Inqilab Logo

শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১, ০১ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

একদিকে লোডশেডিং অন্যদিকে অপচয়

অর্থনৈতিক রিপোর্টার : | প্রকাশের সময় : ২২ জুলাই, ২০২২, ১২:০২ এএম

জ্বালানি সাশ্রয়কে কেন্দ্র করে একদিকে সরকারের পক্ষ থেকে দেয়া হয়েছে লোডশেডিংয়ের মন্ত্র। অন্যদিকে মাঝ রাতেও রাজধানীর মতিঝিল, পল্টনসহ বিভিন্ন এলাকায় দেখা যায় আলোর ঝলকানি। এমনকি রাতে চলাচলের সুবিধা ও নিরাপত্তার স্বার্থে ব্যবহৃত ল্যাম্পপোষ্টে সকাল গড়িয়ে দুপুরেও জ্বলছে বাতি। অযাচিত এ অপচয়ের ভিড়ে অনিয়ন্ত্রিত লোডশেডিংয়ে রাজধানীসহ সারাদেশের মানুষের যেন ভোগান্তির শেষ নেই। শিডিউল লোডশেডিংয়ের কথা থাকলেও তা শুধুমাত্র কাগজে-কলমেই। ঢাকার বাইরে লোডশেডিং সূচি বলে কিছু ছিল না। যখন খুশি তখন বিদ্যুৎ গেছে। একাধিকবার লোডশেডিংয়ের কারণে কয়েক ঘণ্টা করে বিদ্যুৎ ছিল না। তবে রাজধানীতে বিকেল পর্যন্ত সূচি ধরে লোডশেডিং চললেও সন্ধ্যায় শিডিউল লন্ডভন্ড হয়ে যায়।

সরেজমিনে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরেও কলেজগেটের সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল হাসপাতালের সামনের ফুটওভার ব্রিজ ও সংলগ্ন ল্যাম্পপোষ্টে আলো জ্বলতে দেখা গেছে। দেশ যেখানে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের পথে হাঁটছে, সেখানে দিন দুপুরে ১০-১২টি বাতির কি প্রয়োজনীয়তা-এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাদের দাবি, যখন বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের ইস্যুতে সরকার অনিয়ন্ত্রিত লোডশেডিং দিচ্ছে, সেসময় জনগনের ট্যাক্সের টাকার এমন অপচয় মেনে নেয়া যায় না। এছাড়া সরকারি বিভিন্ন ভবনের এসি বিলাসতো আছেই।
এর আগে গত বুধবার রাতে রাজধানীর মতিঝিল এলাকার বিভিন্ন পয়েন্টে দেখা গেছে বিদ্যুৎ অপচয়ের মহোৎসব। স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় অতিরিক্ত আলোকসজ্জায় সজ্জিত ছিল পেট্রল পাম্পগুলো, নটরডেম কলেজ সংলগ্ন এলাকায় বিভিন্ন বাণিজ্যিক ভবনে রাত ৯টার পরেও দোকানপাট খোলা রাখতে দেখা যায়। এছাড়া পল্টন, মগবাজার, মৌচাক, নাবিস্কো, মহাখালী বাস টার্মিনাল এলাকা, বনানী, গুলশান এলাকায়ও বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের জন্য যে পদক্ষেপ তার বাস্তবায়ন দেখা যায়নি।
অন্যদিকে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে সরকার নির্ধারিত যে রুটিনে দেশে লোডশেডিং হওয়ার কথা, তা হচ্ছে না। ঘোষিত রুটিনের বাইরেও রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় হরদম লোডশেডিং হচ্ছে। কোথাও কোথাও আধঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকলে আবার কয়েক ঘণ্টা থাকছে না। ফলে এ গরমে মানুষ যেমন ঘরে থাকতে পারছে না, তেমনি ব্যবসা বাণিজ্যেও প্রভাব পড়েছে। এর সঙ্গে গরম মানুষের দুর্ভোগ আরো বাড়িয়ে দিচ্ছে। লোডশেডিং চলাকালে প্রচণ্ড গরমে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। ব্যাহত হয় কলকারখানার উৎপাদন ব্যবস্থা। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীরা গরমে ক্লাসে মনোযোগ দিতে পারেনি। করোনার টিকা সংরক্ষণেও বিপত্তি দেখা দেয়।
সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, প্রয়োজনের অতিরিক্ত বিদ্যুৎ ব্যবহার বাস্তবতা-বিবর্জিত। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে সারাবিশ্বের জ্বালানি খাতের অবস্থাই টালমাটাল। তাই বর্তমানে জ্বালানির সাশ্রয় করা ছাড়া বিকল্প কোন উপায় নেই। দেশের স্বার্থে এবং নিজের স্বার্থেই সবাইকে সচেতন হওয়ার পরামর্শ তাদের।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ