বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
যশোরের অভয়নগরে স্ত্রী ও দুই মেয়েকে শ্বাসরোধে হত্যার পর পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে পাষণ্ড স্বামী জহিরুল ইসলাম বাবু। শুক্রবার দুপুরে উপজেলার চেঙ্গুটিয়া গ্রামের শালবাগান এলাকায় আব্দুস সবুরের বাড়ির পিছনে কলাবাগানে এই হত্যাকাÐের ঘটনা ঘটে। পাষণ্ড স্বামী জহিরুল ইসলাম বাবু সদর উপজেলার জগন্নাথপুর গ্রামের বিশ্বাসপাড়ার মশিউর রহমান বিশ্বাসের ছেলে। পুলিশ শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টার দিকে উপজেলার চাপাতলা নগরঘাটের একটি ঘাসবন থেকে লাশ তিনটি উদ্ধার করে।
নিহতরা হলেন, বাবুর স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন বিথি (২৮), মেয়ে সুমাইয়া খাতুন (৯) ও সাফিয়া খাতুন (২)।
আটক বাবু পুলিশকে জানিয়েছেন, শ্বশুর বাড়ির সাথে তার বেশ কিছুদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। বিষয়টি লোকজনও জানে। শুক্রবার দুপুর দেড়টার দিকে স্ত্রী ও দুই মেয়েকে নিয়ে শ্বশুর বাড়ি অভয়নগরের কলাতলা থেকে বাড়ির উদ্দেশ্যে আসছিলেন। চাপাতলা গ্রামে আব্দুস সবুরের বাড়ির পিছনে কলাবাগানের কাছে এসে প্রথমে স্ত্রী বিথিকে এবং পরে বড় মেয়ে সুমাইয়া খাতুন এবং সব শেষে ছোট মেয়ে সাফিয়া খাতুনকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। লাশ তিনটি সেখানে ফেলে বাড়িতে এসে সন্ধ্যায় পরিবারের লোকজনকে ঘটনা জানান বাবু। এসময় তার বড় ভাই মঞ্জুরুল ইসলাম বসুন্দিয়া পুলিশ ক্যাম্পে খবর দেন। খবর পেয়ে পুলিশ বাড়িতে গেলে বাবু পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেন।
নিহত সাবিনা ইয়াসমিন বিথির পিতা মুজিবর রহমান জানান, গত একমাস আগে আমার মেয়ে সাবিনা ইয়াসমিন বিথি ও তার দুই মেয়ে আমাদের বাড়িতে বেড়াতে আসে। শুক্রবার আমার জামাই জহিরুল ইসলাম বাবু আমার মেয়ে ও তার দুই কন্যাকে নিতে আসে। সকাল সাড়ে ১১ টার সময় আমাদের বাড়ি থেকে তারা রওনা দেয়। এরপর আমার বিয়াই (জামাই জহিরুলের পিতা) ফোন করে বলে আমার ছেলেকে আটক করে পুলিশে দিয়েছি আপনারা চলে আসেন। এরপর জানতে পারি আমার মেয়ে ও তার দুই কন্যাকে জামাই খুন করেছে। তিনি আরো জানান ১২/১৩ বছর আগে যশোর সদর উপজেলার বসুন্দিয়া ইউনিয়নের জগন্নাথপুর গ্রামের মুজিবর রহমানের ছেলে জহিরুল ইসলাম বাবুর সাথে আমার মেয়ের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে তাদের মধ্যে ঝসড়া বিবাদ লেতেই থাকতো। শুক্রবারও আমার বাড়িতে তাদের মধ্যে বাগবিতন্ডা হয়। এরপর তারা আমার বাড়ি থেকে রওনা দেয়।
বসুন্দিয়া পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই কামরুজ্জামান বলেছেন, বড় ভাই মঞ্জুরুল ইসলামের খবর পেয়ে বাড়ি থেকে শুক্রবার বিকেলে জহিরুল ইসলাম বাবুকে আটক করা হয়। আটক বাবু প্রাথমিকভাবে স্ত্রী ও দুই মেয়েকে শ্বাসরোধে হত্যার কথা স্বীকার করেছে। পরে এদিন সন্ধ্যায় অভয়নগর থানার এসআই মাসুদ রানা এসে বসুন্দিয়া ক্যাম্প থেকে বাবুকে নিয়ে যান। এরপর রাতে অভয়নগর থানা পুলিশ লাশ তিনটি উদ্ধার করেছে। অয়নগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এ কে এম শামীম হাসান বলেন, জহিরুল ইসলাম বাবু তার স্ত্রী ও দুই কন্যাকে হত্যা করেছে। নিহত তিন জনের লাশ উপজেলার চাপাতলা নগরঘাটের ঘাসবন থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। কেন বা কি কারনে এ হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে তা এ মুহুর্তে বলতে পারছিনা। এই ঘটনার পর ঘাতক নিজে পুলিশের কাছে আসে আতœসমর্পন করেছে। যশোর পুলিশের মুখপাত্র ডিবি ওসি রূপন কুমার সরকার জানান, প্রাথমিকভাবে জানা গেছে পারিবারিক কলহের জের ধরে এই হত্যাকাÐের ঘটনা ঘটেছে। আসামি বাবু শ্বশুরবাড়ি অভয়নগরের সিদ্দিপাশা হতে ফেরার পথে এই হত্যাকাÐ সংঘটিত করে। এরপর কোতোয়ালি মডেল থানার অধীনে বসুন্দিয়া পুলিশ ক্যাম্পে আত্মসমর্পণ করে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।