বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
দীর্ঘ ৫০ বছর পর দখল হয়ে যাওয়া টাঙ্গাইলের লৌহজং নদী রক্ষায় এবার শুরু হয়েছে জনসাধারণের অংশ গ্রহণে উদ্ধার অভিযান। টাঙ্গাইল শহরের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া নদীটি দখল আর দূষণের ফলে ধ্বংসের দ্বার প্রান্তে এসে গিয়েছিল। জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে দীর্ঘ দিন পর অবশেষে মঙ্গলবার থেকে শুরু হল সমন্বিত উদ্ধার অভিযান। এ অভিযানে শরিক হয়েছে জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক সংগঠন, সিটিজেন জার্নালিস্ট গ্রুপসহ কয়েক হাজার সদস্য। এ দিকে নদী দখল মুক্ত করতে নিজ উদ্যোগেই দখলকারীরা তাদের স্থাপনা সারিয়ে নিচ্ছে। অন্য দিকে কিছু ভূমিহীন মানুষ তাদের পুনর্বাসন না করে উচ্ছেদ করায় পড়েছেন বিপাকে। পুনর্বাসনের দাবী জানিয়েছেন তারা।
টাঙ্গাইল সদর উপজেলার ঢালান শিবপুর থেকে মির্জাপুরের বংশাই নদী পর্যন্ত প্রায় ৭০ কিলোমিটার দীর্ঘ এই নদী। এই নদীর টাঙ্গাইল শহরের উপর দিয়ে বয়ে চলা প্রায় ১০ কিলোমিটার দুপাশে কয়েক হাজার বাড়ি ঘর অবৈধ ভাবে গড়ে উঠে নদী দখল করে সরু খালে পরিণত করেছিল। অথচ এক সময় এই নদী দিয়ে জাহাজ ও লঞ্চ চলতো শহরের আমঘাট পর্যন্ত। আজ নদী দখল হয়ে নদীটি মৃতপ্রায় অবস্থায়। এই নদী ও নদীর পরিবেশ বাঁচাতে মঙ্গলবার শুরু হয়েছে সকলের অংশগ্রহণে উদ্ধার অভিযান। সকাল ১১টায় টাঙ্গাইল পৌর এলাকার বেড়াডোমা থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে অবৈধ স্থাপনা উদ্ধার কার্যক্রম শুরু করেন জেলা প্রশাসক মাহবুব হোসেন। এই অভিযানে যেমন যোগ দিয়েছে বিভিন্ন সংগঠনের সদস্য, তেমনি দখলকারীরাও স্বতঃস্ফূর্ত এই কাজে অংশ নিয়েছে। সরিয়ে নিচ্ছেন নিজ উদ্যোগে তাদের স্থাপনা।
এই উচ্ছেদ অভিযানে একাত্মতা জানিয়ে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেন, সরকারী জমি অনেকেই দখল করে আছে এবং কিয়ামত পর্যন্ত থাকবে। কিন্তু নদীর জমি দখলে রাখা আর পরিবেশকে গলা কেটে হত্যা করার শামিল। তিনি বলেন, ৭৬ কিলোমিটার লৌহ জং নদী দখলদারদের কবল থেকে মুক্ত করতে পারলে এর সুফল শহরবাসী পাবে। এই উদ্ধার অভিযান চলতে হবে ভানের পানির মতো দ্রুত গতিতে করতে হবে। তিনি আরো বলেন, এই অভিযানে বেশি মানুষের অসুবিধা হবে না। যারা ঘরবাড়ি বানিয়ে আছে তারাও বুঝতে পারবে যে একজন মানুষ বাঁচার চাইতে হাজার লক্ষ ও কোটি মানুষের বাঁচা অনেক ভাল।
টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক মো. মাহবুব হোসনে বলেন, উদ্ধার অভিযান শুরু হয়েছে। এ অভিযান চলবে। তবে এই অভিযানে যদি কেউ ভূমিহীন হয়ে পড়ে তাদের খোঁজ খবর নিয়ে তাদের পুনর্বাসন করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
অন্যান্যের মধ্যে আরো বক্তব্য রাখেন, মনোয়ারা বেগম এমপি, টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার মো. মাহবুব আলম, টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট জোয়াহেরুল ইসলাম।
গত কয়েক মাস যাবত লৌহজং নদী দখলমুক্ত করার ঘোষণা দিয়ে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে শহরের মাইকিং, নদীর ধারে মানববন্ধনসহ ফেসবুকে জনমত গঠনের বিভিন্ন কার্যক্রম চলে আসছিল। তারই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার সকাল থেকেই বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক-সাংস্কৃতিক, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরা “লৌহজং নদী রক্ষা করি- পরিবেশ বান্ধব টাঙ্গাইল গড়ি” শ্লোগান সম্বলিত হলুদ গেঞ্জি পড়ে, ব্যানার ফেস্টুন নিয়ে নদীর ধারে জমায়েত হতে থাকে। এ সময় বরিশাল থেকে ৬০জন স্বেচ্ছাসেবক নদী দখলমুক্ত করার কাজে অংশ গ্রহণ করে।
টাঙ্গাইল লৌহজং নদী উদ্ধারের এই অভিযান অব্যাহত থাকবে এবং টাঙ্গাইলের মানুষ ও পরিবেশ রক্ষা পাবে এটাই মনে করেন টাঙ্গাইল-বাসী।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।