Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

গাছ তৈরিতে ব্যস্ততা বেড়েছে সাতক্ষীরার গাছিদের

| প্রকাশের সময় : ৩০ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

আক্তারুজ্জামান বাচ্চু, সাতক্ষীরা থেকে : সাতক্ষীরায় খেজুর গাছ ওঠানো বা কাটার কাজে অতি ব্যস্ত সময় পার করছেন গাছিরা। সাধারণত নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে শীতের আগমনীর মধ্য দিয়ে গাছিরা তাদের পুরো বছরের প্রতীক্ষিত সেই গাছ ওঠনো ইতোমধ্যে শুরু করে দিয়েছেন। অবিরাম ছুটে চলেছেন এক প্রান্ত হতে আরেক প্রান্তে। নদীর চর, ক্ষেতের আইল, আবার রাস্তার ধারে দ-ায়মান থাকা খেজুর গাছগুলো ভালোভাবে পরিষ্কারের পর গাছ থেকে রস বের করার কাজে ব্যস্ত গাছিরা। আগামী ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত অর্থাৎ চার মাসের অধিক সময় ধরে গাছিরা খেজুর রস বের করার কাজে ব্যস্ত থাকবেন। গাছিদের পাশাপাশি ব্যস্ততায় থাকবেন গাছের মালিকরাও। রস ধরে রাখার পাত্রগুলো পরিষ্কার করে ধুয়ে দেয়া। অতঃপর পাত্রে রাখা রসটি যেন ঘোলাটে না হয় সেজন্য পাত্রগুলো সারিবদ্ধভাবে উঠানে রেখে তাতে আগুন দিয়ে ভালোভাবে জ্বালানো। তারপর সেগুলো গাছে পেতে রাখার জন্য মাঠে কিংবা যথাস্থানে পৌঁছে দেয়া। কখনো কখনো পাত্রে চুনও ব্যবহার করে থাকেন কেউ কেউ। সাতক্ষীরার কুখরালি গ্রামের গাছি আব্দুর রহমান জানালেন, এবছর গাছের সংখ্যা খুবই সীমিত। গাছপ্রতি ১২০ টাকা করে নেয়া হচ্ছে। তবে একেবারে ছোট গাছের জন্য ১০০ টাকা নেয়া হয়। তিনি জানালেন, এবছর গাছের সংখ্যা হ্রাস পাওয়ায় উঠানোর সংখ্যা অনেক কম। যা পাত্র প্রতি রস বিক্রি ৮০ টাকা করে না নিলে গাছ মালিকেরও লোকসান গুনতে হবে। গাছির একথা শুনেই মনে পড়ল ছোট বেলার কথা। মাঠের পর মাঠ কিংবা নদীর পাড়ে অসংখ্য খেজুর গাছ। গাছের বুকে পাত্র পেতে রাখলে পাটখড়ি দিয়ে চুরি করে মাঠ থেকে রস খাওয়ার মজাটাই যেন অন্যরকম। অতি ভোর বেলা নিজেদের গাছ থেকে রসের পাত্র এনে কনকনে শীতে গ্লাসভর্তি রসের স্বাদ যেন তৃপ্তিদায়ক। পরে পরিবারের সবাই রস খেয়ে ব্যারেলে অথবা কড়াই করে রসগুলো জ্বালানো হতো। তা থেকে গুড়ে পরিণত করে খেজুরের পাটালি বানানো হতো। ব্যারেলের গায়ে লেগে থাকা শেষাংশের সামান্য গুড় যেন হুমড়ি খেয়ে সেগুলো উঠিয়ে নিতাম। সারাবাড়ি রসের ও পাটালির মৌ মৌ গন্ধ পাওয়া যেত। পাত্র (ভাড়) ভর্তি করে রাখা গুড় একসময় মিছরি (দানা) পড়ে যেত। সকাল বেলা নারকেল কোরা আর দানা মিশ্রিত গুড় দিয়ে পানতা ভাত যেন গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্য বহন করত।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ