পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার অবৈধভাবে ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য ভিন্ন ধরনের নীল নকশা করেছে। আর এই নীল নকশা বাস্তবায়নের প্রধান ম্যানেজার হচ্ছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার।
তিনি বলেন, অবৈধভাবে টিকে থাকার জন্য ২০১৪ সালে প্রতিদ্বন্দ্বিহীনভাবে নির্বাচন করেছে আওয়ামী লীগ। ২০১৮ সালে মিড নাইট নির্বাচন করেছে। এইবার একটা অন্য ধরনের পরিকল্পনা তাদের আছে। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের প্রধান ম্যানেজার হচ্ছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার।
সোমবার (১৮ জুলাই) নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলন নামক একটি সংগঠনের উদ্দ্যোগে বিগত দিনে বিএনপির আন্দোলনে গুম, খুন হওয়া পরিবারগুলোর সাথে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, শেখ হাসিনা নিজেই একটি দুর্যোগ। দুর্যোগ হিসেবে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে তিনি আবির্ভূত হয়েছেন। দুর্যোগ বলেই তো গুন ঘুমের পরিবার এখানে উপস্থিত হয়েছেন। শেখ হাসিনা যতদিন ক্ষমতায় থাকবে ততদিন গুমরে সংখ্যা বাড়বে। ক্রসফায়ার সংখ্যা বাড়বে। বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটবে। কারণ এই ধরনের সরকার রাষ্ট্র ক্ষমতা দখলে রাখার জন্য এমন কোন হীন ও পাশ্ববিক কাজ নাই যা তারা করবে না। অবৈধ ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য তারা সকল অপকর্ম করবে।
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, সে (শেখ হাসিনা) যদি সত্যিকার অর্থেই গণতান্ত্রিক সরকার হতো, জনগণের ভোটে নির্বাচিত হতো তাহলে বিরোধী দলের অনেক নেতাকর্মী দুনিয়া থেকে চলে যাবে কেন? তাদেরকে খুঁজে পাওয়া যাবে না কেন? তারা নিরুদ্দেশ হবে কেন? তাদের পরিবার আজ হাহাকার করছে কেন? তাদের আত্মচিৎকার-বুক ফাটা কান্না আমাদের শুনতে হচ্ছে কেন? এজন্য সম্পূর্ণ দায়ী শেখ হাসিনা। দুঃশাসনের বিরুদ্ধে কেউ যেন টু-শব্দ করতে না পারে সে জন্য শেখ হাসিনা এক ভয়ংকর পরিবেশ তৈরি করেছে। বিরোধী মতাদর্শনের লোকজনদেরকে তিনি গুম করছেন। ক্রসফায়ার দিচ্ছেন। এসব করে অন্যদেরকেও ভয় দেখাতে চান তিনি। এটা তাদের এক ধরনের পলিসি, এক ধরনের নীতি। সেই নীতি অনুযায়ী তারা চলার চেষ্টা করছে।
নির্বাচনে কেউ তলোয়ার নিয়ে দাঁড়ালে আপনার রাইফেল নিয়ে দাঁড়াবেন- প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের এমন মন্তব্যের প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, এই নির্ববাচন কমিশনার শেখ হাসিনার একেবারে নিজস্ব ক্রীতদাস হিসেবে কাজ করছে। এটাই তিনি প্রমাণ দিচ্ছেন। দেশের সাংবিধানিক একটি প্রতিষ্ঠানের প্রধান এই কথাটি কী করে বলতে পারেন। যত অবৈধ রাইফেল, বন্দুক তলোয়ার সবত আওয়ামী লীগের হাতে। ভোটাররা তো তলোয়ার, রাইফেল নিয়ে যায় না। তারা তাদের অধিকারটা প্রতিষ্ঠা করতে চাই। সেই অধিকারটা হচ্ছে ভোট কেন্দ্রে শান্তিপূর্ণভাবে ভোট দেবে। এই নিশ্চয়তা চায় ভোটাররা।
সাবেক এই ছাত্র নেতা বলেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনারের বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে প্রমাণিত হচ্ছে একেবারে শেখ হাসিনার খাস মানসিক সন্তান। প্রধানমন্ত্রী যেভাবে গোটা দেশটাকে সন্ত্রাসের অভয়ারণ্য বানিয়েছেন। আওয়ামী লীগকে একটি সন্ত্রাসী দল বানিয়েছেন। রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে তাদেরকে বসিয়েছেন। তারা এখন তারই (হাসিনা) প্রতিনিধিত্ব করছেন।
তিনি আরও বলেন, তলোয়ার নিয়ে আসলে রাইফেল নিয়ে নামবেন এই কথাটা কেন আসবে? আপনিতো সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বে রয়েছেন। নির্বিঘ্নে নিশ্চিন্তে মানুষের ভোটার অধিকার প্রয়োগে পরিবেশ তৈরির দায়িত্ব তো নির্বাচন কমিশনের। যতটুক ক্ষমতা আছে তাতে এতটুক। আপনিতো এটা করবেন না। যেদিন আপনাকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে সেদিন থেকে সারা দেশের মানুষ জানে আপনি প্রধানমন্ত্রী নীল নকশা বাস্তবায়ন করবেন।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব বলেন, 'আজকে জ্বালানি কেনার টাকা নেই, যা দিয়ে বিদ্যুৎ তৈরীর উপকরণ কিনতে পারা যাবে। ব্যাংকে পর্যন্ত পরিমাণ টাকা নেই, যা আছে তার অধিকাংশই আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা ও তাদের আত্মীয় স্বজন উত্তোলন করে বিদেশে পাচার করেছে। এই পরিস্থিতিতে জনগণ বেঁচে থাকতে পারবে কিনা সেই শঙ্কায় পড়েছেন।'
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, 'সন্ত্রাসীদের মুক্তি দিয়ে দলীয় নেতা-কর্মীদের দ্বারা খুন হত্যা করে আপনি পাড় পেয়ে যাবেন, তা হবে না।'
রুহুল কবির রিজভী বলেন, 'আওয়ামী লীগ সরকারের সঙ্গে কোনো সমঝোতা নয়, এদের কে পদত্যাগ করতে হবে। শেখ হাসিনা প্রমাণ করেছে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য হবে না। তাই দলীয় সরকারের অধীনে বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনেও নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না। নির্বাচন তখন সুষ্ঠু হবে যখন নির্দলীয় সরকার গঠন করা হবে। বিএনপি সেই লক্ষ্য আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে।'
তিনি বলেন, 'রাজনীতি হচ্ছে ভালো মনের মানুষদের অথচ আওয়ামী লীগের টপ টু বটম সকলের কথা বার্তা সন্ত্রাসনির্ভর। তাদের রাজনৈতিক কর্মকান্ড রক্তাক্ত। অনির্বাচিত সরকার আওয়ামী লীগ অবৈধভাবে ক্ষমতায় টিকে থাকতে সারাদেশে ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। বিএনপিসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর নেতা-কর্মীদের দমনে গুম খুন হত্যা নির্যাতন কে টিকে থাকার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। দলীয় নেতা-কর্মীদের তিনি সেভাবে তৈরি করছেন তার (শেখ হাসিনা) নমরুদীয় শাসন প্রতিষ্ঠায়। আমরা শেখ হাসিনার অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে সমালোচনা করছি কিন্তু বাজে কথা ও সন্ত্রাসীর ভাষায় কথা বলি না।'
এসময় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নিয়ে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামীলীগের সভাপতি আবু আহমেদ মান্নাফীর ধৃষ্টতাপূর্ণ বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফৎ আলী সপু, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আব্দুস সাত্তার পাটোয়ারী প্রমুখ বক্তব্য দেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।