Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

হুমকিতে কুষ্টিয়া-ঈশ্বরদী মহাসড়ক

স্টাফ রিপোর্টার, কুষ্টিয়া থেকে : | প্রকাশের সময় : ২৫ জুলাই, ২০২২, ১২:০১ এএম

কুষ্টিয়ায় প্রায় নয় কিলোমিটার জুড়ে পদ্মা নদীতে অসময়ে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভেড়ামারার বার মাইল এলাকা ও মিরপুর উপজেলার বহলবাড়িয়া, সাহেবনগর ও আশপাশে ভাঙছে নদী। এতে ইতোমধ্যেই বিলীন হয়েছে কয়েক হাজার বিঘা জমি। এছাড়াও হুমকির মধ্যে রয়েছে উত্তরবঙ্গের সঙ্গে যোগাযোগের একমাত্র সড়ক কুষ্টিয়া-ঈশ্বরদী মহাসড়ক। শুস্ক মৌসুমে নদী ভাঙনের এমন ভয়াবহ রূপ এর আগে কখনও দেখেননি বলে জানান কুষ্টিয়াবাসী।

স্থানীয় স্কুল শিক্ষক মওদুদ আহমেদ রাজীব বলেন, ভাঙনের মাত্রা অনেক বেশি। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে এখানকার স্কুল, কলেজ, মাদরাসা, মসজিদসহ বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি অবকাঠামো বিলীন হওয়ার আশঙ্কায় আছে। এখানে ভাঙন যে তীব্র আকার ধারণ করেছে, তাতে শত শত মানুষ রাতে না ঘুমিয়ে বসে থাকে। তাদের মনে শঙ্কা- কখন যে ঘরবাড়ি সড়াতে হয়।

এদিকে স্থানীয় বাসিন্দারা ভাঙনের প্রতিকার চেয়ে মানববন্ধন করেছেন। তারা জানান, নদী থেকে অপরিকল্পিত ও অবৈধভাবে বালি উত্তোলনের কারণেও নদীভাঙন দেখা দিয়েছে। এদিকে আয়ের একমাত্র উৎস ফসলি জমি হারিয়ে নদীতীরবর্তী জনপদের মানুষগুলো চরম বিপদের মধ্যে রয়েছেন।

মিরপুর উপজেলার সাহেবনগর গ্রামের বৃদ্ধা সরিজান নেছা বলেন, বাবারে এর আগে আরও তিনবার গাঙ্গের ভাঙনে ঘরবাড়ি হারায়ে এই গ্রামে আইসি। আর কয়দিনি বা বাঁচপো মরার আগে এই বাড়িডাও মনে হচ্ছে আর থাকপি না। সরকার যদি এই ভাঙন ঠেকানির কাজ করি দিতি তালি আর ভাঙবি না।

পাউবোর কুষ্টিয়ার তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আব্দুল হামিদ ইনকিলাবকে বলেন, পদ্মার ডান তীর ভাঙনের ঝুঁকি কয়েক বছর আগে থেকেই দেখা দিয়েছে। এবারের বন্যার পানি কমে যাওয়ার পর একদিকে নদীর মাঝখানে চর জেগে উঠেছে। অন্যদিকে পদ্মার বাম তীরে রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র রক্ষায় নদীর প্রায় আড়াইশ থেকে ৩শ মিটার ভেতরে এসে গ্রোয়েন করার কারণে নদীর গতিপথের পরিবর্তন হয়েছে। এ কারণে অসময়ে পদ্মার ওই এলাকায় ভাঙন দেখা দিতে পারে। সমস্যা সমাধানে ইতোমধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ড উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা বা ডিপিপি পাঠিয়েছে। সেটা প্রি-একনেক থেকে আবার সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ভাঙন ঠেকাতে আপাতত জরুরি ভিত্তিতে বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।

কুষ্টিয়া সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শাকিরুল ইসলাম ইনকিলাবকে বলেন, কুষ্টিয়াসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ১০ জেলার সঙ্গে উত্তর বঙ্গ ও ঢাকার যোগাযোগ রক্ষাকারী একমাত্র মহাসড়কটি পদ্মার ভাঙনে ঝুঁকির মধ্যে আছে। ইতোমধ্যে কয়েকটি স্থান নদীর পাড় থেকে মাত্র ১৫০ থেকে ২০০ মিটার দূরত্বের মধ্যে চলে এসেছে, যা দুই বছর আগেও অন্তত ২ কিলোমিটার দূরে ছিল। বিষয়টি জানিয়ে ঊর্ধ্বতন মহলে চিঠি দিয়েছি। তাছাড়া বিষয়টি নিয়ে কুষ্টিয়া পাউবো কর্মকর্তাদের সঙ্গেও আমি কথা বলেছি। তারা ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নেবেন বলে জানিয়েছেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ