Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মই বেয়ে পার হতে হয় শতকোটি টাকার সেতু

পারাপারে ঝুঁকি

কুলাউড়া (মৌলভীবাজার) উপজেলা সংবাদদাতা : | প্রকাশের সময় : ৩১ জুলাই, ২০২২, ১২:০১ এএম

মৌলভীবাজারের কুলাউড়া মনু নদের ওপর শত কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত রাজাপুর সড়ক সেতুতে উঠতে হয় মই বেয়ে! সেতু নির্মাণের এক বছর পূর্ণ হলেও অযত্ন, অবহেলায় পড়ে রয়েছে। দুই পাশের বাসিন্দাদের মই লাগিয়ে পার হতে হয় স্বপ্নের সেতু।

সেতু নির্মাণের শুরু থেকে মনু নদীর উভয় পাড়ে বড় বড় পাথর দিয়ে বেষ্টনি তৈরি করে দেওয়ায় স্থানীদের কাছে দৃষ্টিনন্দন একটি সেতু হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। প্রতিদিন সেতুটি দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে পর্যটকদের আগমন ছিলো লক্ষণীয়। কিন্তু সেতুটি উভয় পাশে সংযোগ সড়ক তৈরি না হওয়ায় মানুষের দুর্ভোগের যেনো শেষ নেই। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সংযোগ সড়ক নির্মিত হলে ৬ ইউনিয়নের লোকজনের উপজেলা শহরে যাতায়াতে প্রায় ২ ঘণ্টা সাশ্রয় হবে। কিন্তু সেতু নির্মিত হলেও সংযোগ সড়ক না হওয়ায় এক বছর থেকে এই ভোগান্তিতে রয়েছেন লক্ষাধিক মানুষ।

স্থানীয় লোকজন উঁচু সেতুর দুই পাশে বাঁশের মই দিয়ে প্রতিদিন চরম ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন। হাজীপুর ও শরিফপুর ইউনিয়নের অধিকাংশ লোকজন সময় বাঁচাতে যাতায়েতের সহজ এই রাজাপুর সেতু দিয়ে রবিরবাজার পৃথিমপাশা, রাউৎগাও ও কর্মধা ইউনিয়নের লোকজন এই সেতু ব্যবহার করে সহজেই হাজীপুর-শরিফপুরে যেতে পারেন। কিন্তু ভারি জিনিসপত্র নিয়ে মই বেঁয়ে সেতু ব্যবহার করতে গিয়ে প্রায় নানা দুর্ঘটনায় শিকার হতে হয় তাদের। আবার অনেক পর্যটকরা সেতুটির সুন্দর্য্য উপভোগ করতে আসলেও মই দিয়ে উঠতে না পারায় ফেরত চলে যান। স্থানীয় বাসিন্ধা ও আগত পর্যটকরা দ্রুত সেতুর সংযোগ সড়ক নির্মাণ করে সেতুটি চালু করে দেওয়ার দাবি জানান।

জানা যায়, কুলাউড়া উপজেলার পৃথিমপাশা ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী মনু নদীর উপর ২০১৮ সালে সওজ অধিদফতর মনু নদের ওপর সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। ২০২১ সালের জুন মাসে কাজের সমাপ্ত ঘটে। প্রকল্পে ‘কুলাউড়া-পৃথিমপাশা-হাজীপুর-শরীফপুর সড়কের ১৪ কিলোমিটারে ২শত ৩২ দশমিক ৯৪ মিটার পিসি গার্ডার সেতু, সাত কিলোমিটার সংযোগ সড়ক ও জমি অধিগ্রহণ নির্মাণ প্রকল্প অনুমোদন করে সরকার। এর ব্যয় ধরা হয়েছে ৯৯ কোটি ১৭ লাখ ৩৮ হাজার টাকা। পরবর্তীতে ‘জন্মভূমি-ওয়াহিদুজ্জামান-নির্মিতি’ ‘জামিল-ইকবাল’ নামের সিলেটের দুইটি যৌথ ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজ পায়। কাজের মেয়াদ চলতি বছরের মে মাসের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ভূমি অধিগ্রহণের কাজ শেষ না হওয়ায় নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে কাজ সম্পন্ন করা যায়নি। পরে ২০২১ সালের জুন মাসে কাজের সমাপ্ত ঘটে।

এদিকে সংযোগ সড়ক নির্মাণে সরকারের কাছে জমি বিক্রেতা গিরি দারি দে জানান, সেতুর উভয় পাশে প্রায় সাত কিলোমিটার সংযোগ সড়ক স্থাপনের জন্য সরকার তিনগুণ বেশি দাম দিয়ে স্থানীয় ৫০-৬০ জনের কাছ থেকে জায়গা একোয়ার করে ক্রয় করলেও এখনো কেউ টাকা পাননি। এ ব্যাপারে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাষক মীর নাহিদ আহসান জানান, স্থানীয় যাদের কাছ থেকে একোয়ারের মাধ্যমে ভূমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে তাদের বিল এখনো পাশ হয়নি। অনুমোদন হলেই প্রকৃত জায়গার মালিকরা তাদের বিল পেয়ে যাবেন। এছাড়াও সেতুর সংযোগ সড়কের কাজ শীঘ্রই শুরু হয়ে যাবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ