গাজীপুরের শ্রীপুরে তাকওয়া পরিবহনের বাস থেকে স্বামীকে ফেলে স্ত্রীকে দলবেঁধে ধর্ষণের ঘটনায় মামলা হয়েছে। শনিবার রাতে ওই নারীর স্বামী বাদী হয়ে শ্রীপুর থানায় মামলাটি করেন। ওই নারীকে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেলের গাইনী বিভাগে ভর্তি করা হয়েছে। আজ তার ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্নের কথা রয়েছে।

ধর্ষণের ওই ঘটনায় ইতোমধ্যেই পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। তারা হলেন- রাকিব মোল্লা (২৩), সুমন খান (২০), মো. সজীব (২৩), সুমন হাসান (২২) ও শাহীন মিয়া (১৯)। দুপুরে তাদের গাজীপুর আদালতে পাঠানো হবে।

ধর্ষণের শিকার ওই নারীর বাড়ি কিশোরগঞ্জ এলাকায়। তিনি ময়মনসিংহ জেলার ভালুকা উপজেলার জামিরদিয়া এলাকায় ভাড়া থেকে একটি কারখানায় চাকরি করেন।

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান জানান, শুক্রবার রাত তিনটার দিকে ওই নারী তার স্বামীসহ গাজীপুরের ভোগড়া বাইপাস এলাকায় বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। এই সময় তাকওয়া পরিবহনের একটি বাস এসে সামনে দাঁড়ায়। বাসচালকের সহকারী সজীব মিয়া এসে ভিকটিম ও তার স্বামীকে টানাটানি করে বাসে উঠতে বলেন। আর কোনো বাস না পাওয়ার আশঙ্কায় ভিকটিম ও তার স্বামী তাকওয়া পরিবহনের ওই বাসে উঠেন। এ সময় আরও ৪/৫ জন যাত্রী উঠেন। বাসটি জয়দেবপুর চৌরাস্তায় এলে আরও তিন স্টাফ বাসে উঠে। জয়দেবপুর এবং রাজেন্দ্রপুর চৌরাস্তায় সব যাত্রী নেমে যায়। রাজেন্দ্রপুর চৌরাস্তা ছেড়ে কিছুদূর গেলে বাসের স্টাফরা ওই নারী ও তার স্বামীকে মারধর করে তাদের সঙ্গে থাকা টাকা ও মালামাল লুটে নেয়। এক পর্যায়ে টেনেহিঁচড়ে বাস থেকে ওই নারীর স্বামীকে ফেলে দেয়। পরে ওই নারীকে নিয়ে তাকওয়া পরিবহনের বাসটি ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের মাওনা চৌরাস্তার এমসি, নয়নপুর ও জৈনা বাজার ঘুরে জয়দেবপুরের দিকে রওনা হয়।

পথিমধ্যে অভিযুক্তরা চলন্ত বাসে ওই নারীকে দলবেঁধে ধর্ষণ করে। পরে তাকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের হোতাপাড়া এবং রাজেন্দ্রপুর চৌরাস্তার মাঝামাঝি নির্জন স্থানে বনের পাশে গুরুতর আহত অবস্থায় ফেলে যায়।

কিছু সময় পর ওই নারীর স্বামী জয়দেবপুর থানা পুলিশকে বিষয়টি অবহিত করে। ঘটনার ৬ ঘণ্টার মধ্যে পুলিশের একাধিক টিম অভিযান চালিয়ে ধর্ষণের সঙ্গে জড়িত পাঁচজনকে গ্রেফতার করে। ধর্ষণের ঘটনায় ব্যবহৃত তাকওয়া পরিবহনের বাসটি জব্দ করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে ভুক্তভোগী দম্পতির কাছ থেকে লুটে নেওয়া মালামাল উদ্ধার করা হয়।