বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
বরিশাল-ফীরদপুরÑঢাকা মহাসড়ক সহ সারা দেশের সাথে পায়রা সমুদ্র বন্দরের সড়ক যোগাযোগ নির্বিঘœ করতে আন্ধারমানিক নদের ওপর ৪ লেন সেতু নির্মান প্রকল্পটি কাঙ্খিত লক্ষ্যে এগুচ্ছে না। সরকারী ৭৩৫ কোটি টাকার তহবিলে পায়রা বন্দর কতৃপক্ষের ডিপোজিট ওয়ার্ক হিসেবে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর ১ হাজার ১৮০ মিটার দীর্ঘ ৪ লেনের এ সেতুটি নির্মানের কথা। সেতুটি নির্মানে বিস্তারিত নকশা প্রনয়ন ও দরপত্র দলিল তৈরী সহ সব ধরনের দাপ্তরিক কাজ সম্পন্ন হলেও প্রাথমিক পর্যায়ে বিভিন্ন সংশোধনির কারণে দরপত্র আহবান কিছুটা পিছিয়ে পরে। এ লক্ষ্যে দু দফায় দরপত্র আহবানের পরেও গত দু বছরেও সেতুটি নির্মানের নির্মীঅন প্রতিষ্ঠান বাছাই করাই সম্ভব হয়নি। উপরন্তু ক্রয় সংক্রান্ত কমিটি সর্বনি¤œ দরপ্রস্তাবটি বাতিল করে দেয়ায় পুরো বিষয়টি নিয়ে যথেষ্ঠ অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে।
ইতোপূর্বে অঅহবান করা দরপ্রস্তাবে চীনÑবাংলাদেশের জয়েন্ট ভেঞ্চারের একটি কোম্পানীর প্রায় সাড়ে ১২% নি¤œ দর প্রস্তাবটি সড়ক অধিপ্তর এবং সড়ক ও সেতু মন্ত্রনালয়ের অনুমোদন সহ ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রী সভা কমিটিতে উপস্থাপনের পরে তা অনুমোদন লাভ করেনি। সড়ক অধিদপ্তরের তফসিলের চেয়ে অনেক কম দরপ্রস্তাব করায় ক্রয় কমিটি তা অনুমোদন করেনি বলে জানা গেছে। অথচ পায়রা বন্দরের জন্য আন্ধারমানিক নদের ওপর সেতুটি যথেষ্ঠ গুরুত্বপূর্ণ।
দেশের তৃতীয় সমুদ্র বন্দর হিসেবে ২০১৩ সালের ১৯ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পায়রা বন্দরের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। অপার সম্ভবনা ও দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের কথা বিবেচনায় নিয়েই সরকার পায়রা বন্দকে যথেষ্ঠ গুরুত্বের সাথে দেখছে বলে জানিয়েছেন নৌ পরিবহন মন্ত্রনালয় ও পরিকল্পনা কমিশনের একাধিক দায়িত্বশীল মহল। বন্দরটি চালুর প্রাথমিক পর্যায়ে ২০২০ সালে একই সাথে ৫টি উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। এরমধ্যে সাগর মোহনা থেকে প্রায় ৭৫ কিলোমিটার উজানে বন্দরের মূল চ্যানেল পর্যন্ত ক্যাপিটাল ড্রেজিং, বন্দরের টার্মিনাল ও জেটি নির্মান, ইয়ার্ড নির্মান, এবং বন্দর থেকে বরিশাল হয়ে রাজধানী ঢাকা সহ সারা দেশের সড়ক যোগাযোগে নির্বিঘœ করতে আন্ধারমানিক নদের ওপর একটি সেতু নিমান প্রকল্পগুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে গ্রহন করা হয়।
কিন্তু অন্যসব প্রকল্পগুলোর কাজ চলমান থাকলেও সেতু নির্মানের বাস্তব কাজ এখনো শুরুই হয়নি। এমনকি বাকি ৪টি প্রকল্পের কাজ আগামী বছরের মধ্যে শেষ করে বন্দরের মূল কার্যক্রম চালু করতে চাচ্ছে নৌ পরিবহন মন্ত্রনালয়। কিন্তু সেতু নির্মান কাজটি সময় পেরিয়ে যাবার পরে শুরু না হওয়ায় মন্ত্রনালয় সড়ক অধিদপ্তরকে বাদ দিয়ে পায়রা বন্দরের তত্বাবধানে সেতুটি নির্মান করতে চাচ্ছে বলে জানা গেছে। তবে এ জন্য পরিকল্পনা কমিশন থেকে শুরু করে পুরো বিষয়টি নিয়ে একনেক-এর চুড়ান্ত অনমোদন প্রয়োজন হবে। কারণ প্রকল্প প্রস্তাব-ডিপিপি অনুমোদনের সময় একনেক-এর সিদ্ধান্তেই সড়ক অধিদপ্তর ‘ডিপোজিট ওয়ার্ক’ হিসেবে সেতুটি নির্মানের কথা ছিল। এখন পুরো বিষয়টি অনেকটা অনিশ্চয়তার আবর্তে ঘুরপাক খাচ্ছে বলে মনে করছেন ওয়াকিবাহাল মহল।
তবে এব্যাপারে পায়রা বন্দর কতৃপক্ষে চেয়ারম্যান রিয়ার এ্যডমিরাল মোঃ সোহায়েল-এনইউপি, পিপিএম, পিএসসিÑবিএন’এর সাথে সেল ফোনে আলাপ করা হলে তিনি জানান, আন্ধারমানিক সেতু নির্মান নিয়ে খুব সমস্যা নেই। নকশা প্রনয়ন থেকে শুরু করে সব কিছুই চুড়ান্ত হয়েছে। সরকারী দিক নির্দেশনার আলোকে খুব দ্রুতই সমস্যা কেটে যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, সেতুটি নির্মানে বিলম্ব ঘটলেও বন্দরের পরিচালন কার্যক্রমে কোন বিঘœ ঘটবে না। বন্দর চালু করতে সব বিকল্প ব্যাবস্থা তৈরী করে রাখা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
এ ব্যাপারে সড়ক অধিদপ্তরের বরিশাল জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আজাদ রহমান বলেন, সড়ক ও সেতু মন্ত্রনালয় এবং নৌ পরিবহন মন্ত্রনালয় সব কিছু অবগত আছে। কিছু বিধিগত জটিলতা থাকলেও আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সমাধান সূত্র মিলবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে সরকারী সিদ্ধান্তের আলোকেই সেতুটি নির্মানের সব জটিলতার অবশান ঘটবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
তবে কবে নাগাদ সেতুটির নির্মান কাজ শুরু ও শেষ হবে, সে ব্যাপারে বন্দর কতৃপক্ষ বা সড়ক অধিদপ্তরের কেউ কিছু বলতে পারেনে নি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।