ইবি ভিসির অফিসে তালা, অডিও ক্লিপ বাজিয়ে আন্দোলন
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ভিসি প্রফেসর ড. শেখ আবদুস সালামের অডিও ফাঁসের ঘটনায় তৃতীয় দিনেও ভিসি
১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৫-তে রাশিয়ার মস্কোতে আসি। প্রতিদিন আমাদের সকাল ৮.৩০ থেকে ৫টা পর্যন্ত ক্লাস হয়। তাই দুপুরের খাবার ক্যান্টিনেই খেতে হয় বিকালে ক্লাস শেষে বাসায় এসে রাতের জন্য রান্না করতে হয়। ক্লাস আর পড়াশোনা শেষে যে সময়টুকু থাকে সে সময়ে মুভি, বন্ধুবান্ধব আর বাসায় বাবা-মায়ের সাথে কথা বলে কেটে যায়।
মস্কোতে অনেক দর্শনীয় স্থানে প্রতি শনি-রবিবার আমরা মস্কোর সেন্টার রেড স্কোয়ার, বেদেনখা পার্ক, পার্ক গোরকাভা, কলোমেন্সকায়া পার্ক ইত্যাদি জায়গায় একসাথে ঘুরতে যাই। আর মস্কো মেট্রোর প্রতিটি স্টেশনই যেন এক একটি ছোট ছোট স্বপ্নপুরী।
মস্কোতে বসবাসরত বাংলাদেশিরা রমজান মাসে একসাথে একটি রেস্টুরেন্টে বাংলা খাবার দিয়ে ইফাতার করে। এছাড়াও প্রতি বছর ১৬ ডিসেম্বর, ২৬ মার্চ পহেলা বৈশাখে কালচারাল প্রোগ্রাম করি। ঈদের দিনে একসাথে নামাজ পড়ার ব্যবস্থা করা হয় দূতাবাসে। প্রতি সামারে বাংলাদেশিরা একসাথে মস্কোর বাইরে পিকনিকে যাওয়া হয়। সেই রকম একটা আনন্দঘন পরিবেশ বিরাজ করে সবার মাঝে।
মস্কো স্টেট ইউনিভার্সিটি অফ সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং রাশিয়া এবং বিশ্বের অন্যতম সেরা ইউনিভার্সিটি সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং-এর জন্য। সারা বছরই জার্মানি, ফিনল্যান্ড, সাপিন ইত্যাদি দেশ থেকে গবেষক দল আসে এখানে।
রাশিয়াতে পড়তে আসা সকল আন্তর্জাতিক স্টুডেন্টদের জন্য হোস্টেলে থাকার ব্যবস্থা আছে। আমাদের হোস্টেলে ভিয়েতনাম, চীন, ওমান, মঙ্গোলিয়া, নেপাল, আফ্রিকা, লাতিন আমেরিকা ইত্যাদি দেশের স্টুডেন্টরা থাকে।
আমাদের ইউনিভার্সিটিতে এখন ৫ জন বাংলাদেশি পড়াশোনা করছে। এছাড়াও মস্কোর এবং রাশিয়ার বিভিন্ন ইউনিভার্সিটিতে প্রচুর বাংলাদেশি পড়াশোনা করছে। রাশিয়া সরকার প্রতি বছর বিভিন্ন বিষয়ে ব্যাচেলর ডিগ্রির জন্য ২০ থেকে ২৫টি, মাস্টার্সে ৫৬টি এবং পিএইচডিতে ২-৩টি স্কলারশিপ দিয়ে থাকে। সম্প্রতি বাংলাদেশের রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র’র জন্য ২০টি করে মাস্টার্সের স্কলারশিপ দিচ্ছে নিউক্লিয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং-এর উপরে। এখানে পড়ালেখা শেষে রুপপুরেই কাজ করতে হবে তাদের।
রাশিয়াতে স্কলারশিপের জন্য কোনো প্রকার আইএলটিএস, জিআরই, টোফেল লাগেনা। কারণ এখনে রাশিয়ান ভাষাতে পড়াশোনা করতে হয়। তাই বাংলাদেশে রাশিয়ান সেন্টার অব সাইন্স অ্যান্ড কালচার ইন বাংলাদেশ থেকে ৩ বা ৬ মাসের ভাষাকোর্স করে আসলে কিছুটা উপকার হয়। রাশিয়াতে স্কলারশিপে পড়তে আসা স্টুডেন্টদের জন্য পড়াশোনার খরচ নেই। শুধু হোস্টেল ফি এবং খাওয়ার খরচটি বহন করতে হয়। নিত্যপ্রেেয়াজনীয় জিনিস, খাবার খরচ এখানে ইউরোপের দেশগুলোর চেয়ে অনেক কম। রাশিয়া সরকার প্রতি মাসে স্কলারশিপপ্রাপ্ত স্টুডেন্টদের ২৫-৩০ ডলার দেয়। রাসিয়াতে পড়তে আসা স্টুডেন্টরা সবচেয়ে যে বেশি সমস্যা ফেস করে তা হলোÑ হলো রাশিয়ান ভাষা। এখানে কেউ ইংলিশ ভাষা জানে না। বিদেশি স্টুডেন্টদের রাশিয়ান ভাষাতে পড়াশোনা করেতে হয়। রাশিয়ান ভাষা শিক্ষার জন্য সকল ইউনিভার্সিটিতে এক বছরের একটি ভাষাকোর্স করেতে হয় সবাইকে।
প্রতি বছর ফেব্রুয়ারি-মার্চের দিকে স্কলারশিপে বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়। স্কলারশিপের জন্য আবেদন এবং সকল প্রকার প্রয়োজনীয় তথ্য জানার জন্য জঁংংরধহ ঈবহঃৎব ড়ভ ঝপরবহপব ্ ঈঁষঃঁৎব রহ ইধহমষধফবংয ২, ইযধংযধ ঝযড়রহরশ গ. অ. গধঃরহ জড়ধফ, উযধহসড়হফর, উযধশধ-১২০৫, ইধহমষধফবংয এই ঠিকানায় যোগাযোগ করতে হবে। স্কলারশিপে আবেদন থেকে শুরু করে ভিসা পাওয়া পর্যন্ত সবরকম হেল্প এখান থেকে পাওয়া যাবে।
আমার পরামর্শ রাশিয়ান ভাষায় পড়া খুবই কঠিন এবং চ্যালেঞ্জিং একটি বিষয়। যারা এই চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত তারাই স্কলারশিপে রাশিয়ায় আসার জন্য চেষ্টা করতে পারে। তবে চ্যালেঞ্জ-এ সফল হলে কিন্তু ভবিষ্যৎ সুপ্রসন্ন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।