Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বৃদ্ধ আনোয়ার ব্যাপারীর কান্নায় এসআই’র মন গলেনি

মেয়ে হত্যার বিচার চেয়ে সংবাদ সম্মেলন

বাগেরহাট জেলা সংবাদদাতা : | প্রকাশের সময় : ২৩ জুলাই, ২০২২, ১২:০৩ এএম

প্রতিবেশির মাধ্যমে মেয়ের মৃত্যু সংবাদ পান বয়োবৃদ্ধ পিতা আনোয়ার হোসেন ব্যাপারি। প্রথমে তিনি বিশ্বাস করতে পারেন নি। পরে পাগলের মত হাসপাতালে ছুটে যান, কিন্তু সেখানে গিয়ে জানতে পারেন, তার মেয়ের লাশ মোংলা থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। থানায় গিয়ে মেয়ের নিথর লাশ দেখে যেন তার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে। চিৎকার দিয়ে একপ্রকার জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন তিনি।

হাতপাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় মারপিট ও আঘাতের চিহ্ন দেখে তিনি চিৎকার করে বার বার বলতে থাকেন তার মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে। হাউমাউ করে কাদতে কাদতে মোংলা থানার এসআই বাহারুলকে বার বার বলতে থাকেন তার মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে। তার কান্নায় স্থানীয়দের চোখে পানি আসলেও মন গলেনি এসআই বাহারুলের। তিনি একটি কাগজ এনে বলেন, এখানে স্বাক্ষর করেন, আপনার মেয়ের লাশ ময়না তদন্ত করতে হবে। এসময় তিনি হত্যা মামলা দায়ের ও জামাই মহিদুল শেখকে আটক করতে বলেন। কিন্তু দারোগা বাহারুল তার কথার কোন গুরুত্ব দেননি।

গত বৃহস্পতিবার দুপুরে বাগেরহাট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেন জেলার মোংলা উপজেলার সুন্দরবন ইউনিয়নের বৈদ্যমারি গ্রামের হতভাগা আনোয়ার ব্যাপারি। এসময় কান্না জড়িত কন্ঠে বৃদ্ধ আনোয়ার ব্যাপারি তার মেয়ে তাসলিমা বেগমের হত্যাকারীদের বিচারের দাবি জানান।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি উল্লেখ করেন, প্রায় ১০ বছর আগে মোংলা উপজেলা সুন্দরবন ইউনিয়নের গোরাবাসতলা গ্রামের সেকেন্দার শেখের ছেলে মহিদুল শেখের (৩০) সাথে পারিবারিকভাবে তার ছোট মেয়ে তাসলিমা বেগমের (২৫) বিয়ে হয়। তাদের সংসারে সাব্বির (৭) নামের একটি ছেলে ও সামিয়া (৩) নামের একটি মেয়ে রয়েছে। মহিদুল একজন মাদকসেবী ও পেশাদার জুয়া খেলোয়ার। বিয়ের পর থেকে বিভিন্ন সময় মহিদুল শেখ তাসলিমাকে মারধর ও নানাভাবে অত্যাচার করত। এসব বিষয় নিয়ে স্থানীয়ভাবে ও থানা পুলিশের মাধ্যমে কয়েকবার সালিস-বৈঠকও হয়েছে। তারপরও জামাই মহিদুল ভালো হয়নি এবং পুনরায় অত্যাচার নির্যাতন চালিয়ে যেতে থাকে। অবুজ দু’টি সন্তানের কথা চিন্তা করে তাসলিমা শত অত্যাচার নির্যাতন সহ্য করে সংসার চালিয়ে যেতে থাকে। এরই মধ্যে গত ১৪ জুলাই দুপুরে কোন এক সময় তার মেয়ে তাসলিমা বেগমকে মারপিট হত্যা করে গোপনে হাসপাতালে লাশ ফেলে পালিয়ে যায়। পরে পুলিশের সাথে সে যোগাযোগ করে। এসআই বাহরুল হত্যাকারীদের বাঁচাতে কাজ করছে বলে অভিযোগ করেন আনোয়ার হোসেন ব্যাপারি। মোংলা থানার এসআই বাহারুল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, হাসপাতাল থেকে খবর পেয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্ত করা হয়েছে। শরীরে আঘাতের কোন চিহ্ন না থাকায় হত্যা মামলা দেয়া হয়নি। ওসি মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, গৃহবধূ তাসলিমার পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে তার লাশ ময়না তদন্ত করা হয়েছে। ময়না তদন্তের রির্পোট পেলে এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ