Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

এডিসি লাবণীর মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না খুলনার সহকর্মীরা

খুলনা ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ২১ জুলাই, ২০২২, ৫:০৮ পিএম

খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশে (একএমপি) কর্মরত অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনার (ডিবি) খন্দকার লাবণী মাগুরায় গ্রামের আত্মহত্যা করেছেন। বুধবার (২০ জুলাই) রাতে গলায় ওড়নায় ফাঁস নিয়ে তিনি আত্মহত্যা করেন। কী কারণে এই অপমৃত্যু তার কোনো কূল কিনারা এখন পর্যন্ত হয়নি। এদিকে, কয়েক ঘন্টার ব্যবধান তার সাবেক দেহরক্ষী কনষ্টেবল মাহমুদুল হাসান আত্মহত্যা করায় রহস্যের জন্ম দিয়েছে। দুটো অপমৃত্যুর মাঝে কোনো যোগসূত্র আছে কি না তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। এর আগেও খন্দকার লাবণী দু বার আত্মহত্যা করার চেষ্টা করেছিলেন বলে তার পরিবার সূত্রে জানা গেছে। ে
এদিকে খন্দকার লাবণীর মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না কেএমপির সহকর্মীরা। তার সহকর্মীরা বলছেন, আত্মহত্যা করার মত কোনো লক্ষণ কখনোই তার মাঝে দেখা যায়নি। তার স্বামী ব্যাংক কর্মকর্তা তারেক আব্দুল্লাহ দীর্ঘ দিন ধরে ক্যান্সারে আক্রান্ত। তার চিকিৎসা চলছে। স্বামীর সাথে কিছুটা কলহ তার ছিল। কিন্তু আত্মহত্যা করার মত অবস্থা খন্দকার লাবণীর ছিল না।
কেএমপির ডিসি (এফ এন্ড বি) মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান বলেন, ঘটনাটি আমাদের সবার জন্য কষ্টদায়ক। যতটুকু তাকে জানতাম, এ ধরণের ঘটনা মেনে নেয়া যায় না। আত্মহত্যা করার মত মন মানসিকতা কখনো তার দেখিনি। তিনি একজন দায়িত্বশীল নিষ্ঠাবান পুলিশ কর্মকর্তা ছিলেন।
কেএমপির এডিসি সোনালী সেন বলেন, খন্দকার লাবণী খুবই ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন একজন নারী ছিলেন। প্রাণবন্ত মানুষ ছিলেন। ছিলেন দক্ষ পুলিশ কর্মকর্তা। মানসিকভাবে খুবই শক্ত ছিলেন। তাই তার এ মৃত্যু আমরা মেনে নিতে পারছি না।
একাধিক সূত্র জানিয়েছে, ছুটিতে গ্রামের বাড়িতে এসে গতকাল এডিসি খন্দকার লাবণী। তিনি মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার ৬নং কাদিরপাড়া ইউনিয়নের বরালিদহ গ্রামের খন্দকার শফিকুল আজমের মেয়ে। লাবণীর স্বামী তারেক আবদুল্লাহ বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী পরিচালক (এডি) হিসেবে কর্মরত। তিনি ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে ভারতে চিকিৎসাধীন। তাঁদের দুটি মেয়ে সন্তান রয়েছে। তাদের সংসারে দুটি কন্যা সন্তান রয়েছে।
নিহত লাবণীর বাবা খন্দকার শফিকুল আজম বলেন, গত ১৭ জুলাই এক সপ্তাহের ছুটিতে লাবণী গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে আসেন। বুধবার লাবণী শ্রীপুর ইউনিয়নের সারঙ্গ দিয়া গ্রামে নানার বাড়িতে অবস্থান করছিল। গভীর রাতে সে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করে। এ ঘটনার ১৫ দিন আগে এবং সপ্তাহখানেক আগে দুই দফায় লাবণী আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিল বলেও জানান তিনি। আত্মহত্যার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে লাবণীর সঙ্গে তার স্বামীর কলহ চলে আসছিল। সংসারে আমার মেয়ে সুখী ছিল না। মূলত সাংসারিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে স্বামীর সঙ্গে লাবণীর বনিবনা হচ্ছিল না। এ কারণেই আমার মেয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে। আত্মহত্যাকারী পুলিশ কনস্টেবল মাহমুদুল হাসানের সঙ্গে লাবণীর অন্য কোনো সম্পর্ক ছিল কিনা- জানতে চাইলে খন্দকার শফিকুল আজম বলেন, এ রকম কোনো বিষয় আমরা আজ পর্যন্ত শুনিনি।
মাগুরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অপরাধ ও প্রশাসন কামরুল হাসান বলেন, দুটি আত্মহত্যার ঘটনার মধ্যে কোনো যোগসূত্র আছে কিনা- সে বিষয়ে আমরা এখনো নিশ্চিত নই। তবে প্রাথমিকভাবে ঘটনা দুটি ভিন্ন ভিন্ন বলেই আমাদের কাছে মনে হচ্ছে।
খুলনা রেঞ্জ ডিআইজি ড. খঃ মহিদ উদ্দিন বলেন, দুটি ঘটনার কোনো যোগ সূত্র আছে কী না, তা আমার জানা নেই। তা ছাড়া আমি তাঁদের চিনিও না। তবে মাগুরার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম বলেছেন, প্রাথমিকভাবে তারা নিশ্চিত দুজনেই আত্মহত্যা করেছেন। আত্মহত্যার কারণ জানতে পুলিশ তদন্ত করছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ