Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শৃঙ্খলা লঙ্ঘনকারী শিক্ষক শৃঙ্খলা কমিটিতে

কুবি প্রতিনিধি | প্রকাশের সময় : ২৮ জুলাই, ২০২২, ৬:১৫ পিএম

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) ভর্তি পরীক্ষার ফল নিয়ে গণমাধ্যমে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে তথ্য সরবরাহের অভিযোগে ২০২১ সালের ২৭ জুন ৮০তম সিন্ডিকেট সভায় এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাবিধি-২০১৮ অনুসরণ করে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেয়। তবে নির্দেশ দেওয়ার ১৩ মাস সময় পার করলেও বিচার না করে উল্টো অভিযুক্ত শিক্ষককে নিয়ে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার শৃঙ্খলা কমিটি গঠন করা হয়েছে।

জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২১-২০২২ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) ১ম বর্ষে ভর্তি পরীক্ষার শৃঙ্খলা রক্ষায় গত ১৪ জুন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) কাজী ওমর সিদ্দিকীকে আহ্বায়ক করে ১৬ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়।
এই কমিটিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর এবং ৮০ তম সিন্ডিকেট সভায় আচরণ ও শৃঙ্খলাবিধি-২০১৮ অনুসরণ করে বিভাগীয় ব্যবস্থার নির্দেশপ্রাপ্ত গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোঃ মাহবুবুল হক ভূঁইয়াকে সংযুক্ত করা হয়।
ফলে প্রশ্ন উঠেছে, ভর্তি পরীক্ষার মতো একটি সংবেদনশীল বিষয়ে তথ্য পাচার করে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরো ভর্তি কার্যক্রমকে প্রশ্নের মুখে ফেলার পরেও কিভাবে এই শিক্ষক শৃঙ্খলা কমিটিতে থাকেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন শিক্ষক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার কার্যক্রম অত্যন্ত স্পর্শকাতর বিষয়। যেখানে একজন শিক্ষক এর আগে ভর্তি কার্যক্রমকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে বিভ্রান্তিমূলক তথ্য সরবরাহ করেন এবং উচ্চতর তদন্ত কমিটিতে সেটি প্রমাণ হয়। কিন্তু তার বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা না নিয়ে শৃঙ্খলা কমিটিতে যুক্ত করার অর্থ হল তাকে পুরস্কৃত করা। বিষয়টি স্বাভাবিক নয়।
এ বিষয়ে মোঃ মাহবুবুল হক ভূঁইয়ার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা আমার কনফিডেনসিয়াল বিষয়। আপনার সাথে কথা বলব না।
এ বিষয়ে শৃঙ্খলা কমিটির আহ্বায়ক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) কাজী ওমর সিদ্দিকীকে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। ঘটনায় সেসময়ে উচ্চতর তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ও বর্তমান ট্রেজারার অধ্যাপক ড. মো. আসাদুজ্জামান জানান, তদন্তে যে প্রতিবেদন উঠে আসে সেটি আমি উপাচার্যের কাছে জমা দিয়েছিলাম। উপাচার্য সেটি সিন্ডিকেটে উপস্থাপন করেছিলেন। এরপরে আর আমার সংযুক্তি ছিল না।
এমন একজন শিক্ষক পুনরায় ভর্তি পরীক্ষার শৃঙ্খলা কমিটিতে থাকতে পারেন কিনা জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ. এফ. এম. আব্দুল মঈন জানান, এরকম ঘটনা কি হয়েছিল সেটি জানার পরে আমি মন্তব্য করতে পারব। তবে বিষয়টি আমার জানা ছিল না। আমি আজকে আপনার মাধ্যমে জানলাম। যদি কোন সিদ্ধান্ত থেকে থাকে আমি ব্যাবস্থা গ্রহণ করব।
এমন গুরুতর বিষয়ে কোন ব্যাবস্থা গ্রহণ না করে ভর্তি পরীক্ষার শৃঙ্খলা কমিটিতে রাখা যায় কিনা জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য ড. দিল আফরোজা বেগম বলেন, ঘটনার বিষয়ে আমার জানা নেই। আপনি উপাচার্যের সাথে কথা বলেন। ওই শিক্ষক বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন কমিটিতে সংযুক্ত আছেন কিনা। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ পদক্ষেপ নিবে।
প্রসঙ্গত, এর আগে ২০২১ সালের ২৭ জুন সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮০তম সিন্ডিকেটে বলা হয়, ২০১৯-২০২০ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক প্রথম বর্ষের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল নিয়ে গণমাধ্যমে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে তথ্য সরবরাহের বিষয়টি প্রমাণিত হয় গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোঃ মাহবুবুল হক ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে। এতে আচরণ ও শৃঙ্খলাবিধি-২০১৮ অনুসরণ করে বিভাগীয় ব্যবস্থার নির্দেশ দেয় বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট।
সেসময়ে উচ্চতর তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ও বর্তমান ট্রেজারার অধ্যাপক ড. মো. আসাদুজ্জামান গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, গোয়েন্দা সংস্থাসহ সবার সহযোগিতায় উচ্চতর তদন্ত হয়েছে। কমিটির সবাই এ বিষয়ে একমত। এটি প্রমাণিত মাহবুবুল হক ভূঁইয়া ওই তথ্য সরবরাহ করেছেন এবং তিনিই এর জন্য দায়ী।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ