Inqilab Logo

মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

খেয়া পারাপারে জীবন ঝুঁকি

শীতলক্ষ্যায় কার্গো জাহাজের দৌরাত্ম্য

স্টাফ রিপোর্টার, রূপগঞ্জ থেকে : | প্রকাশের সময় : ২৬ জুলাই, ২০২২, ১২:০১ এএম

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে শীতলক্ষ্যায় রাত দিন চলে মালবাহী কার্গো জাহাজ। এছাড়াও রয়েছে, বালিবাহী ট্রলারের চলাচল। আবার এ নদী পারাপারে স্থানীয়দের জন্য রয়েছে ২০টির অধিক খেয়াপারাপারের ঘাট। এসব ঘাট দিয়ে শীতলক্ষ্যার উভয় পাড়ের হাজারো লোক চলাচল করে নিয়মিত। কিন্তু বিশালাকার জাহাজের চলাচলের মাঝখান দিয়ে ছোট ছোট ডিঙ্গি নৌকা চলাচলে প্রায়ই ঘটে নৌদুর্ঘটনা। এতে প্রাণ হারায় নদী পারাপারকারী অনেকে।
সরেজমিনে ঘুরে জানা যায়, শীতলক্ষ্যা নদীতে ২০টি খেয়া পারাপার ঘাট রয়েছে। সেই প্রাচীন কাল থেকেই নদীর আশপাশে বসবাস ও নদী কেন্দ্রীক জীবন জীবিকা নির্বাহে ব্যস্ত লোকজন এপাড় ওপাড় যাতায়াত করে থাকে।তাই নদীর এপাড় ওপাড়ে যাতায়াত বাহন হিসেবে রয়েছে ডিঙ্গি বা গোদারা জাতীয় ছোট নৌকা। এসব নৌকায় একসঙ্গে ৫ থেকে ১০ জন বহনের ক্ষমতা থাকলেও ১২ থেকে ১৫ জন পারাপারের দৃশ্যও দেখা গেছে। আবার এ নদী দিয়ে স্থানীয় শিল্প কারখানা ও আবাসন কোম্পানির বালি ও পাথর বহনের কাজে চলাচল করে কার্গো জাহাজ ও বালিবাহী ট্রলার। এসব জাহাজ ও ট্রলারগুলো বেপরোয়া গতিতে চলাচল করায় ওই নদীতে চলাচলরত ডিঙ্গি নৌকার মাঝি ও যাত্রীরা থাকে চরম আতঙ্কে। কাঞ্চন পৌর এলাকার একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত যাতায়াতকারী শিক্ষার্থীরা এমন ঝুঁকি থাকায় ছেড়েছে নামীদামী স্কুল। আশপাশের স্কুলেই লেখাপড়া করতে বাধ্য হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ছোয়াদ নামের স্কুল শিক্ষার্থী। একইভাবে দাউদপুর খেয়াঘাটের ইজারাদার উজ্জল মিয়া বলেন, আমরা সরকারি শর্ত পূরণ করে ঘাট ইজারায় পরিচালনা করে আসছি। কিন্তু নদীতে বড় বড় জাহাজ চলাচলের কারণে খুব প্রয়োজন না পড়লে কেউ পার হতে চায় না। তাই আমাদের ইজারার টাকা ওঠা নিয়ে শঙ্কায় রয়েছি।
অভিযোগ রয়েছে, নদীতে চলাচলরত জাহাজগুলো নিয়ন্ত্রণে নৌ পুলিশের তৎপরতা নেই রূপগঞ্জ অঞ্চলে। তাই থানা পুলিশকেই মাঝে মধ্যে যে কোন সমস্যা হলে মোকাবেলা করতে হয়। এ বিষয়ে রূপগঞ্জ থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এএফএম সায়েদ বলেন, আমরা থানা পুলিশের কাজ নিয়েই ব্যস্ত থাকি। এরমাঝে নদীতে কোন সমস্যা হলে বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নজরদারী করতে হয়। তবে এসব দেখভালের জন্য নৌ পুলিশ রয়েছে।
এদিকে খেয়াঘাটে ইজারা পাওয়ার নির্ধারিত শর্ত ফরমে প্রতিটি ঘাটে ২টি করে গুদারা বা সরকারিভাবে পারাপারের ব্যবস্থার কথা থাকলেও বাস্তবে দেখা যায়নি তা। ইজারা প্রাপ্তরা ঘাটের ডিঙ্গি মাঝিদের সাথে চুক্তি করে যাত্রীদের সে সুবিধা থেকে বঞ্চিত করে রাখে। কিন্তু টোল আদায় থামে না। তাদের চাহিদা মতো টোল না দিয়ে লাঞ্চিত হতে হয় বলে রয়েছে অভিযোগ।
সরেজমিনে আরো দেখা যায়, কোথাও নেই গুদারা (সরকারি ডিঙ্গি নৌকা ) যদিও কোথাও থাকে তা সংশ্লিষ্ট ঘাটের ইজারাদার বন্ধ রেখেছে। প্রতিটি ঘাট দিয়ে নুন্যতম গড়ে ২০০ থেকে ৫ হাজার লোকের যাতায়াত হয়। তাদের থেকে রাখা নূন্যতম ৩ টাকা করে ৬ টাকা নেয়ার নিয়ম থাকলেও ৫ টাকা করে ১০ টাকা নেয়ারও রয়েছে অভিযোগ।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ নুসরাত জাহান বলেন, কোন ইজারাদার অনিয়ম করে থাকলে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আর জাহাজের বেপরোয়া গতি বা তাদের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকলে তা সংশ্লিষ্ট বিভাগ দেখবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ