পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সুনামগঞ্জে বিভিন্ন অপরাধে অভিযুক্ত ৫২ টি মামলায় ৬৫ জন শিশুকে কারাগারে না পাঠিয়ে ছয় শর্তে সংশোধনের জন্য মা-বাবার স্নেহ-মমতায় বেড়ে ওঠার আদেশ সহ অব্যাহতি দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে ২৫ দম্পতিকে আবার একসঙ্গে সংসার করার রায় দিয়েছেন। গতকাল বুধবার দুপুরে সুনামগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. জাকির হোসেন এমন দৃষ্টান্তমূলক আদেশ দিয়েছেন।
জানা যায়, সুনামগঞ্জে দাঙ্গাহাঙ্গামা এবং মাদক সেবন ও বহন সহ বিভিন্ন অপরাধে ৫২টি মামলায় ৬৫ জন শিশুসহ পরিবারের অন্য সদস্যদের জড়ানো হয়। পুলিশের দেয়া অভিযোগপত্রে অভিযুক্ত হওয়ায় এসব শিশুদের আদালতে নিয়মিত হাজিরা দিতে হত। এ কারণে শিশুদের ভবিষ্যত ও শিক্ষা জীবন ব্যাহত হচ্ছিল। শিশুদের স্বাভাবিকভাবে বেড়ে ওঠার এই অসুবিধা থেকে মুক্তি দিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে নিতে মামলার নিষ্পত্তি করে দিয়েছেন সুনামগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক।
রায় প্রদানকালে বিজ্ঞ বিচারক বলেছেন, এমনিতেই ভয়াবহ বন্যায় বিপর্যস্ত শিশুজীবন, এর মধ্যে মামলা মোকদ্দমা থাকলে তাদের স্বাভাবিক ও শিক্ষাজীবন ব্যাহত হবে এ ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই। তাই মানবিক দিক বিবেচনা করত: আদালত ছয় শর্তে তাদেরকে মামলা থেকে মুক্তি দিয়েছে। রায় ঘোষণার পর আদালতের পক্ষ থেকে সকল শিশুর হাতে জাতীয় পতাকা, মুক্তিযুদ্ধের বই, ফুল ও ডায়রি তুলে দেয়া হয়।
আদালতের দেওয়া ছয় শর্তে বলা হয়েছে, বই পড়ে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানা, কম্পিউটার প্রশিক্ষণ, হাঁস-মুরগি ও গবাধি পশু পালন, এসি-টিভি মোবাইল সার্ভিসিংয়ের যেকোনো একটি বিষয়ে কারিগরি বা বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ গ্রহণ ও প্রতিদিন দুইটি ভালো কাজ করে আদালতের দেওয়া ডায়রিতে লিখে রাখতে হবে। প্রত্যেকে কমপক্ষে ২০টি করে গাছ লাগিয়ে পরিচর্যা, ধর্মকর্ম করা এবং বাবা-মায়ের আদেশ নির্দেশ মেনে চলা, মাদক থেকে দূরে থাকা ও ভবিষ্যতে অপরাধের সঙ্গে না জড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে রায়ে।
একই সময়ে আদালত আরেকটি রায়ে ২৫টি মামলায় ২৫ দম্পতির দুর্বিষহ জীবন-যাপনের অবসান ঘটান। যৌতুকের দাবিসহ নানাবিধ কারণে নির্যাতনের স্বীকার হয়ে সংসার থেকে বিতাড়িত ২৫ নারী স্বামীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে আদালতে মামলা করেছিলেন। বিচারক উভয়ের বক্তব্য শুনে তাদের সন্তানসহ নিজেদের মঙ্গলের জন্য স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সম্প্রীতর বন্ধন স্থাপন করে ২৫ যুগলের পারিবারিক মিলনের ব্যবস্থা করে দেন।
দুটি রায়ের বিষয় নিশ্চিত করে সুনামগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট নান্টু রায় ও অতিরিক্ত পিপি অ্যাডভোকেট হাসান মাহবুব সাদী সাংবাদিকদের বলেন, শিশুরা তাদের আপন ঠিকানা ফিরে পেল, মা-বাবার দুশ্চিন্তার অবসান হলো এবং সন্তানকে নিজের কাছে রেখে সংশোধনের সুযোগ পেলেন। স্বামী-স্ত্রী আলাদা থাকার যন্ত্রণা এবং তাদের সন্তানরা মা-বাবার বিচ্ছেদের অশান্তি থেকে মুক্তি পেলো। আদালতের এমন উদ্যোগে বিচারপ্রার্থীদের মামলা যেমন দ্রুত নিষ্পত্তি হয়েছে তেমনি দীর্ঘদিনের মামলা জটও কমে গেছে।
সুনামগঞ্জ জেলা জজ আদালতের পিপি ড. খায়রুল কবির রুমেন এডভোকেট বলেন, বর্তমান সরকারের সময়ে সুনামগঞ্জের বিচার বিভাগ পূর্ণ স্বাধীনতা ভোগ করছে। যেকারণে কোন ধরনের মানসিক চাপ ব্যতিরেকেই আমাদের বিচারকরা বিচারাধীন মামলা মোকদ্দমার বিষয়সমূহ ভালভাবে অনুধাবন করে যুগোপযোগী ও সময়ের প্রয়োজন মোতাবেক দৃষ্টান্তমূলক রায় প্রদান করে যাচ্ছেন। এতে সমাজে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় তারা নিরলস শ্রম সাধনার উদাহরন হয়ে আছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।