Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

গোদাগাড়ীতে ৬ বছরে গবাদিপশুর ব্যাপক উন্নয়ন

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৮ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

মো: হায়দার আলী, গোদাগাড়ী (রাজশাহী) : রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা, কর্মচারীদের ব্যাপক নজরদারী, সহযোগিতার কারণে গত ৫ বছরে পবাদিপশু, হাঁস-মুরগী, কবুতরের সংখ্যা কয়েকগুণ বৃদ্ধি পাওয়ায় অনেকে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন হয়েছেন। শিক্ষিত বেকার যুবক-যুবতীরা, গৃহবধূ, কৃষক, মৌসুমী ব্যবসায়ীরা পরিকল্পিত, স্বাস্থ্যসম্মতভাবে গবাদিপশু পালন, মোটাতাজাকরণে দিকে ঝুঁকে পড়েছেন।
উপজেলার গোদাগাড়ী পৌরসভা, কাঁকনহাট পৌরসভা, মাটিকাটা, চর আষাড়িয়াদহ, গোগ্রাম, মোহনপুর, দেওপাড়া, পাকড়ী, গোদাগাড়ী ও রিশিকুল ইউনিয়নের প্রত্যন্ত অঞ্চলে দেশী ও শংকর (উন্নত) জাতের গবাদিপশু পালন করা হচ্ছে। উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, গোদাগাড়ী উপজেলার আয়াতন ১৮৪ দশমিক ৮৭ বর্গমাইল। আবাদি জমির পরিমাণ ৩৫ লাখ ৭শ’ হেক্টর, বøকের সংখ্যা ২৭টি, মৌজার সংখ্যা ৩শ’ ৯৪টি, গ্রাম ৪শ’ ৩০টি, লোক সংখ্যা ৩ লাখ ৩৮ হাজার, ৫৫ জন (প্রায়), পুরুষ ১ লাখ, ৬৫ হাজার ৬৬ জন এবং মহিলা ১ লাখ ৭২ হাজার ৯শ’ ৮৯ জন। শিক্ষার হার ৫২ দশমিক ২৭ ভাগ। কৃষক পরিবারের সংখ্যা ৭২ হাজার ২শ’ ৮০ জন। ২০০৯-২০১০ অর্থবছরে গোদাগাড়ীতে গরু ছিল ৫৭ হাজার ২শ’ ৬১টি, মহিষ ৬ হাজার ৯শ’ ৮২টি, ছাগল ৫০ হাজার ৯শ’ ৯৩টি, ভেড়া ১০ হাজার ৬শ’ ৬১টি, মোরগ-মুরগী ১ লাখ ২ হাজার ৫শ’ ২০টি, পাতি হাঁস ২১ হাজার ৫শ’ ৬০টি, রাজহাঁস ৫ হাজার ৯শ’টি, কবুতর ৬ হাজার ৪শ’ ৪০টি। গবাদি পশুর চামড়া ১৫ হাজার ৭৩ পিস, কৃত্রিম প্রজনন ৪ হাজার ৯শ’ ৬৬টি ২০১৫-২০১৬ অর্থ বছরে বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে গরু ২ লাখ ৩৪ হাজার ৬শ’ ২৫টি, মহিষ ১৩ হাজার ৪শ’ ২৫টি, ছাগল ২ লাখ ১৫ হাজার ৯শ’ ৯টি, ভেড়া ১৭ হাজার ৬শ’ ১১টি, মোরগ-মুরগী ৩ লাখ ৬৬ হাজার ১শ’ ৫৯টি, পাতি হাঁস ৪৮ হাজার ৫২টি, রাজহাঁস ১২ হাজার ২শ’, ২২টি, কবুতর ১৪ হাজার ৭শ’ ২০টি। এদিকে ২০০৯-২০১০ এ দুধ মাংশ ও ডিম পাওয়া যেত দুধ দশমিক শূন্য ৪ লাখ মেট্রিক টন, মাংশ দশমিক শূন্য ২৭ লাখ মেট্রিক টন, ডিম দশমিক শূন্য ২৮ লাখ মেট্রিক টন। ২০১৪ -২০১৫ তে তা বেড়ে দাঁড়ায় দুধ দশমিক শূন্য ১৯ লাখ মেট্রিক টন, মাংশ দশমিক শূন্য ১০৬ লাখ মেট্রিক টন, ডিম ২ দশমিক ৭ শূন্য লাখ মেট্রিক টন। এসব গবাদি পশু থেকে চামড়া পাওয়া গেছে ১ লাখ ৮৫ হাজার ৪শ’ ৪০টি, কৃত্রিম প্রজনন ৯ হাজার ৭৫টি। গোদাগাড়ীর বিভিন্ন গাভী ও ছাগল খামারীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ড. মো: সাইফুল ইসলামসহ অফিসের কর্মকর্তা খুবই আন্তরিক, তারা মাঠ পর্যায়ে গিয়ে পরামর্শ উপদেশ দেন এমন কি অফিসে গিয়েও আমরা ভাল সহযোগিতা পাই বলেই আমরা দিন দিন খামারে উন্নতি করচ্ছি। বর্তমানে গাভীর ৯৬টি, ছাগলের খামার ৮১টি, ভেডার খামার ৬৯টি, হাঁসের খামার ১৮টি, লেয়ার মুরগীর খামার ৪টি, ব্রয়লার মুরগীর খামার ৮০টি, কবুতরের খামার ৭টি, পোল্ট্রি হ্যাচারী ১টি, মহিষ খামার ৭৮টি রয়েছে।
প্রত্যেকটি খামারে আমরা যোগাযোগ রক্ষা করি, তারাও আমাদের সাথে যোগাযোগ করে, যথাসময়ে ব্যবস্থাপত্র, পরামর্শ প্রদান করা হয়ে থকে দিন দিন গবাদিপশু পালন বৃদ্ধি পাচ্ছে খামারীরা লাভবান হচ্ছেন। দেওপাড়া ইউনিয়নের গবাদিপশু পালনকারী আজিজার রহমান জানান, আমার বাড়ী ১৭টি ষাঁড় আছে বছরে ৩ বার পরিবর্তন করে মাসে খাবার, লেবার ও অন্যান্য খরচ বাদ দিয়ে ২০ হাজার টাকা আয় হয়, গরু মোটাতাজাকরণ করার বিষয়টি বেকার যুবসমাজসহ বিভিন্ন বয়সের মাঝে বেশ জনপ্রিয় হয়েছে। রাজাবাড়ীহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের কম্পিউটার শিক্ষক মো: মতিয়ার রহমান এ প্রতিবেদককে বলেন, গত ঈদ মৌসুমে ৪টি গরু বিক্রি করে ১ লাখ ৯ হাজার টাকা লাভ হয়েছে। স্বল্প সময়ে বেশী লাভ হাওয়ায় গরু মোটাতাজা করার প্রকল্পটি বেশ জনপ্রিয় হয়েছে গ্রামে পশু হলেও পালন করার চেষ্টা করছেন। গোদাগাড়ী প্রাণিসম্পদ অফিস কমিউনিটি ক্লিনিকের মত ইউনিয়ন পর্যায়ে সম্প্রসারণ, লোকবল বৃদ্ধি, যানবাহনের সুবিধা বাড়ালে প্রাণিসম্পদ সেক্টরে আরও উন্নয়ন সম্ভব। চাহিদা পূরণে চেষ্টা করা হচ্ছে ঘাটতি দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ড. মো: সাইফুল ইসলাম জানান, পূর্বে এ উপজেলায় ১০ হাজার ২শ’ জনের প্রত্যক্ষ কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা ছিল এখন বেড়ে হয়েছে ৪০ হাজার ৬শ’ ৫৫ জনে। প্রাণিসম্পদের আর্থিক মূল্যমান ছিল ৮শ’ ৩০ দশমিক ২৩ কোটি টাকা বর্তমানে তা বেড়ে হয়েছে ১ হাজার ৩শ’ ২০ দশমিক ৪৯ কোটি টাকা, তিনি আরও বলেন, নিরাপদ গোÑমাংশ উৎপাদনে গরু হৃষ্টকরণ (মোটাতাজাকরণ) প্রক্রিয়াটি বেশ সাড়া পড়েছে সুস্থ, সবল ও বাড়ন্ত গরুকে একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বিশেষ ব্যবস্থায় এবং সুষম খাদ্য সরবরাহ করলে শরীরে অধিক পরিমাণ মাংশ বৃদ্ধি পায়, ফলে স্বল্প পুঁজিতে কম সময়ে অধিক লাভ হয়, দারিদ্র্য বিমোচন, বেকারত্ব দূর হয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: উন্নয়ন

২৩ ডিসেম্বর, ২০২২
১৮ ডিসেম্বর, ২০২২
২৮ অক্টোবর, ২০২২
২ সেপ্টেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ