Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মামলা তুলে নিতে বাদীকে প্রাণনাশের হুমকি ও বাড়ীতে বহিরাগত সন্ত্রাসী নিয়ে মহড়া!

বরগুনা জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২১ জুলাই, ২০২২, ৭:৪৭ পিএম

বরগুনার আমতলীতে জমিজমা নিয়ে দুই ভাইয়ের বিরোধে ছোট ভাইয়ের স্ত্রীকে মারধরের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলা তুলে নিতে প্রাণনাশের হুককি দিয়ে আসছে অভিযুক্ত গ্রাম পুলিশ ফোরকান মোল্লা। আজ বৃহস্পতিবার বহিরাগত সন্ত্রাসী ভাড়া করে বাড়ীতে মহড়া দেওয়ার অভিযোগও পাওয়া গেছে তার বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় আমতলী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার আঠারোগাছিয়া ইউনিয়নের গেরাবুনিয়া গ্রামের আয়েজ উদ্দিন মোল্লার পুত্র গ্রাম পুলিশ ফোরকান মোল্লা ও তার ছোট ভাই হাবিব মোল্লার সাথে পৈতৃক সম্পত্তির ভাগ ভাটোয়ারা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। ওই বিরোধকে কেন্দ্র করে গত ৩ মাস পূর্বে গ্রাম পুলিশ ফোরকান মোল্লা তার ছোট ভাইয়ের স্ত্রী তাসলিমা বেগমকে পিটিয়ে হাত ভেঙ্গে দেয়। ওই ঘটনায় তাসলিমা বেগম বাদী হয়ে গ্রাম পুলিশ ফোরকান মোল্লা ও তার পালক পুত্র নেছার মোল্লাকে আসামী করে আমতলী থানায় একটি হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের করে। পুলিশ তদন্ত করে ওই মামলায় সত্যতা পেয়ে গ্রাম পুলিশ ফোরকান মোল্লাকে অভিযুক্ত করে গত ৩১মে আদালতে চার্জসিট দাখিল করেন।

গতকাল বুধবার বিকেলে ফোরকান মোল্লা ওই মামলার চার্জসিটের সংবাদ পেয়ে ও মামলা তুলে নিতে তার পুত্র নেছার মোল্লা, স্ত্রী হেপী বেগমসহ ৯/১০ জন মামলার বাদী তাসলিমা বেগমকে দা, লাঠিসোটা নিয়ে ধাওয়া করে। তাসলিমা দৌড়ে বসত ঘরের মধ্যে ঢুকে দরজা আটকে দেয়। এ সময় তারা বসত ঘরের বেড়া ভাংচুর করে। এ ঘটনায় তাসলিমা বেগমের স্বামী হাবিব মোল্লা বুধবার সন্ধ্যায় গ্রাম পুলিশ ফোরকান মোল্লাসহ ১০ জনকে অভিযুক্ত করে আমতলী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। এরপর আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ফোরকান মোল্লা তাদের বাড়ীতে বহিরাগত ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী এনে মহড়া দিয়ে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে ভয়ভীতি প্রর্দশন করেছে বলে অভিযোগকারী জানায়।

চার্জসিট হওয়া মামলার বাদী তাসলিমা বেগম মুঠোফোনে বলেন, আমার ভাসুর ফোরকান মোল্লার সাথে আমার স্বামী হাবিব মোল্লার পৈতৃক সম্পত্তির ভাগ ভাটোয়ারা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। ওই বিরোধকে কেন্দ্র করে গত ৩ মাস পূর্বে আমার ভাসুর গ্রাম পুলিশ ফোরকান মোল্লা আমাকে পিটিয়ে হাত ভেঙ্গে দেয়। ওই ঘটনায় আমি বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করি। ওই মামলায় তিনি দীর্ঘদিন জেল হাজতে থাকার পর জামিনে বের হওয়ার পর আমাকে মামলা তুনে নিতে হুমকি দিয়ে আসছে। সম্প্রতি আমার দায়েরকৃত মামলার সত্যতা পেয়ে পুলিশ আদালতে চার্জসিট দাখিল করে। এ সংবাদ পেয়ে মঙ্গলবার বিকেলে আমাকে মামলা তুলে নিতে ও খুন জখমের উদ্দেশ্যে তার পালক পুত্র নেছার মোল্লা, স্ত্রী হেপী বেগমসহ ৯/১০ জন আমাকে দা, লাঠিসোটা নিয়ে ধাওয়া করে। দৌড়ে বসত ঘরের মধ্যে ঢুকে দরজা আটকে দেই। এ সময় তারা বসত ঘরের বেড়া ভাংচুর করে।

অভিযোগকারী হাবিব মোল্লা বলেন, পূর্বের মামলার চার্জসিটের সংবাদ পেয়ে আমার বড় ভাই গ্রাম পুলিশ ফোরকান মোল্লাসহ ৯/১০ জন আমার স্ত্রী তাসলিমা বেগমকে মামলা তুলে নিতে ও খুন জখমের জন্য লাঠি দিয়ে পিটিয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে। পরে দা, লাঠিসোটা নিয়ে ধাওয়া করে। আজ দুপুরে ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী এনে বাড়ীতে মহড়া দিয়েছে। তার ভয়ে আমি বাড়ীতে যেতে পারিনা।

অভিযুক্ত বড় ভাই গ্রাম পুলিশ ফোরকান মোল্লা তার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় চার্জসিট হওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, আমার বিরুদ্ধে নতুন করে আনা সকল অভিযোগ মিথ্যা।

আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একেএম মিজানুর রহমান বলেন, ওই ঘটনায় থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে। তদন্ত করে সত্যতা পেলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ