Inqilab Logo

বুধবার, ২৬ জুন ২০২৪, ১২ আষাঢ় ১৪৩১, ১৯ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

মাতৃদুগ্ধ সপ্তাহ : উদ্যোগী হতে ইউনিসেফ-বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আহ্বান

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১ আগস্ট, ২০২২, ৯:০৫ পিএম

প্রায় অর্ধেক নবজাতক জন্মের প্রথম ঘণ্টায় মাতৃদুগ্ধ খেতে পায় না বলে তাদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি নিয়ে বিশ্বের সরকারগুলোকে উদ্যোগী হতে আহ্বান জানিয়েছে ইউনিসেফ ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। প্রতি বছর অগাস্টের প্রথম সপ্তাহে বিশ্বজুড়ে বিশ্ব মাতৃদুগ্ধ সপ্তাহ পালন করা হয়। এবার বিশ্ব মাতৃদুগ্ধ সপ্তাহের প্রতিপাদ্য ‘শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানোর জন্য এগিয়ে আসুন: শেখান এবং সহযোগিতা করুন’। এই দিবস উপলক্ষে সোমবার (১ আগস্ট) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে যৌথ বিবৃতি দিয়েছেন ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক ক্যাথরিন রাসেল ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক ড. তেদ্রোস আধানম গেব্রিয়েসুস।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, যেহেতু বৈশ্বিক নানা সঙ্কট লাখ লাখ শিশুর স্বাস্থ্য ও পুষ্টির জন্য অব্যাহত ভাবে হুমকি তৈরি করে চলেছে, তাই জীবনে সম্ভাব্য সবচেয়ে ভালো শুরু হিসেবে শিশুকে মায়ের বুকের দুধ খাওয়ানোর অপরিহার্যতা এখন আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি। আর এ ধরনের জরুরি পরিস্থিতিতে ‘সবচেয়ে নাজুক অবস্থায় থাকা পরিবারগুলোর জন্য’ বুকের দুধ খাওয়ানো বিষয়ক নীতিমালার পাশাপাশি কর্মসূচিগুলোর সুরক্ষা, প্রচারণা ও সহায়তায় ‘আরও বরাদ্দ দিতে’ বিশ্বের সরকারগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ইউনিসেফ এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আফগানিস্তান, ইয়েমেন, ইউক্রেন, হর্ন অব আফ্রিকা ও সাহেলসহ যে সব অঞ্চলে জরুরি পরিস্থিতি বিদ্যমান সেখানে নবজাতক ও ছোট শিশুদের নিরাপদ, পুষ্টিকর ও সহজলভ্য খাদ্যের উৎসের নিশ্চয়তা দেয় বুকের দুধ। মাতৃদুগ্ধ নবজাতকের প্রথম টিকা হিসেবেও কাজ করে বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। মাতৃস্তন্য শিশুকে বেঁচে থাকতে সহায়তা করলেও অনেক শিশু বুকের দুধ খাওয়ার সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বলে জানাচ্ছে ইউনিসেফ ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এর কারণ মায়েদের মানসিক বিপর্যস্ততা, শারীরিক ক্লান্তি, নিজের জন্য আলাদা জায়গা ও গোপনীয়তার অভাব এবং জরুরি পরিস্থিতিতে মায়েদের জন্য ভালো স্যানিটেশন ব্যবস্থা না থাকা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা অনুযায়ী, জন্মের প্রথম ঘণ্টাতেই নবজাতককে বুকের দুধ খাওয়াতে হবে। প্রথম ৬ মাস শুধুমাত্র বুকের দুধই খাবে শিশু, এমনকি পানিও খাওয়ানো যাবে না। এরপর পরিপ‚রক খাদ্যের সঙ্গে অন্তত দুই বছর বয়স পর্যন্ত মায়ের দুধ চালিয়ে যেতে হবে। কিন্তু অর্ধেকেরও কম নবজাতক জীবনের প্রথম ঘণ্টায় মায়ের বুকের দুধ খেতে পায়। অর্থ্যাৎ বাকিরা রোগ ও মৃত্যুর ঝুঁকিতে রয়েছে।

শিশুর জীবনের প্রথম ছয় মাস বুকের দুধ খাওয়ানোকে ২০২৫ সালের মধ্যে ৫০ শতাংশে উন্নীত করার সুপারিশ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এখন মাত্র ৪৪ শতাংশ শিশুকে জীবনের প্রথম ছয় মাস বুকের দুধ খাওয়ানো হয়। ‘নাজুক ও খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার’ প্রেক্ষাপটে শিশুর বেঁচে থাকা এবং বৃদ্ধি ও বিকাশে বিশ্বের দেশগুলোর সরকার, দাতা, সুশীল সমাজ ও বেসরকারি খাতের কাছে মাতৃদুগ্ধ পানে সহায়ক নীতিমালা ও কর্মস‚চিতে বিনিয়োগে অগ্রাধিকার দেওয়ার আহবান জানিয়েছে সংস্থা দুটি। মায়েদের বুকের দুধ খাওয়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় সময়, স্থান ও সহায়তা দিতে পরিবার-বান্ধব নীতিমালার প্রস্তাবও করেছে তারা। ওয়ার্ল্ড ব্রেস্টফিডিং ট্রেন্ডস ইনিশিয়েটিভ (ডব্লিউবিটিআই) ‘মেকিং আ ডিফারেন্স’ শিরোনামে প্রকাশিত ২০২০ সালের প্রতিবেদনে শিশুদের মায়ের বুকের দুধ দিতে উৎসাহিত করতে সরকারের নীতি ও কর্মস‚চির নিরিখে বিশ্বের ৯৮টি দেশের মধ্যে শীর্ষ ছিল বাংলাদেশ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ