বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী ড. আবদুল মঈন খান বলেছেন, সরকার হাজার হাজার মেঘাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের গল্প শুনিয়ে দেশকে ভয়াবহ লোডশেডিংয়ের দিকে ঠেলে দিয়েছে। বিদ্যুৎ উৎপাদনের নামে সরকারের আশির্বাদিপুষ্ট কিছু ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাটের সুযোগ করে দিয়েছে। বিদেশে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করেছে। সরকারের দুর্নীতির মাশুল দিতে হচ্ছে সাধারণ জণগনকে। বিনাভোটে নির্বাচিত সরকারের জনগণের প্রতি কোন দায়বদ্ধতা নেই। শহীদ জিয়ার প্রতিষ্ঠিত দল বিএনপি মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠার রাজনীতিতে বিশ^াসী। বিনাভোটের ফ্যাসিস্ট সরকার মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। আজ দেশে আইনের শাসন নেই, খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান শিক্ষার অধিকার নেই। কথা বলার অধিকার নেই। তারা মেগা উন্নয়নের মিথ্যা বুলি দিয়ে জাতির সাথে প্রতারণা করছে। এজন্য সরকারকে অবশ্যই জবাবদিহী করতে হবে। এই সরকারের হাত থেকে দেশের অধিকারবঞ্চিত মানুষকে মুক্ত করতে আমাদের সংগ্রাম চলছে চলবে।
তিনি বলেন, দেশ জাতি চরম ক্রান্তিকাল অতিবাহিত করছে। আর এই ক্রান্তিকাল গণতন্ত্র হত্যাকারী আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের নিজের হাতে তৈরী। দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতিতে জনজীবন অতিষ্ঠ। ভয়াবহ বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের প্রভাব রাষ্ট্রের প্রতিটি সেক্টরে পড়েছে। দেশ ক্রমশই ভয়াবহ পরিস্থিতির দিকে ধাবিত হচ্ছে। মানুষের ভোটে নির্বাচিত নয় বিধায় সরকার জণগনের কাছে কোন জবাবদিহিতা নেই। ফলে সরকার দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তারা জনগণের কল্যানের বিপরীতে জনদুর্ভোগ সৃষ্টিতে লিপ্ত রয়েছে। আমরা নিয়মতান্ত্রিক শান্তিপূর্ণ কর্মসুচীতে বিশ^াস করি। মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় আমাদের কর্মসূচী অব্যাহত থাকবে। এসব কর্মসূচীতে বাধা দেয়া হলে তা যে কোন সময় গণবিস্ফোরণে রুপ নিতে পারে। দেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে হলে নিরপেক্ষ সরকারের কোন বিকল্প নেই। ইতিহাস স্বাক্ষী এই সরকারকে ক্ষমতায় রেখে দেশে নিরপেক্ষ নির্বাচন কোনভাবেই সম্ভব নয়। সরকারের অধীনে কোন নির্বাচনে বিএনপি যাবেনা যাবেনা। সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে অবশ্যই এই সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরে যেতে হবে।
আজ শনিবার বিএনপির কেন্দ্রঘোষিত কর্মসূচীর অংশ হিসেবে সারাদেশে নজিরবিহীন লোডশেডিং ও জ্বালানি খাতে অব্যবস্থাপনার প্রতিবাদে সিলেট মহানগর বিএনপি আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপরোক্ত কথা বলেন তিনি। নগরীর চৌহাট্টাস্থ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে বিএনপি অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনের হাজার হাজার নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। সমাবেশ শেষে বিশাল বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। মিছিলটি নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে কোর্ট পয়েন্টে গিয়ে সমাপ্ত হয়।
সিলেট মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুল কাইয়ুম জালালী পংকীর সভাপতিত্বে, ১ম যুগ্ম আহ্বায়ক হুমায়ুন কবির শাহীন ও যুগ্ম আহ্বায়ক রেজাউল হাসান কয়েস লোদীর যৌথ পরিচালনায় অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সিলেট সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী।
মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মুকুল আহমদ মুর্শেদের পবিত্র কুরআন তেলাওয়াতের মধ্য সূচীত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী, মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক নজিবুর রহমান নজিব, জেলা যুবদলের আহ্বায়ক সিদ্দিকুর রহমান পাপলু, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আব্দুল আহাদ খান জামাল, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আব্দুল ওয়াহিদ সুহেল, মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি সুদীপ জ্যোতি এষ, জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন দিনার প্রমূূখ।
সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন, মহানগর বিএনপির যুুগ্ম আহ্বায়ক কাউন্সিলার ফরহাদ চৌধুরী শামীম, যুগ্ম আহ্বায়ক জিয়াউল গণি আরেফিন জিল্লুর, আজমল বখত চৌধুরী সাদেক, জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামীম আহমদ, মহানগর বিএনপির সদস্য জিয়াউল হক, আমির হোসেন, মাহবুব কাদির শাহী, নুরুল আলম সিদ্দিকী খালেদ, কাউন্সিলার সৈয়দ তৌফিকুল ইসলাম হাদী, হুমায়ুন আহমদ মাসুক, আবুল কালাম ও সৈয়দ সাফেক মাহবুব, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবুল কাশেম, সাধারণ সম্পাদক আজিজুর রহমান, দক্ষিণ সুরমা উপজেলা সভাপতি হাজী শাহাব উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক কুহিনুর আহমদ, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আকবর প্রমূখ।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির বলেন, এই লুটেরা সরকার মানুষকে উন্নয়নের গল্প শুনিয়ে জাতির সাথে প্রতারণা করে আসছিলো। চলমান বিদ্যুৎ সংকট তাদের মিথ্যা ও প্রতারণা ফাস করেছে। কুইক রেন্টাল বিদ্যুতের নামে হাজার কোটি টাকা লুটপাট করে তারা জাতিকে লোডশেডিং উপহার দিচ্ছে। এই সরকারের সময় যত বাড়বে, জনদুর্ভোগও তত বাড়বে। তাই এসরকারের বিদায় হলোর জাতির জন্য মুক্তি। ফ্যাসিস্ট সরকারকে বিদায় করে জনতার সরকার প্রতিষ্টিত করে আওয়ামীলীগের লুটপাটের জন্য অবশ্যই জাতির কাছে জবাবদিহী করতে হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।