থানে একটি বেইলিব্রিজ স্থাপন হলে দীর্ঘদিনের দুর্ভোগ লাঘব হবে। বাথুয়া শেখ রাসেল মেমোরিয়্যাল সমাজ কল্যাণ সংস্থার সভাপতি ও আশিয়া ইউপির ৮নং ওয়ার্ড সদস্য মোহাম্মদ মহিবুল্লাহ জানান, বাথুয়া গ্রামের লোকজনের যাতায়াত সুবিধার্থে মুরালী ঘাটের সন্নিকটে একটি বেইলী ব্রিজ স্থাপন করা হলে লোকজনের দীর্ঘদিনের সমস্যা দূরীকরণ হবে। এছাড়া আমি ব্রিজটি শেখ রাসেলের নামে ‘নামকরণের’ জন্য দাবি জানাচ্ছি।
আশিয়া ইউপি চেয়ারম্যান এম. এ. হাশেম জানান, মুরালীঘাট বাজারের সন্নিকটে একটি ব্রিজের সমস্যা দীর্ঘদিনের। বিষয়টি পটিয়ার সংসদ সদস্য হুইপ আলহাজ সামশুল হক চৌধুরীকে জানানো হয়েছে। আশা করছি, অচিরেই এ সমস্যার সমাধান হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ