রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
লক্ষীপুরের রামগতি উপজেলার আলেকজান্ডার বাজার খালটি স্থানীয় প্রভাবশালীরা দখল করে ময়লা আবর্জনা ফেলে খালটি ভরাট করে রেখেছে। এতে পৌর শহরের পানি নিষ্কাশনে কোন ব্যবস্থা না থাকা জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়।
জানা যায়, আলেকজান্ডার বাজার, শ্যামলগ্রাম, শিক্ষাগ্রাম ও সমবায় গ্রামের অত্যন্ত জনগুরুত্বপূর্ণ তিনটি খালে ময়লা-আবর্জনা ফেলে অবৈধ দোকানঘর ও ভবন উত্তোলন করে দখল করে ফেলেছে বাজারের প্রভাবশালীরা। এতে পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় সামান্য বৃষ্টিতে পানিবদ্ধতায় কৃষকের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে এবং লক্ষাধিক লোক পানিবন্দি হয়ে পড়ে।
এদিকে দীর্ঘদিন পানিবদ্ধতার শিকার খালটি পুনঃরুদ্ধারে উপজেলা প্রশাসনের কোন প্রচেষ্টা না থাকায় বাজার ব্যবসায়ী, কৃষক ও সাধারণ মানুষের মাঝে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করেছে। উপজেলা সদর আলেকজান্ডার বাজারের মাঝখান দিয়ে বয়ে যাওয়া খালগুলো মেঘনা নদীর সাথে সরাসরি সংযোগ থাকায় বর্ষা মৌসুমে পৌরসভার এবং উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের পানি চলাচল করতো এ খাল দিয়ে। দীর্ঘদিন থেকে বাজারের কিছু আসাধু ব্যবসায়ী ও দোকান মালিকরা পরিকল্পিতভাবে ময়লা আবর্জনা ফেলে খালের দুই পাড় দখল করে দোকানঘর ও ভবন নির্মাণ করেন। ফলে পানির প্রবাহ বন্ধ হয়ে যায়। পানির প্রবাহ বন্ধ হওয়ার কারণে প্রতিবছর কয়েকটি ইউনিয়নের সাধারণ কৃষকদের সয়াবিন, আউষ ধান, আমনের বীজতলাসহ সকল ধরনের ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়। এ নিয়ে বিভিন্ন সময়ে এলাকাবাসী উপজেলা প্রশাসনকে উক্ত খালগুলো দখল মুক্ত করার জন্য অভিযোগ করে কোন কাজ হয়নি। উপরন্তু খালের ওপর নির্মিত দোকান থেকে আয়ের বিরাট অংশ দলীয় নেতাকর্মীসহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্তাব্যক্তিরা ভাগ পান বলে অনেকে জানান। উপজেলা প্রশাসনের কোন সহযোগীতা না পাওয়ায় এতে স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। উপজেলা পরিষদ, রামগতি পৌরসভা, আলেকজান্ডার বাজার, চরআলগী ইউনিয়নের প্রায় ২৫ জন কৃষকের সাথে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া যায়।
কৃষক রুহুল আমিন, নোমান হোসেন, সামছুল আলম, রফিক উল্যাহ, আলী হায়দর, সিরাজ, বাহার, শাহাবুদ্দীনসহ অনেকে জানান, পানিবদ্ধতার কারণে তাদের সয়াবিন, আউস, আমন ধানসহ সকল ধরনের ফসল নষ্ট হয়ে যায়। প্রতিবছরই তারা ধার দেনা করে ফসল ফলান। পানিবদ্ধতার করণে ফসল নষ্ট হওয়ায় প্রতিবছরই তাদের ধারদেনা বাড়ছে। সরকার এ খাল দখলমুক্ত এবং খনন করে পানির প্রবাহ সচল না করলে কৃষিকাজ ছেড়ে দেওয়া ছাড়া তাদের আর কোন উপায় থাকবেনা বলে জানান তারা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় পৌর এক কাউন্সিলর জানান, খাল দখল উচ্ছেদ ও খননের জন্য এলাকাবাসীকে সাথে নিয়ে বিভিন্ন কর্মসূচি ও কার্যক্রম গ্রহণ করার উদ্যোগ নিলেও প্রশাসনের সহযোগিতা না পাওয়ায় তা উচ্ছেদ করা সম্ভব হয়নি। অতিবৃষ্টির কারণে পানিবদ্ধতায় এ এলাকার প্রায় কোটি টাকার সয়াবিন নষ্ট হয়। পানিবদ্ধতায় পৌরসভার প্রায় প্রতিটি ওয়ার্ডের লোকজনের অনেকটা পানিবন্দী থাকতে হয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম শান্তনু চৌধুরী জানান, খাল দখলের বিষয়টি আমরা অবগত আছি। এ ব্যাপারে অচিরেই পরিদর্শন শেষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।